বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, গরুর মাংস স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এই মাংস খেলে নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলছেন অন্য কথা।
পুষ্টিবিদদের মতে, ‘‘গরুর মাংসের ক্ষতিকর দিক যেমন আছে, আবার এই মাংস নানা রকম উপকারিতাও আছে। এবং গরুর মাংসে যতো পুষ্টিগুণ আছে সেগুলো অন্য কোনো খাবার থেকে পাওয়া কঠিন।’’
পুষ্টিবিদরা আরও বলছেন, ‘‘ গরুর মাংস এই মাংস আপনার জন্য ক্ষতিকর হবে না উপকারী, সেটা নির্ভর করবে আপনি সেটা কতোটা নিয়ম মেনে, কি পরিমাণে খাচ্ছেন তার ওপর।’’
আরো পড়ুন:
মাসিকে কম রক্তপাত হওয়া কি খারাপ
চোখ উঠলে কী করবেন, কী করবেন না
গরুর মাংসের পুষ্টিগুণ
গরুর মাংসে রয়েছে একাধিক পুষ্টি উপাদান। যেমন—প্রোটিন, ভিটামিনস, মিনারেলস বা খনিজ উপাদান। এতে পাওয়া যায় জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, আয়রন। আবার ভিটামিনের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি২ বি৩, বি৬, এবং বি১২।
গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা
১.
২. ত্বক, চুল ও নখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
৩. শরীরের বৃদ্ধি ও বুদ্ধি বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
৪. ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।
৫.দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
৬. ক্লান্তি বা শরীরের অসাড়তা দূর করে কর্মোদ্যম রাখে।
৭. ডায়রিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৮. রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে।
৯. খাবার থেকে দেহে শক্তি যোগান দেয়।
১০. স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
১১. অবসাদ, মানসিক বিভ্রান্তি ও হতাশা দূর করে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি হেলথ জার্নালের তথ্য, গরুর মাংস রান্না করার আগে চর্বি কেটে ছাড়িয়ে নিয়ে গরম পানিতে সেদ্ধ করতে হবে। তারপর পানি ফেলে ওই মাংস ধুয়ে রান্না করে খেতে হবে। যদিও এতে মাংসে থাকা চর্বির পাশাপাশি ভিটামিনস ও মিনারেলসও বেরিয়ে যায়। তারপরেও এই মাংস স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
গরুর মাংস রান্নায় ঘি, মাখন, ডালডা না দেয়াই ভালো।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস