ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্যানেল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন উমামা ফাতেমা।

বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন তিনি।

উমামা নিজে প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়ে তার পোস্টে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ফরম যুক্ত করেছেন। যারা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করতে চান অথবা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগ্রহী, তাদের ফরমটি পূরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গত ২৯ জুলাই ডাকসুর আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। 

উমামার তার ফেসবুক পোস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন—
“আপনারা ইতোমধ্যে জানেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-২০২৫ এর তফসিল ঘোষণা হয়েছে এবং নির্বাচন আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।

আমি উমামা ফাতেমা, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও কবি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকেই ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলাম এবং রাজনৈতিক সংগঠনের ভিতরে বাইরে থেকে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করে আসছি। ১ম বর্ষে থাকাকালীন বৈধ সিটের দাবিতে ‘বৈধ সিট আমার অধিকার’ নামক প্ল্যাটফর্মটি গড়ে তুলি, পাশাপাশি আমার এই স্বল্প পথচলার অভিজ্ঞতায় আমি অনুধাবন করেছি যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় ধরনের বিপ্লব ব্যতীত এখানকার সমস্যাগুলো সমাধান করা খুবই কঠিন, আর সে পরিবর্তন আনতে পারে কেবল শিক্ষার্থীরাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে সংঘঠিত ও লেজটিমেট একটি বডি, যেটি কেবল ছাত্র সংসদ।

আমি বিশ্বাস করি, এই ছাত্র সংসদে শিক্ষার্থীরা এমন নেতৃত্ব চায়, যারা কোনো পক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না, শিক্ষার্থীদের অধিকারের ব্যাপারে অটল থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধুমাত্র নেতা বানানোর কারখানা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে না। শিক্ষার গুণগত মান ও গবেষণাবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।

সেই জায়গা থেকে, দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করতে থাকা বা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবনাচিন্তা রয়েছে ঐ সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি স্বতন্ত্র প্যানেল করতে চাই যা আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে গবেষণাভিত্তিক ও দূরদর্শী কাজ করার চেষ্টা করবে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর কাছে আহ্বান জানাতে চাই, আপনারা যারা মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করা উচিত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে ও রাজনৈতিক আধিপত্যবাদের ফলে ধ্বংস হয়ে যাওয়া এ বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বরূপে ফিরিয়ে আনতে চান।

প্রথম বর্ষ থেকে বৈধ সিট, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার, সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করতে চান, আপনাদের আমরা আহ্বান জানাচ্ছি আমাদের প্যানেলে।

যেসকল শিক্ষার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কিংবা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করতে চান, তাদেরকে আমি আমাদের প্যানেলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করছি কমেন্টে প্রদত্ত ফর্মটি পূরণ করার জন্য—”

গত বছর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে উমামা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ছিলেন। সে সময় তিনি ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিবও ছিলেন। অভ্যুত্থানের পর তিনি ছাত্র ফেডারেশন থেকে পদত্যাগ করেন। গত বছরের অক্টোবরে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হন। গত মাসে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাড়েন। 

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষ র থ দ র কল য ণ ক জ করত ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ