গাজাকে পর্যটন কেন্দ্র বানানোর পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন
Published: 31st, August 2025 GMT
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের মধ্যে গাজার জন্য একটি যুদ্ধ পরবর্তী পরিকল্পনা প্রচারিত হচ্ছে। এতে বলা হয়েছে, কমপক্ষে এক দশক ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত ছিটমহলটি পরিচালনা করা, গাজার জনসংখ্যার অস্থায়ী স্থানান্তর এবং গাজাকে পর্যটন কেন্দ্র এবং উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে পুনর্নির্মাণ করা। রবিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে যে, ৩৮ পৃষ্ঠার একটি প্রসপেক্টাস অনুসারে, গাজার ২০ লাখ মানুষ ‘স্বেচ্ছায়’ অন্য দেশে চলে যাবে অথবা পুনর্গঠনের সময় অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ এলাকায় যাবে।
রয়টার্স এর আগে জানিয়েছিল, ফিলিস্তিনিদের থাকার জন্য গাজার ভেতরে এবং সম্ভবত বাইরে ‘হিউম্যানিটেরিয়ান ট্রানজিট এরিয়া’ নামে বৃহৎ আকারের শিবির নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। বিতর্কিত মার্কিন ত্রাণ বিতরণ গোষ্ঠীগাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন বা জিএইচএফ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেউ জমির মালিক হলে তাকে তাদের সম্পত্তি পুনর্নির্মাণের অধিকারের বিনিময়ে একটি ‘ডিজিটাল টোকেন’ দেওয়া হবে। যে ফিলিস্তিনিরা চলে যাবে তাদের চার বছরের ভাড়া মেটাতে পাঁচ হাজার ডলার নগদ এবং ভর্তুকি দেওয়া হবে। তাদের এক বছরের খাবারও দেওয়া হবে।
এই পরিকল্পনাটির নাম ‘গাজা পুনর্গঠন, অর্থনৈতিক ত্বরণ এবং রূপান্তর ট্রাস্ট, বা গ্রেট ট্রাস্ট।’ এটি জিএইচএফ তৈরি করেছে। এই জিএইচএফ হচ্ছে সেই প্রতিষ্ঠান যেটি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাথে সমন্বয় সাধন করে এবং গাজায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর জন্য বেসরকারি মার্কিন নিরাপত্তা ও সরবরাহ সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করে।
আগস্টের শুরুতে, জাতিসংঘ জানিয়েছিল, ২০২৫ সালের মে মাসে জিএইচএফ কাজ শুরু করার পর থেকে গাজায় সাহায্য পেতে গিয়ে এক হাজার জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই জিএইচএফ সাইটের কাছে কর্মরত ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে।
হোয়াইট হাউস এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি। তবে গাজা পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনাটি ট্রাম্পের পূর্ববর্তী মন্তব্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস