‘ইমাম হোসাইনের আদর্শ ধারণ করে মানবতার রাষ্ট্র কায়েম করতে হব
Published: 6th, July 2025 GMT
ইমাম হোসাইনের শাহাদাতে কারবালার চেতনা ধারণ করে ইনসানিয়াত বিপ্লবের মাধ্যমে মানবতার সমাজ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন ওয়ার্ল্ড সুন্নী মুভমেন্ট ও ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটি রেভুলুশনের চেয়ারম্যান আল্লামা ইমাম হায়াত।
তিনি বলেন, “কথিত ইসলামের নামে এজিদের জঙ্গিবাদ ও অত্যাচারী ইসলাম বিরোধীশাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যয়ের ইসলাম প্রতিষ্ঠাই পরিবারসহ ইমাম হোসাইন শাহাদাতের সুরা পান করেছিলেন। সেই শাহাদাতের পথ ধরে মানব মতবাদের অনাচার বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। ইনসানিয়াত বিপ্লবের মাধ্যমে মানবতার রাজনীতি গড়ে তুলতে হবে। মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র কায়েম করতে হবে।”
মুসলিম মিল্লাতের মহান শহীদ দিবস শাহাদাতে কারবালা দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ওয়ার্ল্ড সুন্নী মুভমেন্ট ও ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটি রেভুলুশন, বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর শাখা আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইমাম হায়াত এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
আশুরা উপলেক্ষে শেকৃবিতে শিবিরের গণসেহরি
আশুরায় উজ্জীবিত হয়ে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে এগিয়ে যেতে হবে
দশ-ই মহররম শাহাদাতে কারবালা দিবসকে ঈমানী অস্তিত্বের স্মারক ও মুসলিম মিল্লাতের মহান ঈমানী জাতীয় শহীদ দিবস এবং মানবতার মুক্তির মহা শাহাদাত উল্লেখ করে ইমাম হায়াত বলেন, “প্রাণপ্রিয় ইমামে আকবর ইমাম হুসাইন রাদিআল্লাহু আনহু অতুলনীয় মহান শাহাদাতের মধ্যেই নিহিত সত্য ও জীবনের মর্মধারা তথা দুনিয়ার পূর্বাপর সমস্ত জিহাদ ও শাহাদাতের সম্মিলিত পূর্ণ মর্ম।”
তিনি বলেন, “প্রাণপ্রিয় আহলে রাসুল ঈমান দ্বীনের প্রাণ ও হকের মানদণ্ড, তাদের ভালোবাসা ও সম্পর্ক ই আল্লাহতাআলা ও তার হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের ভালোবাসা ও সম্পর্ক এবং তাদের শত্রুতা ও বিচ্ছিন্নতাই আল্লাহতাআলা ও তার হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের শত্রুতা ও বিচ্ছিন্নতা।”
“এ শাহাদাতের দিশা হারিয়ে ফেলা ঈমান-দ্বীন-স্বাধীনতা-অধিকার হারিয়ে ফেলা এবং এ শাহাদাতের লক্ষ্য বাস্তবায়নেই দ্বীন-মিল্লাত-মানবতার অস্তিত্ব ও মুক্তি এবং বিজয় নিহিত। বাতিল মত-পথ-মুলুকিয়তের সহযোগী হয়ে এবং লক্ষ্যহীন নিছক আনুষ্ঠানিকতায় এ শাহাদাত দিবস পালনের স্বার্থকতা নেই।”
ইমাম হায়াত বলেন, “কাফের এজিদের কারবালায় ইমাম হুসাইন রাদিআল্লাহু আনহ ও পবিত্র আহলে রাসুলের এ শাহাদাত-ঈমান ও জীবনের বিপরীত বস্তুবাদি গোত্রবাদি কুফরি চেতনার গ্রাস থেকে সত্যের কলেমার তাওহীদ রেসালাত ভিত্তিক ঈমানী সত্তা-চেতনা-জাতীয়তা ও বস্তুবাদের ঊর্ধ্বে মানবসত্তা ও মানবাধিকার রক্ষার শাহাদাত।”
“কারাবালার শাহাদাত ইসলামের নীতি আদর্শ উৎখাতকারী মহান মকবুল সাহাবায়ে কেরামের সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত ইসলাম ও মানবতার বিশাল সাম্রাজ্য জবরদখলকারী এজিদ মোনাফেকি চক্রের বিণাসি গ্রাস থেকে ইসলামের মূলধারা রক্ষার মহান শাহাদাত।”
ইমাম হায়াত বলেন, “এ শাহাদাত এজিদ চক্রের উমাইয়া গোত্রবাদি স্বৈরদস্যুতন্ত্র মুলুকিয়তের ধ্বংসাত্মক গ্রাস থেকে সব মানুষের নিরাপত্তা-অধিকার-স্বাধীনতাভিত্তিক সর্বজনীন মানবতার রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও মানবিক সাম্যের ভিত্তিতে মুক্ত জীবনের মুক্ত দুনিয়া খেলাফতে ইনসানিয়াত রক্ষার মহান শাহাদাত।”
ইসলামের অস্তিত্বের এ ঈমানী শাহাদাত নিয়ে বাতিল শিয়াবাদের বিকৃতি ও এজিদপন্থী বাতিল খারেজিদের বিকৃতি ও প্রতারণা সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির মহাসচিব আল্লামা শেখ রায়হান রাহবার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা আবু আবরার চিশতী ও সুফি আহমদ শাহ মোর্শেদ, কেন্দ্রীয় নেতা আল্লামা জাকের আহসান প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে দেশ জাতি ও মুসলিম মিল্লাতের সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। নেতাকর্মীরা র্যালি বের করেন। র্যালিটি গুরত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম নবত র আল ল হ আল ল ম ক রব ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প কীভাবে ‘ম্যাডম্যান তত্ত্ব’ ব্যবহার করে বিশ্ব বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গত মাসে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইরানে হামলায় তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন কি না। জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটা করতে পারি। আবার আমি না-ও করতে পারি। আমি কী করতে যাচ্ছি, তা কেউই জানে না।’
ট্রাম্প বিশ্বকে এমনটা বিশ্বাস করতে দিয়েছিলেন যে ইরানকে আলোচনা শুরুর সুযোগ দিতে দুই সপ্তাহ হামলা স্থগিত রাখার বিষয়ে তিনি সম্মত হয়েছেন। কিন্তু পরে এ সময়ের মধ্যেই তিনি হামলা চালিয়ে বসেন।
এ ঘটনায় একটি প্রবণতা সামনে এসেছে, ট্রাম্পের সম্পর্কে সবচেয়ে অনুমেয় বিষয়টি হলো তাঁর অননুমেয় আচরণ। তিনি তাঁর চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেন। তিনি স্ববিরোধী কাজ করেন। তাঁর কথা আর কাজে মিল নেই।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোউইৎজ বলেন, ‘(ট্রাম্প) একটি অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়া তৈরি করেছেন, অন্তত পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে। সম্ভবত (প্রেসিডেন্ট) রিচার্ড নিক্সনের পর থেকে এটিই সবচেয়ে কেন্দ্রীভূত।’ তিনি বলেন, ‘এটি নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলোকে ট্রাম্পের আচরণ, তাঁর পছন্দ ও মেজাজ-মর্জির ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল করে তুলেছে।’
ট্রাম্প তাঁর এই বৈশিষ্ট্যকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। তিনি তাঁর নিজের অননুমেয় আচরণকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও রাজনৈতিক সম্পদে পরিণত করেছেন। তিনি এই অননুমেয় আচরণকে একটি মতবাদ বা নীতির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আর এখন যে ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য তিনি হোয়াইট হাউসে নিয়ে এসেছেন, সেটিই পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি বিশ্বব্যবস্থার বিদ্যমান কাঠামো পাল্টে দিচ্ছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এটিকে ‘ম্যাডম্যান থিওরি’ বা ‘খ্যাপাটে তত্ত্ব’ বলে থাকেন। এই তত্ত্বে একজন বিশ্বনেতা তাঁর প্রতিপক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তিনি নিজের মেজাজ-মর্জিমতো যেকোনো কিছু করতে সক্ষম, যাতে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করা যায়। সফলভাবে ব্যবহার করা হলে এটি একধরনের জবরদস্তি বা চাপ প্রয়োগের কৌশল হতে পারে। ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, এটি সুফল দিচ্ছে এবং এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের তাঁর পছন্দমতো অবস্থানে নিয়ে আসতে পারছেন।
কিন্তু এটি কি এমন পদ্ধতি, যা শত্রুদের বিরুদ্ধেও কাজে দেবে? আর এর ত্রুটি কি এমনটি হতে পারে যে এটি প্রতিপক্ষকে বোকা বানানোর জন্য তৈরি করা একটি কৌশল না হয়ে বরং সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুস্পষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে গঠিত, যার ফলে তাঁর আচরণ আরও সহজে অনুমানযোগ্য হয়ে ওঠে?
কথার আক্রমণ, অপমান ও কাছে টানা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কাছে টেনে আর আমেরিকার মিত্রদের কথার আক্রমণের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করেন। তিনি কানাডাকে অপমান করে বলেছিলেন, দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়া উচিত।
ট্রাম্প বলেছিলেন, গ্রিনল্যান্ডকে (আমেরিকার মিত্র ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগের কথা বিবেচনা করতে তিনি প্রস্তুত। তিনি আরও বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত পুনরায় পানামা খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
সামরিক জোট ন্যাটো সনদের ৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রতিটি সদস্যদেশ অন্য দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের এ অঙ্গীকারকে সংশয়ের মধ্যে ফেলে দেন। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, ‘আমি মনে করি, (ন্যাটো সনদের) ৫ অনুচ্ছেদ লাইফ সাপোর্টে আছে।’
ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (প্রথম সারিতে বাঁ থেকে চতুর্থ) ও বিশ্বনেতারা