যুদ্ধবিরতির মধ্যে চীনের কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের চালান পেল ইরান
Published: 8th, July 2025 GMT
চীনের কাছ থেকে ভূমি-থেকে-আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র–ব্যবস্থা হাতে পেয়েছে ইরান। ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাতের পর নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পুনরায় শক্তিশালী করতে তেহরান নিজেদের অস্ত্রভান্ডার সমৃদ্ধ করার দিকে মনোযোগ দিয়েছে।
একজন আরব গোয়েন্দা কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে বলেন, গত ২৪ জুন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর চীনের তৈরি ওই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা তেহরানে পাঠানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক আরব কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরব মিত্ররা জানত যে তেহরান তার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার ও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। হোয়াইট হাউসকেও ইরানের অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
ইরান যুদ্ধবিরতির পর চীনের কাছ থেকে কতগুলো ভূমি-থেকে-আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র বা এসএএম পেয়েছে সে বিষয়ে ওই কর্মকর্তা কিছু বলেননি। তবে একজন আরব কর্মকর্তা বলেন, ইরান তেলের বিনিময়ে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কিনেছে।
ইরান যুদ্ধবিরতির পর চীনের কাছ থেকে কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র বা এসএএম পেয়েছে, সে বিষয়ে ওই কর্মকর্তা কিছু বলেননি। তবে একজন আরব কর্মকর্তা বলেছেন, ইরান তেলের বিনিময়ে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কিনেছে।ইরানের তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। মার্কিন জ্বালানি তথ্য সংস্থার (ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) মে মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের প্রায় ৯০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল ও কনডেনসেট চীনে রপ্তানি হয়। কনডেনসেট হলো প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের সময় সংগৃহীত হালকা তরল জ্বালানি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত কয়েক বছর ধরে চীন ইরানের কাছ থেকে রেকর্ড পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করে আসছে। আমদানি করা তেলের উৎস গোপন রাখতে চীন মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোকে ট্রানশিপমেন্ট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করেছে।
দ্বিতীয় আরব কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে বলেন, (নিষেধাজ্ঞা এড়াতে) নানা সৃষ্টিশীল উপায়ে ইরান বাণিজ্য করে থাকে।
এই চালানগুলো বেইজিং ও তেহরানের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতার ইঙ্গিত দেয়। ইরানে এমন এক সময় ক্ষেপণাস্ত্রের ওই চালান এসেছে যখন পশ্চিমাদের ধারণা, ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলার সময় চীন ও রাশিয়া ইরান থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেছে।
১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধকালীন ইরান চীন থেকে উত্তর কোরিয়ার মাধ্যমে এইচওয়াই-২ সিল্কওয়ার্ম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছিল।১২ দিনের ওই সংঘাতে ইসরায়েল ইরানের আকাশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল। ইসরায়েল সুপরিকল্পিত হামলা চালিয়ে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ স্থাপনাগুলো নিশানা করতে এবং কয়েকজন শীর্ষ ইরানি জেনারেল ও পরমাণুবিজ্ঞানীকে হত্যা করতে সক্ষম হয়।
ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের তেল আবিব ও হাইফা শহরের বেশ কিছু সংবেদনশীল স্থাপনা ধ্বংস করতে সক্ষম হয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে বিবদমান দুদেশ একটি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। গত ২৪ জুন থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। যদিও যুদ্ধবিরতির আগে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধকালীন ইরান চীন থেকে উত্তর কোরিয়ার মাধ্যমে এইচওয়াই-২ সিল্কওয়ার্ম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছিল। এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইরান কুয়েতের ওপর হামলা করে এবং তথাকথিত ‘ট্যাংকার যুদ্ধের’ সময় একটি মার্কিন পতাকাবাহী তেল ট্যাংকার লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
২০১০ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইরান চীনের কাছ থেকে এইচকিউ৯ বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছে।
আরও পড়ুনজবাবদিহি না করলে ইসরায়েলকে ভুগতে হবে: হুঁশিয়ারি ইরানের০৭ জুলাই ২০২৫ধারণা করা হয়, ইরান বর্তমানে রাশিয়ার তৈরি এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করে, যা ধেয়ে আসা বিমান ও ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্ষম। একই সঙ্গে ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সক্ষমতাও কিছুটা আছে এটির।
পাশাপাশি ইরান চীনের তৈরি পুরোনো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও নিজেদের তৈরি খোরদাদ সিরিজ এবং বাভার-৩৭৩–এর মতো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করে।
তবে এ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোর যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি স্টেলথ যুদ্ধবিমান এফ-৩৫ ভূপাতিত করার সক্ষমতা সীমিত বলে মনে করা হয়। সম্প্রতি ইরানে বিমান হামলা চালাতে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ইসরায়েল।
জানা গেছে, চীন ইতিমধ্যে পাকিস্তানের কাছে তাদের এইচকিউ-৯ ও এইচকিউ-১৬ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিক্রি করেছে। মিসরও চীনের এইচকিউ-৯ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করছে বলে ধারণা করা হয়।
আরও পড়ুনইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের পরিণতি কী১৬ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ব যবহ র কর ইসর য় ল ত র পর
এছাড়াও পড়ুন:
‘৯৫ শতাংশ পুরুষ দ্বিতীয় বিয়ে করতে চান’
পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাইমা কুরেশি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য টিভি নাটক ও চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন। কয়েক দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে বিয়ে ও সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। তার দাবি—“৯৫ শতাংশ পুরুষ দ্বিতীয় বিয়ে করতে চান।”
কয়েক দিন আগে একটি পডকাস্টে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন সাইমা কুরেশি। এ আলাপচারিতায়, নারীদের আয়, পুরুষদের বৈবাহিক দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করেন এই অভিনেত্রী।
আরো পড়ুন:
মেঘা থেকে অপু বিশ্বাস
‘ডিরেক্টর কোনদিন আর্টিস্ট পয়দা করতে পারে না’
সাইমা কুরেশি বলেন, “যেসব পুরুষ পরকীয়ায় আগ্রহী, তাদের উচিত দায়িত্বশীলভাবে বৈধভাবে বিয়ে করা। কারণ তাদের বেপরোয়া আচরণের কারণে পরিবার ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতির হতে পারে।”
কারো অনূভূতি নিয়ে খেলতে বারণ করে সাইমা কুরেশি বলেন, “কারো অনুভূতি নিয়ে খেলার চেয়ে, একজন পুরুষের বৈধভাবে বিয়ে করা অনেক ভালো।”
গোপন সম্পর্কের চেয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করাই ভালো বলে মত সাইমা কুরেশির। তার ভাষ্য—“একজন পুরুষ দ্বিতীয়বার বিয়ে করলে, সেটা কেন পরকীয়ার চেয়ে খারাপ হিসেবে বিবেচিত হয়?”
দ্বিতীয় বিয়েতে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি প্রসঙ্গে সাইমা কুরেশি বলেন, “যদি কোনো পুরুষের প্রথম স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়েতে সম্মতি না দেন, তাহলেও ধর্মীয় দিক থেকে পুরুষকে স্ত্রীর অনুমতি নিতে বাধ্য করা হয়নি। কারণ ইসলাম এ বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা দেয়নি।”
পুরুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাইমা কুরেশি জানান, ‘পরিষ্কার ও দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত’ নেন এবং অবৈধ সম্পর্ক থেকে বিরত থাকেন। সাইমা কুরেশি বলেন, “ব্যক্তিগত চাহিদা ধর্মীয় নীতিমালার ভিত্তিতে পূরণ করা উচিত, সমাজের চাপে নয়।”
৫১ বছর বয়েসি সাইমা কুরেশির এসব মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ারর পর ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই তার বক্তব্যের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় দিক নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করছেন।
বলে রাখা ভালো, সাইমা কুরেশি পাকিস্তানি অভিনেত্রী রোজিনার কন্যা। ২০০৫ সালে সৈয়দ নূরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সাইমা কুরেশি। ২০১৮ সালে এ দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এ সংসারে তাদের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। মায়ের পথ অনুসরণ করে অভিনয়ে পা রেখেছেন পুত্র দানিয়াল খান।
ঢাকা/শান্ত