জুলাই শহীদদের জন্য ৮০৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প একনেকে উঠছে কাল
Published: 26th, July 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে বিনা মূল্যে ফ্ল্যাট দিতে প্রকল্প নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-২৪-এ শহীদ পরিবারের স্থায়ী বাসস্থান দেওয়ার জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমিতে ‘৩৬ জুলাই আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে খরচ ধরা হয়েছে ৭৬১ কোটি টাকা। প্রকল্পটি কাল রোববার অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উঠছে।
জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করা হবে রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনের সরকারি জমিতে। প্রকল্পের আওতায় ৬টি ১৪ তলা ভবন ও ১০টি ১০ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। যাতে মোট ৮০৪টি ফ্ল্যাট থাকবে।
একনেক সভায় মোট ১৩টি প্রকল্প উঠছে। যাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৮ হাজার ৮২০ কোটি টাকা, এবং প্রকল্প ঋণ থাকবে ১৪৩ কোটি টাকা। আর বিভিন্ন সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক-চেয়ারপারসন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এসব প্রকল্পের মধ্যে নতুন প্রকল্প ৭টি, সংশোধিত প্রকল্প ৪টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য ২টি প্রকল্প রয়েছে।
উত্থাপিত হতে যাওয়া ১৩টি প্রকল্প হলো ৩৬ জুলাই আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ; কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ (সংশোধিত) ; দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২০টি (১২টি নতুন ও ৮টি ফায়ার স্টেশন পুনর্নির্মাণ) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন; বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য লজিস্টিকস ও ফ্রিট মেইনটেন্যান্স ফ্যাসিলিটিজ গড়ে তোলা (সংশোধিত); গ্রামীণ স্যানিটেশন প্রকল্প; বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন; বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্বাসন; মিরপুর সেনানিবাসে ডিএসসিএসসির অফিসার্স মেস ও বিওকিউ নির্মাণ (১ম সংশোধিত); ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন; উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক (আইজিএ) প্রশিক্ষণ (২য় পর্যায়); বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ; কন্দাল ফসল গবেষণা জোরদারকরণ এবং স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারিং প্রজেক্ট ইন ডিস্ট্রিবিউশন জোনস অব বিপিডিবি (সংশোধিত) প্রকল্প।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রকল প র জন য একন ক
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি