চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন এক তরুণী (২৩)। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন চট্টগ্রাম নয়, ভুলে দিনাজপুরগামী ট্রেনে উঠেছেন। তাই টাঙ্গাইল স্টেশনে নেমে পড়েন। সেখানে তিন বখাটের খপ্পরে পড়ে যান তিনি। ঢাকাগামী বাসে তুলে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন।

গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী তরুণীর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায়। তিনি চট্টগ্রামে একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ব্রাহ্মণকুশিয়া গ্রামের দুলাল চন্দ্র দাস (২৮), সজীব খান (১৯) ও রুপু মিয়া (২৭)। গ্রেপ্তারের পর ভুক্তভোগী তরুণী তাঁদের শনাক্ত করেছেন।

বিকেল পাঁচটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল। ওই তরুণী নিজেই বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহম্মদ। তিনি বলেন, ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তিনজনই দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিতে পারেন।

ওসি তানবীর আহম্মদ জানান, চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে ওই তরুণী ট্রেনে ওঠেন। তারপর ট্রেনে ঘুমিয়ে পড়েন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর জেগে এক যাত্রীর কাছে কোন জায়গা পর্যন্ত এসেছেন, জানতে চান। তখন তিনি জানান, টাঙ্গাইলের কাছাকাছি এসেছেন। পরে তরুণী বুঝতে পারেন তিনি ভুলে দিনাজপুরগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠেছেন। রাত ১২টার পর ট্রেনটি টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছালে তিনি নেমে পড়েন। গভীর রাতে সেখানে প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করার সময় গ্রেপ্তার তিনজন স্টেশনে আসেন। তাঁরা তরুণীকে ঢাকাগামী বাসে উঠিয়ে দেওয়ার কথা বলে পাশের একটি নির্জন বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে ছেড়ে দিলে তরুণী স্টেশনে চলে আসেন। ভোরে রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে ঘটনা জানান। সদর থানা-পুলিশ ও রেলওয়ে পুলিশ সকালে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।

৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগে

তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী