‘জাতি’ শব্দটাই ধ্বংসের কারণ : ফরহাদ মজহার
Published: 29th, July 2025 GMT
দেশের চলমান অস্থিরতা নিয়ে খ্যাতিমান লেখক, চিন্তক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘‘জাতি শব্দটাই ধ্বংসের কারণ। পৃথিবীতে জাতি একটাই। তার নাম হলো মানবজাতি। যখনই আপনি বাঙালি জাতি বলবেন, তখনই সমস্ত জাতির বিরুদ্ধে আপনি দাঁড়ালেন। এই যে গণ্ডগোল শুরু হয়ে গেল।’’
সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেউড়িয়ায় মরা কালিগঙ্গা নদীর ধারে নির্মিত লালন মুক্তমঞ্চে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জলন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘‘বাঙালি মানে কী? আমাদের একটা ইতিহাস আছে। সেই ইতিহাসে বাংলা ভাষা আছে, ইসলাম আছে, আরো বহু ধর্ম আছে। যদি আমরা রাষ্ট্রনীতির দিক থেকে কথা বলি, আমাদের দরকার রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী। তার মানে বহু জাতি থাকতে পারে। যেমন আমি বাঙালি জন্মসূত্রে। তেমনি চাকমা আছে, সাঁওতাল আছে। আমি জন্মসূত্রে মুসলিম, তেমনি সনাতন ধর্মাবলম্বী আছে। তেমনি আরো বহু রকম ধর্মাবলম্বী আছে।’’
আরো পড়ুন:
বঙ্গমাতাকে নিয়ে লেখা প্রথম বই ‘বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’
জাতির জনকের সমাধিতে সিলেটের আ.
তিনি আরো বলেন, ‘‘এ জন্য জাতি শব্দটা সমস্যার কারণ। মানে বাঙালি জাতি বলে কোনো জাতি নেই। এটা কাল্পনিক। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি। এটা আমার সংস্কৃতি। যদি আমি আমেরিকা বর্ডারে যেতাম, কথা বলতাম ইংরেজিতে। তখন ইংরেজি সংস্কৃতি হতো আমার সংস্কৃতি। ফলে জাতি কথাটা অর্থহীন।’’
‘জাগ্রত জুলাই’ স্মরণে সোমবার (২৮ জুলাই) কুমারখালীর ছেউড়িয়ার ফকির লালন শাহের আখড়াবাড়ীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় ভাবগানের আয়োজন করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। শেষ বিকেলে আলোচনা সভার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার প্রতিনিধি সাজেদুর রহমান বিপুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ফরহাদ মজহার ছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, নিহত শহীদদের স্বজন ও আহতরা।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত র জনক ফরহ দ মজহ র
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস