দেশের চলমান অস্থিরতা নিয়ে খ্যাতিমান লেখক, চিন্তক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘‘জাতি শব্দটাই ধ্বংসের কারণ। পৃথিবীতে জাতি একটাই। তার নাম হলো মানবজাতি। যখনই আপনি বাঙালি জাতি বলবেন, তখনই সমস্ত জাতির বিরুদ্ধে আপনি দাঁড়ালেন। এই যে গণ্ডগোল শুরু হয়ে গেল।’’

সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেউড়িয়ায় মরা কালিগঙ্গা নদীর ধারে নির্মিত লালন মুক্তমঞ্চে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জলন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘‘বাঙালি মানে কী? আমাদের একটা ইতিহাস আছে। সেই ইতিহাসে বাংলা ভাষা আছে, ইসলাম আছে, আরো বহু ধর্ম আছে। যদি আমরা রাষ্ট্রনীতির দিক থেকে কথা বলি, আমাদের দরকার রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী। তার মানে বহু জাতি থাকতে পারে। যেমন আমি বাঙালি জন্মসূত্রে। তেমনি চাকমা আছে, সাঁওতাল আছে। আমি জন্মসূত্রে মুসলিম, তেমনি সনাতন ধর্মাবলম্বী আছে। তেমনি আরো বহু রকম ধর্মাবলম্বী আছে।’’

আরো পড়ুন:

বঙ্গমাতাকে নিয়ে লেখা প্রথম বই ‘বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’

জাতির জনকের সমাধিতে সিলেটের আ.

লীগ নেতাদের শ্রদ্ধা

তিনি আরো বলেন, ‘‘এ জন্য জাতি শব্দটা সমস্যার কারণ। মানে বাঙালি জাতি বলে কোনো জাতি নেই। এটা কাল্পনিক। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি। এটা আমার সংস্কৃতি। যদি আমি আমেরিকা বর্ডারে যেতাম, কথা বলতাম ইংরেজিতে। তখন ইংরেজি সংস্কৃতি হতো আমার সংস্কৃতি। ফলে জাতি কথাটা অর্থহীন।’’ 

‘জাগ্রত জুলাই’ স্মরণে  সোমবার (২৮ জুলাই) কুমারখালীর ছেউড়িয়ার ফকির লালন শাহের আখড়াবাড়ীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় ভাবগানের আয়োজন করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। শেষ বিকেলে আলোচনা সভার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার প্রতিনিধি সাজেদুর রহমান বিপুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ফরহাদ মজহার ছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, নিহত শহীদদের স্বজন ও আহতরা।

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত র জনক ফরহ দ মজহ র

এছাড়াও পড়ুন:

৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা 

সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ