ছুটির দিনে দাম্পত্য সম্পর্ক সুখী করতে পাঁচটি কাজ করতে পারেন
Published: 30th, May 2025 GMT
সম্পর্ক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও মার্কিন মনোবিজ্ঞানী মার্ক ট্রেভার্স তার গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, সুখী দম্পতিরা ছুটির দিনে পাঁচটি কাজকে প্রাধান্য দেন। এই পাঁচটি কাজ একজনের প্রতি আরেকজনের বিশ্বাস, ভালোবাসা এবং অনুরাগ বাড়িয়ে দেয়। আজ এই বৃষ্টিদিনে যেসব দম্পতি সাপ্তাহিক ছুটি একসঙ্গে কাটানোর সুযোগ পেযেছেন- তারা মার্ক ট্রেভার্স-এর মতামত অনুযায়ী পাঁচটি বিষয়কে প্রাধান্য দিতে পারেন।
ফোনকে ছুটিতে পাঠান: ছুটির দিনে ফোনকেও ছুটিতে রাখুন। একেবারে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ফোন হাতে নেবেন না। অথবা বিনোদনের জন্য ফোনের ওপর ডিপেন্ড করবেন না। বিশেষ করে গ্রুপ চ্যাটিংয়ের বার্তা, মেসেঞ্জারের হাই-হ্যালো, ই-মেইল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চেয়ে সঙ্গীকে প্রাধান্য দিতে পারেন।
‘মি টাইম’ নায় ‘আস টাইম’কে প্রাধান্য দিন: ছুটির দিনটিতে সঙ্গীকে পাশে রাখুন। একসঙ্গে কথা বলুন, গল্প করুন, কোথায় হাঁটতে বেড়িয়ে পড়তে পারেন। একসঙ্গে ত্বকের যত্নও নিতে পারেন। মানে এমন কাজ খুঁজে নিন যাতে একজন আরেকজনের পাশে থাকা যায়।
আরো পড়ুন:
মধুবালার প্রেমে পড়েছিলেন পাকিস্তানের যে প্রেসিডেন্ট
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ প্রেমিক হিসেবে কেমন?
একসঙ্গে ঘর গুছিয়ে ফেলুন: গবেষণা জানাচ্ছে, যেসব দম্পতি ছুটির দিনে নিয়মিত নিজেদের ঘর-বাড়ি, জামাকাপড় গুছিয়ে রাখেন, গাছের যত্ন নেন, ঘরের লুক চেঞ্জ করেন অন্দরের সাজে মনোযোগ দেন, একসঙ্গে রান্না করেন একটু পরিবেশনের সময় একটু ভিন্নতা যোগ করতে চান তাদের সম্পর্ক টিকে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। সুখী দম্পতি ছুটির দিনে এসব কাজই করেন।
শারীরিক সম্পর্ককে প্রাধান্য দিন: সুখী দম্পতি ছুটির দিনে নিজের ও সঙ্গীর শারীরিক চাহিদাকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দম্পতি শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে সন্তুষ্ট, তাদের সম্পর্কে সুখী হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।
একসঙ্গে হাসুন: সুখী হওয়ার জন্য ‘হাসি’ জরুরি। খেয়াল করেছেন কি, যেসব মানুষের সঙ্গে আপনি হাসেন, তারাই আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষ। একসঙ্গে হাসলে সম্পর্কের তৃপ্তি বাড়ে। সুখী দম্পতিরা ছুটির দিনে নিজেরা মজা করেন, পরিবেশটা আনন্দময় করে তুলতে চান।
সূত্র: সিএনবিসি অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। এতে একজন শিক্ষকসহ হোটেলের দুই কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম শিপন মিয়া (৩০)। তিনি বড়িকান্দি ইউনিয়নের নুরজাহানপুর গ্রামের মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেক মিয়ার ছেলে। নবীনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, ওই দুজনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে।
গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিরা হলেন বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এমরান হোসেন (৩৮) এবং হোটেলের দুই কর্মচারী—উপজেলার আলমনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন মিয়া (২০) ও চরলাপাং গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে নুর আলম (১৮)। এমরান উপজেলার শ্যামগ্রামের মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। তাঁর ভাই ঢাকায় কর্মরত পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিল্লাল হোসেন।
বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মনেক ডাকাত এলাকাটা শেষ করে ফেলেছেন। তাঁর কারণেই এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েছে। মনেক ডাকাতদের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে মনেক ডাকাতের ছেলে নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় মোন্নাফ মিয়া ও তাঁর ছেলে শিপনের দীর্ঘদিন ধরে একক প্রভাব ছিল। তাঁদের সঙ্গে একই এলাকার থোল্লাকান্দি গ্রামের মিস্টার মিয়ার ছেলে আরাফাত মিয়ার বিরোধ চলছিল। শনিবার রাত আনুমানিক নয়টার দিকে বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে শিপন মিয়া আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে আরাফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র একটি দল হোটেলে ঢুকে গুলি চালায়। এতে শিপনসহ হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াসিন ও নুর আলম গুলিবিদ্ধ হন। গুলির শব্দে বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলার পর আরাফাত ও তাঁর সহযোগীরা দ্রুত পালিয়ে যান।
শিপনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর নুরজাহানপুরে পৌঁছালে মোন্নাফ মিয়ার নেতৃত্বে একদল লোক গণি শাহ মাজারের অদূরে তালতলায় এমরান হোসেনের কার্যালয়ে হামলা চালান। সেখানে এমরান গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাঁরা থোল্লাকান্দি গ্রামে হামলা চালিয়ে একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রাতে ঘটনাস্থলে অভিযান চালালেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। কারণ, উভয় পক্ষের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গুলিবিদ্ধ কাউকেই শনিবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়নি। তাঁদের হয়তো অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শিপনের ওপর হামলাকারী আরাফাত থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান হোসেনের আত্মীয়। এ কারণেই এমরানের কার্যালয়ে গিয়ে হামলা এবং তাঁকে গুলি করা হয়েছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত শিপন ডাকাত দলের সদস্য ছিলেন। শিপন ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে। ওই ঘটনায় একজন শিক্ষকসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে সবাই পলাতক। তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।