ভারী বৃষ্টিপাত, পায়রা বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
Published: 10th, July 2025 GMT
সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পটুয়াখালীতে গত এক সপ্তাহ ধরে টানা ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। তবে বিগত দিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।
বুধবার সকাল ছয়টা বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮.৩ মিলমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলা আবহাওয়া অফিস।
টানা বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন নিচু স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের বাসা বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। বড় লোকসানে পড়েছেন মৎস্য চাষিরা। পানির নিচে তলিয়ে আছে বীজতলা। ক্ষতির শংকায় রয়েছে বর্ষাকালীন সবজি চাষিরা। এছাড়া পানিতে তলিয়ে আছে পৌর শহরসহ অনেক এলাকার সড়ক। চরম দুর্ভোগে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে লঘুচাপের প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। তবে বাতাসের চাপ ও নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়নি।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমলেও উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই পটুয়াখালীর পায়রাসহ দেশের সকল সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাছধরা ট্রলার সমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
পটুয়াখালী পৌর শহরের নতুন বাজার এলাকার রিকশা চালক হোসেন মিয়া বলেন, “কয়েকদিন ধরে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে। তিনদিন ধরে শহরের অনেক সড়ক পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে আজ থেকে পানির পরিমাণ কিছুটা কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টিতে রিকশা চালানো অনেক কষ্টকর।”
কলাপাড়ার চাকামাইয়া ইউনিয়নের কৃষক রফিক হোসেন বলেন, “প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে মাঠ ঘাট সব তলিয়ে গেছে। আমার ঘরেও পানি প্রবেশ করেছে। বীজতলা পানিতে তলিয়ে আছে। অনেকে পুকুর ও ঘের তলিয়ে সব মাছ ভেসে গেছে। এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে আমাদের ভোগান্তির কোন শেষ থাকবে না।”
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, “আজ থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে। তবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস