জলাশয় বাঁচানোর টেকসই পরিকল্পনা কোথায়
Published: 8th, July 2025 GMT
রাজধানীর খালগুলো পুনরুদ্ধার নিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি, উদ্যোগ, প্রচেষ্টা, কর্মসূচি, প্রকল্পের শেষ নেই। যে সরকারই থাকুক, মেয়র কিংবা প্রশাসক সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে থাকুক—গতানুগতিক পথে হাঁটা, কার্যকর কৌশল অবলম্বন না করা বা বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে ঘুরেফিরে খালগুলোর অবস্থা সংকটাপন্নই থেকে যাচ্ছে। ফলে রাজধানীর খালগুলো নিয়ে আমাদের শঙ্কা কোনোভাবেই দূর হয় না।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ঢাকা শহরের খালগুলো এখন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার ১৩টি খালের সরেজমিন চিত্র আমাদের সেই হতাশাজনক বাস্তবতাকেই তুলে ধরেছে। যেখানে থাকার কথা পানির প্রবাহ, সেখানে এখন জমাটবাঁধা বর্জ্য, পলিথিন আর আগাছায় পরিপূর্ণ। চট করে দেখলে খাল বলে মনে হয় না, মনে হয় যেন এক বিশাল আবর্জনার স্তূপ।
ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ দাবি করছে যে তারা ১০০ কিলোমিটারের বেশি খাল দখলমুক্ত করে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে এনেছে। কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্য বলছে, ২৯টি খালের মোট দৈর্ঘ্যই যেখানে ৯৮ কিলোমিটার, সেখানে কীভাবে ১০০ কিলোমিটারের বেশি পরিষ্কার করা সম্ভব? এই তথ্যের গরমিল স্বচ্ছতার অভাবকে প্রকট করে তোলে এবং এ দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে। দুই সিটি করপোরেশন মিলিয়ে ১০৮ কিলোমিটার বা ১১২ কিলোমিটার খাল নেটওয়ার্কের কাজ শেষ করার দাবিও স্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি রাখে।
যদিও কিছু খাল, যেমন বাউনিয়া খাল, সাংবাদিক কলোনি খাল এবং কল্যাণপুর-খ ও কল্যাণপুর-ঘ খালগুলো তুলনামূলকভাবে পরিষ্কার দেখা গেছে, যা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক দিক। বিশেষ করে বাউনিয়া খালের পরিষ্কার ও খননকাজ প্রমাণ করে যে যদি সদিচ্ছা ও সঠিক উদ্যোগ থাকে, তবে খালগুলোকে বাঁচানো সম্ভব। তবে এই বিচ্ছিন্ন সাফল্যগুলো অধিকাংশ খালের করুণ অবস্থার কাছে ম্লান হয়ে যায়। আরামবাগ খাল, রূপনগর খাল, বাইশটেকি খাল এবং রামচন্দ্রপুর খালের অংশবিশেষের যে চিত্র আমরা দেখেছি, তা সত্যিই উদ্বেগজনক।
ডিএনসিসি প্রশাসক নিজেই স্বীকার করেছেন যে খাল পরিষ্কারের এক সপ্তাহের মধ্যেই মানুষ আবার ময়লা ফেলে ভরে ফেলেন। জনসচেতনতার ঘাটতির বিষয়টি প্রকট থাকলেও সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা এবং কার্যকারিতা নিয়েও কি প্রশ্ন উঠে না? প্রতিবছর বরাদ্দের শতকোটি টাকার সঠিক ব্যবহার হচ্ছে কি?
শুধু কিছু খাল নয়, সব খালকে বর্জ্যমুক্ত করার জন্য একটি সমন্বিত ও ধারাবাহিক অভিযান শুরু করা প্রয়োজন। একবার পরিষ্কার করেই দায়িত্ব শেষ করলে হবে না, নিয়মিত তদারক ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কীভাবে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা যায়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। খাল পরিষ্কার ও খনন প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থ এবং কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করার একটা সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি। সব ধরনের জলাশয় রক্ষার জন্য চাই টেকসই পরিকল্পনা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ষ ক র
এছাড়াও পড়ুন:
চাকসু জাতীয় নির্বাচনের জন্য রিহার্সেল: চবি উপাচার্য
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটা অনুকূল পরিবেশ তৈরির এবং রিহার্সেল হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করছেন চবি উপাচার্য মোহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি ভবনের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করেন।
আরো পড়ুন:
চাকসু নির্বাচনে উৎসবের আমেজ
চাকসু নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছে ১২০০ পুলিশ
চবি উপাচার্য বলেন, “চাকসু নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের জন্য রিহার্সাল হিসেবে বিবেচিত হবে। চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের নির্বাচন, শিক্ষার্থীরাই সুন্দরভাবে সম্পন্ন করবে।”
এই নির্বাচনের প্রচারণায় কোনো ধরনের বাধা বা হামলার ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা আচার আচরণ ও নিয়ম-কানুন মেনে প্রচার প্রচারণা চালিয়েছে।”
উপাচার্য বলেন, “শিক্ষার্থীরাই নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করেছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমাদের সম্মান যেমন বাড়বে, তেমনি শিক্ষার্থীদেরও সম্মান বাড়বে।”
এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে চবি উপ-উপাচার্য কামাল উদ্দিন বলেন, “স্বচ্ছভাবে ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষণার জন্য ‘যৌক্তিক’ সময় নেওয়া হবে। আমরা ত্রুটিযুক্ত কাজ করতে চাই না। আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে নিখুঁতভাবে কাজ শেষ করতে যতটুকু সময় প্রয়োজন ততটুকু দিতে হবে।”
ঢাকা/ইভা