আবারো আগা খান পুরস্কার পেলেন মেরিনা তাবাসসুম, প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন
Published: 3rd, September 2025 GMT
দ্বিতীয়বারের মতো আগা খান আর্কিটেকচার অ্যাওয়ার্ড অর্জনের জন্য বিশিষ্ট স্থপতি মেরিনা তাবাসসুমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে এই পুরস্কারের জন্য মেরিনা তাবাসসুমসহ সাত বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। মেরিনা তাবাসসুম তার নকশা করা ‘খুদি বাড়ি’ প্রকল্পের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
একই দিন এক অভিনন্দন বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “অভিনন্দন জানাতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই বিরল ও ঐতিহাসিক অর্জন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।’
এর আগে ২০১৬ সালে স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম প্রথমবারের মতো একই পুরস্কারে ভূষিত হন।
অভিনন্দন বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নদীভাঙনের কারণে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর জন্য জলবায়ু-সহনশীল, সাশ্রয়ী মূল্যের এবং বহনযোগ্য আবাসস্থল খুদি বাড়ি নিয়ে আপনার উদ্ভাবনী কাজ চমৎকারভাবে দেখিয়েছে যে স্থাপত্য কীভাবে সহানুভূতি এবং দূরদৃষ্টি দিয়ে মানবতার সেবা করতে পারে। আপনি বিশ্বকে দেখিয়েছেন যে নকশা কেবল ফর্ম এবং নান্দনিকতার বিষয়ে নয়, আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় মর্যাদা, স্থিতিস্থাপকতা এবং মানুষের প্রতিভা শক্তিরও বিষয়।”
২০২১ সালে আমেরিকান একাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড লেটারস অ্যাওয়ার্ডসের সোয়ান পদক পেয়েছিলেন মেরিনা। ২০২২ সালে লিসবন আর্কিটেকচার ট্রিয়েনালে মিলেনিয়াম লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী হন তিনি।
২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টস’। ১৯৯৪ সালে বুয়েট থেকে স্নাতক হওয়ার পর ১৯৯৫ সাল থেকে আরবানায় কর্মরত ছিলেন। এর সহপ্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন তিনি।
আবদুল্লাহপুরের বাইত উর রউফ মসজিদের জন্য তার তৈরি নকশা দিয়ে পরিচিতি পান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাপ্তাহিক টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৪ সালের বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম।
ঢাকা/আসাদ/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস