বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ই-ভিসা চালু করল যুক্তরাজ্য
Published: 4th, August 2025 GMT
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদনপ্রক্রিয়া পরিবর্তন করেছে যুক্তরাজ্য। ভিসার জন্য কাগজের নথিপত্রের পরিবর্তে ই-ভিসা ব্যবস্থা চালু করেছে। এর ফলে গত ১৫ জুলাই থেকে যাঁরা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থী ভিসা (স্টুডেন্ট ভিসা) আবেদন করেছেন, তাঁরা পাসপোর্টে আর ভিসার স্টিকার বা ভিনিয়েট পাবেন না। কারা এখন পাসপোর্টে স্টিকার পাবেন, তা–ও জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সরকার।
যুক্তরাজ্যের সরকারের বরাত দিয়ে ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ই-ভিসা চালু করে যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স পারমিট (বিআরপি) বাতিল করে দিয়েছে এবং এর পরিবর্তে ই-ভিসা চালু করেছে। একইভাবে আগামীতে বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স কার্ড (বিআরসি) ও পাসপোর্টে সিল বা স্টিকার ভিসা—সব কিছুই ধাপে ধাপে ই-ভিসার মাধ্যমে প্রতিস্থাপিত হবে। ভিসা স্টিকারের পরিবর্তে ই-ভিসা সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষিত থাকবে।
আরও পড়ুনফিনল্যান্ড কীভাবে গড়েছে বিশ্বসেরা শিক্ষাব্যবস্থা, সাফল্যের ৬ কারণ০৩ আগস্ট ২০২৫কী কী পরিবর্তন হচ্ছে—
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এখন থেকে ভিসা পেলে পাসপোর্টে আর কোনো স্টিকার (ভিনিয়েট) থাকবে না। ভিসার সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে একটি নিরাপদ ডিজিটাল অ্যাকাউন্টে। ওই অ্যাকাউন্ট থেকে তা যেকোনো সময় যাচাই বা আপডেট করা যাবে। যুক্তরাজ্যে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থীদের কাছে কেবল পাসপোর্ট এবং ই-ভিসা অ্যাকাউন্টের তথ্য রাখতে হবে।
কারা এখনো স্টিকার ভিসা পাবেন?
অধিকাংশ আবেদনকারী ই-ভিসা পাবেন, তবে কিছু ক্ষেত্রে ভিনিয়েট স্টিকার পাবেন, যাঁরা স্টুডেন্টদের ডিপেন্ডেন্ট (স্বামী/স্ত্রী, সন্তান) আবেদনকারী।
যুক্তরাজ্যের হোম অফিস বলছে, এই পরিবর্তনের উদ্দেশ্য হলো প্রবেশাধিকার সহজ ও নিরাপদ করা এবং ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়াকে আরও একধাপ এগিয়ে নেওয়া। ই-ভিসার মাধ্যমে যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে ভিসা যাচাই বা তথ্য-উপাত্ত হালনাগাদ করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুননিউজিল্যান্ড শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়াচ্ছে কর্মঘণ্টা, আরও নতুন যে যে উদ্যোগ২২ জুলাই ২০২৫বিমানে ওঠার আগে শিক্ষার্থীদের যা যা অনুসরণ করা উচিত—
* ইউকেভিআই (UKVI) অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন এবং যেই পাসপোর্ট দিয়ে ভ্রমণ করবেন, সেটি ওই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করে নিন
* নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার ই–ভিসা ইস্যু হয়েছে এবং সঠিকভাবে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত আছে
* ই–ভিসা অনুমোদনের চিঠির একটি কপি (মুদ্রিত বা ডিজিটাল) সঙ্গে রাখুন, যাতে বিমানবন্দরে বা ইমিগ্রেশনের সময় দেখানো যায়
* যদি নতুন পাসপোর্ট করে থাকেন বা পাসপোর্ট পরিবর্তন করে থাকেন, তবে ইউকেভিআই প্রোফাইলে পাসপোর্টের তথ্য আপডেট করুন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর জ য র অ য ক উন ট র বর ত
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস