ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বেলা ১২টার দিকে সংগঠনের সভাপতি আরিফ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান প্রিন্সের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরেই নগর ভবনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নগর ভবনের অভ্যন্তরে উভয়পক্ষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

আরো পড়ুন:

তারুণ্যের সমাবেশ
নগরবাসীর দুর্ভোগের কারণে দুঃখ প্রকাশ বিএনপির তিন সংগঠনের

ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান

সংঘর্ষের মূল কেন্দ্র ছিল নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হল। সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। চেয়ার-টেবিল ছোড়াছুড়ি, লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পুরো ভবনজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন প্রিন্স গ্রুপের প্রধান আরিফুজ্জামান প্রিন্স নিজেও। সহকর্মীরা জানান, তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগায় সেলাই করতে হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দুপুর ২টা ২০ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তিনি উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা সবাই একটি বড় রাজনৈতিক লক্ষ্যের জন্য কাজ করছি।নিজেদের মধ্যে এই সংঘর্ষ আমাদের আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”

ঘটনার সময় নগর ভবনে স্বাভাবিক কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসসিসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, সহিংসতায় আতঙ্কিত হয়ে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ কক্ষে তালা দিয়ে রাখেন এবং কেউ কেউ ভবন ছেড়ে চলে যান।

শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আরিফ চৌধুরী বলেন, “আজকের ঘটনায় আমি নিজেও আহত হয়েছি। তবে এটি ছিল একটি ভুল বোঝাবুঝি, যা আমাদের নিজেদের মধ্যে হয়েছে।”

অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান প্রিন্সের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঢাকা/এএএম/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ নগর ভবন স গঠন র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ