তুরস্কে দাবানলে অন্তত ১০ অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকর্মীর মৃত্যু
Published: 24th, July 2025 GMT
তুরস্কে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এসকিসেহির প্রদেশে ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে অন্তত ১০ অগ্নিনির্বাপণকর্মী ও উদ্ধারকর্মী নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশটির মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলীয় কয়েকটি এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে।
গতকাল বুধবার তুরস্কের কৃষি ও বনমন্ত্রী ইব্রাহিম ইউমাকলি জানান, আগুন নেভাতে গিয়ে ২৪ জন কর্মী দাবানলের ফাঁদে পড়েন। তাঁদের মধ্যে ৫ বনকর্মী ও ৫ উদ্ধারকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
ইব্রাহিম ইউমাকলি জানান, দমকা হাওয়ায় আগুনের গতি হঠাৎই দিক পরিবর্তন করে। এতে আগুনের ফাঁদে পড়ে যান অগ্নিনির্বাপণকর্মী ও উদ্ধারকর্মীরা। দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হলেও ১০ জনকে বাঁচানো যায়নি। বাকি ১৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ৫ বনকর্মী ও ৫ উদ্ধারকর্মীকে হারিয়েছি।’
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম বিরগুন জানিয়েছে, ওই কর্মীরা আগুনের মধ্য আটকে পড়ে ‘জীবন্ত দগ্ধ’ হন।
তুর্কি পার্লামেন্টের সদস্য নেবি হাতিপওগলু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘আমাদের শোক প্রকাশের ভাষা নেই।’
গত রোববার থেকে তুরস্কে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও দমকা হাওয়া চলছে। ফলে ইস্তাম্বুল ও রাজধানী আঙ্কারার মধ্যবর্তী এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা।
ইউমাকলি বলেন, বৃহস্পতিবারও (আজ) প্রচণ্ড তাপমাত্রা ও হঠাৎ দিক পাল্টানো ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা অস্বাভাবিক তাপমাত্রা ও প্রচণ্ড বাতাসের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। আমি আবারও নাগরিকদের সতর্ক থাকার ও বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ইতিমধ্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, ‘জীবনের বিনিময়ে যাঁরা আমাদের বন রক্ষায় লড়েছেন, আমি তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁদের পরিবার ও জাতির প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
দমকা হাওয়ায় আগুনের গতি হঠাৎই দিক পরিবর্তন করে। এতে আগুনের ফাঁদে পড়ে যান অগ্নিনির্বাপণকর্মী ও উদ্ধারকর্মীরা। দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হলেও ১০ জনকে বাঁচানো যায়নি।ইব্রাহিম ইউমাকলি, তুরস্কের কৃষি ও বনমন্ত্রীওই ঘটনা তদন্তে দুজন প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুর্কি বিচারমন্ত্রী।
এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে ইজমির প্রদেশের ওদেমিশ শহরের কাছে আরেকটি দাবানলে এক বৃদ্ধ ও দুই বনকর্মী প্রাণ হারান।
তুরস্কে এ বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দাবানলে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩।
আরও পড়ুনইউরোপজুড়ে আগাম তাপপ্রবাহ, তুরস্ক–ফ্রান্সে দাবানল৩০ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত রস ক র কর ম র আগ ন র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
ইরান থেকে তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনার অভিযোগে ৬টি ভারতীয় কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিশ্বজুড়ে মোট ২০টি প্রতিষ্ঠানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে ভারতের ৬টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা এসব প্রতিষ্ঠান ইরানের পেট্রোলিয়াম পণ্য কেনাবেচা ও বিপণনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেনদেনে ইচ্ছাকৃতভাবে অংশ নিয়েছে। এতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিষয়ক নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, যেসব ভারতীয় কোম্পানির ওপর মার্কিন সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেগুলো হচ্ছে, অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস, গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস, জুপিটার ডাই কেম, রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি, পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম ও কাঞ্চন পলিমার্স।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের
ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
নিষেধাজ্ঞার ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে এবং মার্কিন নাগরিক ও কোম্পানিগুলো তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না। এদের অধীন যেসব সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি মালিকানা রয়েছে, তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।
ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য ইরানের ‘ছায়া নৌবহর’ ও বিশ্বব্যাপী মধ্যস্বত্বভোগীদের দমন করা, যারা ইরানি তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য পরিবহনে সহায়তা করে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান থেকে এই ধরনের পণ্য কেনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো তেহরানকে অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহের সুযোগ করে দিচ্ছে। আর এই অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে হিজবুল্লাহ, হুথি বিদ্রোহী, হামাসসহ অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সহায়তায় এবং যুদ্ধপরিস্থিতি উসকে দিতে। মার্কিন সরকারের মতে, ইরান সরকারের এই নীতিমালার কারণে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়ছে এবং এতে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় কোম্পানি ছাড়াও তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ