জাতীয় ইদগাহে ঈদ জামাতের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন: ডিএসসিসি প্রশাসক
Published: 5th, June 2025 GMT
পবিত্র ইদুল আজহা উপলক্ষে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সংস্থাটির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া ।
তিনি বলেন, “সকাল সাড়ে ৭টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জামাত আয়োজন অনুপযুক্ত হলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৮টায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।”
আরো পড়ুন:
ঈদযাত্রা: কমলাপুরে ঘরমুখো মানুষের ঢল
১৯৮তম ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া, নিরাপত্তায় জোর
মো.
তিনি আরো বলেন, “নগরবাসীর কোরবানির পশু কেনাবেচার সুবিধার্থে ৮টি জায়গায় অস্থায়ী হাট স্থাপন করা হয়েছে। এসব হাটে পরিচ্ছন্নতা কর্মী, পুলিশ ও এটিএম বুথ, পশু স্বাস্থ্য সেবার জন্য চিকিৎসক ও মেডিকেল টিম থাকবে। হাট শেষ হওয়ার পরপরই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পন্ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।”
শাহজাহান মিয়া বলেন, “কোরবানির পশুর বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের লক্ষ্যে ডিএসসিসির প্রায় ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মী, ২০৭টি ডাম ট্রাক, ২০০টি মিনি ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ও যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমরা এবার ৩০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণের প্রস্তুতি রেখেছি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে ১ লাখ ৪০ হাজার বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ, ৪০ টন ব্লিচিং পাউডার ও ২২২ গ্যালন স্যাভলন বিতরণ করা হয়েছে। ঈদের জামাত, কোরবানি হাট ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা- কর্মচারীদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। কোরবানির হাট ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নগর ভবনের জরুরি পরিচালন কেন্দ্রে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।”
“নগরবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, নির্ধারিত স্থানে কোরবানি দিতে এবং বর্জ্য যত্রতত্র না ফেলে সহযোগিতা করত”, যোগ করেন তিনি।
নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, “আপনারা সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঈদের জামাতে অংশ নিন, আমরা সর্বোচ্চ নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করব, ইনশাআল্লাহ।”
সংবাদ সম্মেলনে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমানসহ সব বিভাগীয় প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ প রস ত ত ড এসস স ব যবস থ বর জ য র জন য ক রব ন
এছাড়াও পড়ুন:
মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে
চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।
সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।
মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।