নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপে এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত নারীর নাম আমেনা বেগম (৫২)। গতকাল বুধবার রাত দুইটার দিকে স্থানীয় মানুষের তথ্যের ভিত্তিতে নিঝুম দ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা তাঁর লাশ উদ্ধার করেন।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শতফুল গ্রামের সাইক্লোন শেল্টার–সংলগ্ন মো.

এমরান উদ্দিনের বাড়ির পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে লাশটি হাতিয়া থানায় পাঠানো হয়।

নিহত নারীর স্বামী এমরান উদ্দিন দাবি করেন, বুধবার বিকেলে তিনি বন্দরটিলা বাজারে যান এবং সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে স্ত্রী আমেনা বেগমকে জায়নামাজে দেখতে পান। এরপর তিনি আবার বাজারে যান এবং রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে এসে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। ডাকাডাকি করেও স্ত্রীকে না পেয়ে ঘরে ঢুকে রক্ত দেখতে পান। পরে তিনি বাইরে গিয়ে স্ত্রীকে খুঁজতে থাকেন এবং আশপাশের লোকজনকে জানান। একপর্যায়ে বাড়ির পুকুরে স্ত্রীর লাশ ভেসে থাকতে দেখা যায়। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

এই দম্পতির ছয় সন্তান। চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, দুই ছেলে নোয়াখালী শহরে থাকেন। তিনি শুটকি মাছের ব্যবসায়ী। কে বা কারা তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করেছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না বলে দাবি করেন এমরান উদ্দিন।

স্থানীয় লোকজন বলেন, দিবাগত রাত দুইটার দিকে নিঝুম দ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক আবদুল মান্নান ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন। লাশের গলা কাটা ও হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।

স্থানীয় কয়েকজনের ভাষ্য, ঘটনার পর নিহত নারীর স্বামীর স্বাভাবিক আচরণ এবং সাবলীলভাবে ঘটনা বর্ণনা করায় অনেকেই তাঁকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মানুষের তথ্যের ভিত্তিতে নিঝুম দ্বীপের একটি বাড়ির পুকুর থেকে আমেনা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সময় ওই নারী একাই বাড়িতে ছিলেন বলে জানা গেছে। নিহত নারীর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন হত ন র র

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ