সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বজ্রমেঘ তৈরি হচ্ছে এবং বায়ুচাপের তারতম্যের অধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে পটুয়াখালীতে গত তিনদিন ধরে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। 

তবে মঙ্গলবার (১৭ জুন) সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টিপাত। এদিন সকাল নয়টা থেকে বুধবার (১৮ জুন) সকাল নয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলার কলাপাড়ায় চলতি বছরের সর্বোচ্চ ১২১.

২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। 

টানা বৃষ্টিতে সব কিছুতে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিভিন্ন স্থানে নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আর খেটে খাওয়া মানুষজন। 

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপকূলীয় এলাকায় অতিভারী বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। তাই পটুয়াখালীর পায়রাসহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সকল মাছধরা ট্রলার সমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। 

এদিকে পটুয়াখালীসহ দেশের ১৭ নদী বন্দর সমূহের উপর দিয়ে ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকায় এসব নদী বন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

কলাপাড়া পৌর শহরের লঞ্চঘাট এলাকার মৌসুমী কাঁঠাল বিক্রেতা কালাম হোসেন বলেন, “৩ থেকে ৪ দিন ধরেই আমাদের এদিকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। এতো বৃষ্টি এ বছর আর আমরা দেখিনি। বৃষ্টির কারণে বাজারে মানুষজন খুবই কম। ক্রেতা না থাকায় উত্তর অঞ্চল থেকে আনা কাঁঠাল নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছি। সময় মতো বিক্রি করতে না পারলে বড় লোকশানে পড়তে হবে।” 

একই এলাকার রিকশা চালক সলিমুদ্দিন বলেন, “টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে মানুষের সংখ্যা খুবই কম। যার কারণে আমাদের আয় কমে গেছে। এছাড়া এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে আমাদের ভোগান্তির কোন শেষ থাকবে না।”

পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, “বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে অতিভারী বৃষ্টি এবং বজ্রবৃষ্টি সহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।”

ঢাকা/ইমরান/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ পূর্তি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক

পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের ‘কবর’ কবিতা বাংলা সাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় সৃষ্টি। ১৯২৫ সালে লেখা অমর এ কবিতার শতবর্ষ এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ‘কবর’ কবিতা তৎকালীন সময়ের সমাজের চিত্রকে তুলে ধরেছে।

‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে এ কথা বলেন বক্তারা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন মফিজ ইমাম মিলন। ৪৮ জন লেখকের লেখা নিয়ে প্রকাশিত এই গ্রন্থ প্রকাশ করেছে নয়নজুলি প্রকাশনাী।

অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে উঠে আসে জসীমউদ্‌দীনের অবিস্মরণীয় সৃষ্টি ‘কবর’ কবিতার নানান প্রসঙ্গ। কবিতাটি ১৯২৫ সালে ‘গ্রাম্য কবিতা’ পরিচয়ে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল কল্লোল পত্রিকার তৃতীয় বর্ষ তৃতীয় সংখ্যায়।

আলোচকেরা বলেন, ‘কবর’ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। কবিতাটি দীনেশচন্দ্র সেন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। এমনকি ‘কবর’ পড়ে দীনেশচন্দ্র সেন ‘অ্যান ইয়াং মোহামেডান পোয়েট’ শিরোনামে একটি আলোচনাও লিখেছিলেন ফরওয়ার্ড পত্রিকায়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল (সি আর) আববার বলেন, ‘কবর’ কবিতার শত বছর পূর্তির ঘটনা একটা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কবিতাটির শতবর্ষ নিয়ে বই প্রকাশ ব্যতিক্রমী প্রয়াস।

এ সময় শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি শহরে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের মতো সংগঠন থাকা উচিত। একটা বৃহত্তর পরিবারের মতো কাজ করে তারা। তিনি বলেন, এ ধরনের নাগরিক সমাজ রাষ্ট্রের বাইরে থেকে দেশ ও সমাজ সম্পর্কে ভাবে। এটা বিশাল শক্তি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জালাল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী, পক্ষিবিশারদ ইনাম আল হক, কথাসাহিত্যিক ফারুক মঈন উদ্দীন। গবেষক, সাংবাদিক ও ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন নয়নজুলি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী খান, অধ্যাপক এম এ সামাদ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায়, ডেইলি স্টারের সাহিত্য সম্পাদক ইমরান মাহফুজ প্রমুখ।

‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘কবর’ কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে। স্বাগত বক্তব্য দেন ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফ হোসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ