গাজা শহরের বাড়িঘর থেকে আরো বেশি লোককে জোর করে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে ইসরায়েলি সেনারা। গাজার বৃহত্তম নগর কেন্দ্রের বিশাল অংশ ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য স্থল অভিযানের অংশ হিসেবে বাসিন্দাদের বের করে দেওয়া হচ্ছে বলে বুধবার জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বুধবার জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে শুরু হওয়া স্থল অভিযানের আগে তারা ১৫০টি বিমান ও কামান হামলা চালিয়েছে। দুটি সেনা বিভাগ শহরের কেন্দ্রস্থলের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আগামী দিনে তৃতীয়টি তাদের সাথে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বেশ কয়েকটি বিমান হামলায় বাস্তুচ্যুত মানুষের বসবাসকারী তাঁবু ক্যাম্পের মাঝখানে অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, ভবনগুলো হামাস নজরদারির জন্য ব্যবহার করছিল।

গাজা শহর থেকে দক্ষিণে যাওয়ার উপকূলীয় রাস্তাটি আক্রমণ থেকে পালানোর চেষ্টা করা পরিবারগুলোতে পরিপূর্ণ। বুধবার, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজা উপত্যকার মাঝখান দিয়ে দ্বিতীয় একটি পথ দুই দিনের জন্য খোলার ঘোষণা দিয়েছে, যাতে ফিলিস্তিনিদের দেশত্যাগকে উৎসাহিত করা যায়।

মঙ্গলবার রাতে গাজা শহরের আল-রান্তিসি শিশু হাসপাতালেও আঘাত হানে ইসরায়েলি বোমা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, হাসপাতালের ৮০ জন রোগীর অর্ধেক ভবন থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তবে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা চার শিশু এবং আটটি অকাল জন্মগ্রহণকারী শিশু রয়ে গেছে।

স্থানীয় হাসপাতালগুলোর মতে, রাতভর হামলায় ৩০ জন নিহত হয়েছে, যার ফলে দুই বছরের যুদ্ধে মোট ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজারে পৌঁছেছে। 

মঙ্গলবার, জাতিসংঘের একটি মানবাধিকার কমিশন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে উপসংহারে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ