উন্নয়ন প্রকল্প যেন অপচয়ের প্রতীক না হয়
Published: 3rd, July 2025 GMT
উন্নয়ন প্রকল্পের লক্ষ্য হওয়া উচিত জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা। কিন্তু এ লক্ষ্য ছাপিয়ে কেবল দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণেই যখন প্রকল্প সীমাবদ্ধ থাকে, তখন তা উন্নয়ন নয়—একটি রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা ও সম্পদের অপচয়ের নিদর্শনে পরিণত হয়। জামালপুর, রংপুর ও গোপালগঞ্জে প্রায় ৬১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিনটি পল্লী উন্নয়ন একাডেমির বর্তমান অবস্থা দেখে সেটিই স্পষ্ট হচ্ছে।
জামালপুরের মেলান্দহে ৫০ একর জমিতে নির্মিত ১৮টি ভবনের একটিও এখনো ব্যবহারে আসেনি। ভবনগুলোয় বাসা বেঁধেছে মাকড়সা, চত্বরজুড়ে ঝোপঝাড়, যন্ত্রপাতিতে জমেছে ধুলাবালু। রংপুরের তারাগঞ্জে নির্মিত ১০ তলা প্রশাসনিক ভবন, গেস্টহাউস, মেডিকেল সেন্টার, লাইব্রেরি, কোয়ার্টার, হোস্টেলসহ সব ভবনই পড়ে আছে জনবল ও কার্যক্রমহীন। এসব ভবনে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বসানো যন্ত্রপাতি ও আসবাব অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে। গোপালগঞ্জে সীমিত পরিসরে কিছু প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চললেও প্রকল্প শুরুর আগে প্রয়োজনীয় সমীক্ষা পর্যন্ত করা হয়নি।
সরকারি নীতিনির্ধারকেরা স্বীকার করেছেন, জনবল নিয়োগ না হওয়ায় কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। এই প্রশাসনিক দৈন্য কেবল একটি বা দুটি প্রতিষ্ঠান নয়; পুরো ব্যবস্থাপনাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। এ পরিস্থিতি শুধু অর্থনৈতিক অপচয় নয়; এটি পরিকল্পনাবিদ, নীতিনির্ধারক ও বাস্তবায়নকারীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার নিদর্শনও বটে।
এ প্রকল্পগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল বৃহত্তর ময়মনসিংহ, রংপুর ও দক্ষিণাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জনশক্তিতে রূপান্তর করা। কিন্তু যেখানে জনবল নিয়োগই হয়নি, সেখানে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম কীভাবে চলবে? জামালপুরে অনুমোদিত ১১০টি পদের একটিতেও নিয়োগ নেই মহাপরিচালকের (ডিজি) পদ ছাড়া। রংপুরে ডিজি ও উপপরিচালক ছাড়া কারও নিয়োগ হয়নি। গোপালগঞ্জেও জনবলসংকট প্রকট।
এখানে প্রশ্ন ওঠে—এই প্রকল্পগুলো পরিকল্পনা ও অনুমোদনের সময় কী পরিমাণ ভাবনাচিন্তা করা হয়েছিল? একটি প্রকল্প শুরু করার আগে এলাকাভিত্তিক চাহিদা, সুবিধাভোগী জনগোষ্ঠী ও বাস্তবায়নযোগ্যতা যাচাই না করে শুধু নির্মাণকাজ শুরু করা হয় কেন—এ প্রশ্নের জবাব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অবশ্যই দিতে হবে। স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন পর্যন্ত বলছে, এত একাডেমির প্রয়োজনই নেই। বরং খালি পড়ে থাকা ভবনগুলোকে দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্য, কারিগরি শিক্ষা বা দক্ষতা প্রশিক্ষণ খাতে ব্যবহারের জন্য ইজারা দেওয়া যেতে পারে।
আমাদের দাবি, অবিলম্বে এসব প্রকল্প নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করা হোক। যাঁরা এসব প্রকল্প গ্রহণ, অনুমোদন ও বাস্তবায়নে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা হোক। ভবন নির্মাণের পেছনে কেবল রাজনৈতিক স্বার্থ বা এলাকার নামে বরাদ্দ নেওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। উন্নয়ন মানে শুধু দালান নয়, মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন—এই বোধ না ফিরলে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কেবল অপচয়ের প্রতীক হয়েই থেকে যাবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ৪১ পদের চাকরি, করুন আবেদন
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে জনবল নিয়োগে আবেদন চলছে। এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মোট ৪১টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকেরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন এসব পদের জন্য।
পদের নাম ও সংখ্যা—
১. পদের নাম: সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ৫
গ্রেড: ১৩
বেতন স্কেল: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: (ক). স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি; (খ) কম্পিউটার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত; (গ) সাঁটলিপিতে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ৭০ শব্দ এবং বাংলায় ৪৫ শব্দ; (ঘ) কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ৩০ ও বাংলায় ২৫ শব্দ।
(ঙ) কম্পিউটারে word processingসহ ই-মেইল ও ফ্যাক্স পরিচালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. পদের নাম: কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ২
গ্রেড: ১৩
বেতন স্কেল: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: (ক) কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি; এবং (খ) কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে বাংলায় ২৫ শব্দ এবং ইংরেজিতে ৩০ শব্দের গতিসহ সংশ্লিষ্ট Standard Aptitude Test উত্তীর্ণ হতে হবে।
৩. পদের নাম: অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক
পদসংখ্যা: ১২
গ্রেড: ১৬
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; (খ) কম্পিউটার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত; (গ) কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ২০ ও বাংলায় ২০ শব্দ; (ঘ) কম্পিউটারে word processingসহ ই-মেইল ও ফ্যাক্স পরিচালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৪. পদের নাম: অফিস সহায়ক
পদসংখ্যা: ২২
গ্রেড: ২০
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
বয়সসংক্রান্ত তথ্য
প্রার্থীদের বয়স ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ১৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের জন্য বিভাগীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৪০ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য। বয়স প্রমাণের ক্ষেত্রে কোনো এফিডেভিট গ্রহণযোগ্য হবে না।
আবেদনের প্রক্রিয়া
আগ্রহী প্রার্থীদের টেলিটকের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অন্য কোনো মাধ্যমে প্রেরিত আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না।
আবেদনের গুরুত্বপূর্ণ তারিখ
অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ ও আবেদন ফি জমা দেওয়া শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টা থেকে। আবেদন শেষ হবে আগামী ১৪ অক্টোবর ২০২৫, বিকেল ৫টায়। আবেদনপত্র সাবমিট করার পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষার ফি জমা দিতে হবে।
আবেদন ফি
ক্রমিক নম্বর ১-৩ পদের জন্য ১১২/- টাকা (সার্ভিস চার্জসহ) এবং ক্রমিক নম্বর ৪ পদের জন্য ৫৬/- টাকা (সার্ভিস চার্জসহ)। অনগ্রসর প্রার্থীদের জন্য সব পদের আবেদন ফি ৫৬/- টাকা (সার্ভিস চার্জসহ)।
পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান পরবর্তী সময় যোগ্য প্রার্থীদের মুঠোফোনে এসএমএসের মাধ্যমে এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ওয়েবসাইটে জানানো হবে। প্রবেশপত্র ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে। আবেদনপত্রে উল্লিখিত মুঠোফোন নম্বরটি সর্বদা সক্রিয় রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে প্রার্থীদের।
আরও পড়ুনঅ্যামাজনে ছয় ক্যাটাগরিতে ইন্টার্নশিপ, প্রোগ্রাম শেষে দীর্ঘমেয়াদি ক্যারিয়ারের সুযোগ২ ঘণ্টা আগে