সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে সকাল থেকে ঢাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। একই কারণে দেশের বিভিন্ন জেলাতেও বৃষ্টি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া, ভারী বৃষ্টিতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে জলাবদ্ধতা এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড় ধস হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আজ নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (৩০ মে) দেশের ছয় বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পাশাপাশি বইছে দমকা বাতাস, যা রাজধানীর তাপমাত্রা কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। তবে এই বৃষ্টি স্বস্তির পাশাপাশি সৃষ্টি করেছে জনদুর্ভোগও। বিশেষ করে কর্মজীবীকে পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে।
এদিকে, উপকূলে ঝড়ের আশঙ্কায় সব সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সংকেত তোলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, “লঘুচাপটি বৃহস্পতিবার রাতে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বা বর্ষা এবং সম্ভাব্য মৌসুমি নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।”
ভারী বৃষ্টি, পাহাড় ধস ও জলাবদ্ধতার আভাস, বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল পৃথক সতর্কবার্তা জারি করেছে।
ভারী বর্ষণের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় থাকা সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মি.
অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, ভারী বর্ষণের কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।
ঢাকা/হাসান/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।