প্রবাসীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শ্বশুরবাড়ি পুড়িয়ে দিল গ্রামবাসী
Published: 25th, June 2025 GMT
মাদারীপুরের রাজৈরে ইতালি প্রবাসী হালিম খানকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে তার শ্বশুরবাড়িতে আগুন দিয়েছেন স্বজন ও গ্রামবাসী।
বুধবার (২৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের দারাদিয়া গ্রামের সোমেদ চৌকিদারের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়।
আগুনে ওই বাড়ির রান্নাঘর, গোলাঘর ও চার কক্ষবিশিষ্ট ভবনের ভিতরে থাকা সব জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আরো পড়ুন:
মাঠে পড়ে ছিল স্ত্রীর মরদেহ, গাছে ঝুলছিল স্বামীর লাশ
কোরবানির মাংস কাটা নিয়ে দ্বন্দ্ব, বড় ভাইয়ের মুখে বিষ দিলো ছোট ভাই
রাজৈর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ খান গণমাধ্যমকে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সোমবার (২৩ জুন) রাতে সোমেদ চৌকিদারের বাড়িতে তার মেয়ে রেশমা বেগমের স্বামী হালিম খানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে চিকিৎসার কথা বলে হালিমের মরদেহ রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানেই মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যান রেশমা ও তার পরিবারের লোকজন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসী। বুধবার সকালে হালিমের স্বজন ও গ্রামবাসী মিলে সোমেদ চৌকিদারের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণসহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন সোমেদ চৌকিদার ও তার পরিবারের সব সদস্য।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান জানিয়েছেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ওই হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আর যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয়, সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর আছে।
ঢাকা/বেলাল/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আগ ন গ র মব স
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হলগুলোতে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কোনো ধরনের রাজনীতি করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘোষণায় ছাত্রনেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ইতিমধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষার্থীদের নানা পর্যায়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি থাকা না–থাকা নিয়ে আলোচনা চলছে।
গত শুক্রবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হলে রাজনীতি বন্ধের ওই ঘোষণা দেয়। তবে গতকাল শনিবার দিনভর এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। এ বিষয়ে করণীয় ও রূপরেখা ঠিক করতে গতকাল দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হল প্রভোস্টসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠক করেছে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে আজ রোববার বিকেলে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন তাঁরা।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের জন্য সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এরপর ওই দিন মধ্যরাতে হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ ছাত্র–ছাত্রী বাইরে বেরিয়ে আসেন। রাত একটার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। শুক্রবার রাত দুইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা হয়। তখন উপাচার্য বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’ উপাচার্যের এ বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা ‘না, না’ বলে আপত্তি জানান এবং হলগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন। পরে রাত তিনটার দিকে বিক্ষোভের মুখে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ হলগুলোতে ‘প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের আশ্বাসে উল্লাস প্রকাশ করে হলে ফিরে যান। প্রক্টরের ওই ঘোষণার আধঘণ্টা পর স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অফিস থেকে এক প্রজ্ঞাপন আসে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের কমিটিভুক্তরা পদত্যাগ ও মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে হলে অবস্থান করতে পারবেন। অন্যথায় তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ছাত্রলীগ। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিন পর ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে বিতাড়িত হয় ছাত্রলীগ। সে সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিটি হলের হল প্রাধ্যক্ষদের কাছ থেকে আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে—এমন বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর নেয়। মূলত সেই বিজ্ঞপ্তির আলোকে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করায় ক্ষোভ জানায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতে রোকেয়া হলের ছাত্রীরা হলের তালা ভেঙে বেরিয়ে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন