রেকর্ডের মালা সাজিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেস অলরাউন্ডার ওয়ান মুলডার। হাশিম আমলার (৩১১*) পর  দ্বিতীয় প্রোটিয়া ব্যাটার হিসেবে টেস্টে ট্রেপল সেঞ্চুরি করেছেন। দ্রুততম ট্রিপল সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন। অ্যাওয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ ৩৬৭ রানের ইনিংস খেলে ভেঙেছেন। 

তার চেয়ে বড় কথা ওয়ান মুলডার কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার ৪০০ রানের রেকর্ড ভাঙার পথে ছিলেন। বিশ্বের প্রথম ব্যাটার হিসেবে লারা ২০০৪ সালে ছুঁয়েছিলেন কোয়াড্রপল সেঞ্চুরির কীর্তি। ওই রেকর্ড ঝুঁকির মুখে ফেলে লারার প্রতি সম্মান জানালেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক মুলডার।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়ে টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ৬২৬ রান তুলে ঘোষণা করে দিলেন প্রোটিয়া এই ব্যাটার ও অধিনায়ক। প্রোটিয়ারা দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চে গিয়েছিল ওই রান নিয়ে। দ্বিতীয় সেশনে মুলডারের যখন বিশ্বরেকর্ডের পথে ছোঁটার কথা, তখনই ড্রেসিংরুম থেকে ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্ত জানান তিনি।

অবাক করে ইনিংস ঘোষণার বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে মুলডার জানান, ট্রিপল সেঞ্চুরি করা, লারার রেকর্ড ভাঙা এসব তো দূরের কথা, তিনি কখনো স্বপ্নও দেখেননি যে ডাবল সেঞ্চুরি করবেন। লারার ৪০০ রানকে খুবই স্পেশাল অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি জানান, এই রেডর্ক লারার মতো কিংবদন্তিরই থাকা উচিত। 

মুলডার বলেন, ‘সত্যি বলতে,  আমি কখনো স্বপ্নও দেখিনি যে, ডাবল সেঞ্চুরি করবো, ট্রিপল সেঞ্চুরির কথা দূরের কথা। গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমার এই ইনিংস দলকে জয় এনে দেওয়ার জন্য ভালো অবস্থানে নিয়েছে। 

ব্রায়ান লারা একজন কিংবদন্তি। তিনি ৪০০ বা ৪০১ রানের মতো (৪০০ রানে অপরাজিত) করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তার মতো একজনের দখলে এই বিশেষ রেকর্ড থাকা উচিত। আমি (লাঞ্চ বিরতিতে এসে) বিষয়টি নিয়ে কোচ শুর্কি কনরাডের সঙ্গে কথা বলি, এবং জানায়- এই রেকর্ড কিংবদন্তির নামেই থাকতে দিন। লারার রেকর্ড তেমনই আছে, যেভাবে থাকা উচিত।’  

ওয়ান মুলডার এখন টেস্টের পঞ্চম সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসে মালিক। টেস্টে তার চেয়ে বড় ইনিংস আছে যথাক্রমে মাহেলা জয়বর্ধানে (৩৭৪), ব্রায়ান লারা (৩৭৫), ম্যাথু হেইডেন (৩৮০) ও ব্রায়ান লারার (৪০০*)।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট র পল স ঞ চ র ট র পল স ঞ চ র র র কর ড বদন ত ৪০০ র

এছাড়াও পড়ুন:

দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’

তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’

ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।

ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’

পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।

গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।

তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।

দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
  • নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ৩১ বিভাগকে প্রস্তুতির নির্দেশ ইসির