ফেনীতে পাওনা টাকা চাওয়ায় দোকানিকে ‘বহিষ্কৃত’ যুবদল নেতার মারধর
Published: 13th, July 2025 GMT
ফেনীর পরশুরামে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে এক দোকানিকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদলের বহিষ্কৃত এক নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তবে ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার রাতে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মো. সায়েম। তিনি পরশুরাম পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। মারধরের ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর দলের স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে গত মাসেই সায়েমকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মারধরের শিকার দোকানির নাম মো.
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ৫ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, দোকানে ঢুকে মো. সুমনকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন মো. সায়েম, তাঁর ভাতিজা মো. ফয়সালসহ কয়েকজন। একপর্যায়ে ওই দোকানির পরনের টি-শার্টও টেনে খুলে ফেলেন তাঁরা। দোকানিকে এ সময় কিল–ঘুষি ও চড় দিতেও দেখা যায় তাঁদের।
জানতে চাইলে দোকানি মো. সুমন জানান, গত বছর বন্যার সময় তাঁর দোকান থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা মূল্যের ত্রিপল নিয়ে যান মো. সায়েম। ১০ হাজার টাকা পরে পরিশোধ করলেও দীর্ঘদিনেও বাকি ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেননি তিনি। পাওনা টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে বিষয়টি তিনি সায়েমের স্বজন ও যুবদলের কয়েকজন নেতাকে অবহিত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে সায়েম মারধর করেছেন। মারধরের শিকার হয়ে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
সুমনের ভাই মো. ইব্রাহিম বলেন, গত বুধবারের হামলার ঘটনার পর থানায় যেন কোনো অভিযোগ না করা হয় সায়েম বাড়িতে গিয়ে সেই হুমকিও দিয়েছেন। বর্তমানে তাঁর ভাই সুমন ভয়ে দোকানে বসছেন না। হামলার ঘটনার বিষয়টি স্থানীয় বিএনপির নেতাদের জানানো হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি সালিসের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মো. সায়েমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। জানতে চাইলে পরশুরাম পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মোস্তফা খোকন বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে গত ২৫ জুন ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক পদে থাকা মোহাম্মদ সায়েমকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাঁর অপকর্মের দায় দল নেবে না।
যুবদলের স্থানীয় একাধিক নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৫ জুন সায়েমকে বহিষ্কারের বিষয়টি তাঁরা জানতেন না। দোকানিকে মারধরের ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় একাধিক গণমাধ্যমকর্মীও জানিয়েছেন, সায়েমকে বহিষ্কারের কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি তাঁরা পাননি।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল হাকিম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে ওই দোকানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বকেয়া টাকা বাজার কমিটির উদ্যোগে এরই মধ্যে আদায় হয়েছে। তাই ওই দোকানি থানায় কোনো অভিযোগ দিচ্ছেন না। এরপরও ওই দোকানিকে যেহেতু হুমকি দেওয়া হয়েছে, সে কারণে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করে রাখা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওই দ ক ন ম রধর র পরশ র ম র ঘটন র য বদল র
এছাড়াও পড়ুন:
তেলবাহী ট্যাংকারের সঙ্গে ঝুলছিল যুবকের মরদেহ
ফেনীর দাগনভূঞায় তেলবাহী ট্যাংকার লরির সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থান এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বসুরহাট রোডের নতুন পোলের পাশে ভূঁইয়া এলপিজি ফিলিং স্টেশন থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত যুবকের নাম সুজন চন্দ্র ভৌমিক (৪০)। তিনি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর ফকিরা ইউনিয়নের চরখালী গ্রামের প্রফুল্ল কুমার ভৌমিকের ছেলে। সুজন ভূঁইয়া এলপিজি ফিলিং স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী, ফিলিং স্টেশন ও পুলিশ সূত্র জানায়, সুজন রাতে কাজ শেষে দিনে একটি দোকান পরিচালনা করতেন। আজ সকালে স্থানীয় লোকজন পাম্প ভবনের উত্তর পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা তেলের গাড়ির রেলিংয়ের সঙ্গে সুজনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।
ফিলিং স্টেশনের মালিক আবুল হোসেন ভূঁইয়া জানান, ‘সুজনের কাছে আমি প্রায় তিন লাখ টাকার বেশি টাকা পেতাম। তিনি টাকা না দেওয়ায় ফিলিং স্টেশনের কাজে আসতে নিষেধ করেছিলাম। এরপরের বিষয়গুলো আমার জানা নেই।’
নিহত সুজনের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁর বাবা সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং মা ভারতে থাকেন। সুজন নোয়াখালীর বাড়িতে একাই থাকতেন।
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহিদ পারভেজ জানান, ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে—এটি হত্যা না আত্মহত্যা। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা চলমান।