বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। মধ্যমপন্থা ও উদারপন্থী রাজনীতি সরিয়ে দিয়ে উগ্রবাদ, চরমপন্থী রাজনীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। এটা বাংলাদেশের জন্য চরম ক্ষতিকর হবে। উদারপন্থী গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ঐকবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’’

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, “রাজনীতিতে মতভেদ থাকবেই। এখন যে পরিস্থিতি সেই পরিস্থিতিতে জনগণ বিভ্রান্তিতে পড়ে যাচ্ছে। মানুষ বলছে নির্বাচন হবে তো? নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে একধরনের আশঙ্কা রয়েছে। তবে নির্বাচন হবেই এবং ঘোষিত সময়ের মধ্যেই হবে। নির্বাচন যদি না হয়, তাহলে এই জাতি প্রচণ্ড রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেক বাড়বে। বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকে চেষ্টা করছে ফ্যাসিবাদেকে নিয়ে কথা বলার জন্য। বিদেশেও এটা নিয়ে কাজ হচ্ছে। তাই নির্বাচন খুব দরকার।”

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে কয়েকটি রাজনৈতিক দল মিথ্যা-ভুল প্রচারণা করে বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়। আপনারা তাদের এই সুযোগটা দিবেন না। যাতে তারা বলতে পারে বিএনপি খারাপ কাজ করছে। আপনারা মনে করবেন না যে আপনার ক্ষমতায় চলে এসেছেন। এখনো আপনারা ক্ষমতার কাছেই আসেননি। অনেকে ষড়যন্ত্র আছে, চক্রান্ত আছে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “কয়েকদিন আগে কিছু হতাশার কথা বলেছিলাম। এ বিষয় নিয়ে আমার কাছের মানুষ ভর্ৎসনা করেছে। তারা বলেছেন- আপনি হতাশার কথা বললেন কেনো, আমরা তো আপনার কথায় উৎসাহ পাই। তাদের বলেছিলাম- এই বয়সে এসে যখন দেখি আমার স্বপ্ন, লড়াই, সংগ্রাম ম্লান হয়ে যাচ্ছে। তখন স্বাভাবিকভাবেই হতাশা আসতে পারে।”

তিনি আরো বলেন, “জুলাইয়ের সংগ্রাম নিয়ে খুব বেশি লেখা হয়নি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের নিয়ে অনেক কালজয়ী গান, কবিতা লেখালেখি হয়েছে কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে তেমন কবিতা-গান আমি দেখিনি।”

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কবি আবদুল হাই সিকদার, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত আপন র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির

আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।

সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’

নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’

সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাইজেরিয়ায় কেন হামলা চালানোর হুমকি দিলেন ট্রাম্প
  • দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
  • অদৃশ্য শক্তি ও ফ্যাসিষ্টরা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত খোরশেদ
  • নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির
  • বিদেশ যেতে কেন বাধা দেওয়া হল, প্রশ্ন মিলনের