রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস ক্যাম্পাস’ হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিনেট ভবনে এ উদ্যোগ উদ্বোধন করেন রাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ও মাস্টারকার্ড যৌথভাবে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

আরো পড়ুন:

উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে রাকসু নির্বাচনের প্রচার

রাকসু নির্বাচন বর্জনের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থীর

ক্যাশলেস বাংলাদেশ প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা এখন থেকে ক্যাম্পাসজুড়ে দ্রুত, নিরাপদ ও সহজে ডিজিটাল লেনদেন করতে পারবেন। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়া, বইয়ের দোকান থেকে শুরু করে প্রশাসনিক দপ্তর পর্যন্ত সব জায়গায় পয়েন্ট-অব-সেল (পিওএস) মেশিন ও বাংলা কিউআর পেমেন্ট সেবা চালু করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য চালু করা হয়েছে একটি এক্সক্লুসিভ ডেবিট কার্ড, যা তাদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম আরো সহজ করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.

ওমর ফারুক খান বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের প্রথম ক্যাশলেস ক্যাম্পাসে রূপান্তরিত করতে মাস্টারকার্ডের সঙ্গে অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত। এ উদ্যোগ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াবে এবং শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের জন্য নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন লেনদেন নিশ্চিত করবে।”

মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাশলেস ক্যাম্পাস উদ্যোগে ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা গর্বিত। বিশেষ করে স্টুডেন্ট ডেবিট কার্ড ও আধুনিক ডিজিটাল পেমেন্ট সমাধান শুধু ক্যাশলেস বাংলাদেশ বাস্তবায়নেই নয়, বরং তরুণ প্রজন্মকে ক্ষমতায়িত করে দেশের ডিজিটাল অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করবে।”

তিনি বলেন, “এ উদ্যোগ শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের জন্য উপকারী হবে এবং শিক্ষা খাতে ডিজিটাল রূপান্তরের অগ্রদূত হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেবে।”

অধ্যাপক মঈনুদ্দিন খান বলেন, “ক্যাশলেস সিস্টেম আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি দৈনন্দিন জীবনে অনেকভাবে কাজে আসবে। তবে এ ব্যবস্থার সঙ্গে কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। যেমন- একজন ব্যক্তি আড়ং শপিংমলে কেনাকাটা করতে গিয়ে কার্ড ব্যবহার করেন। কিন্তু পিন নাম্বার দেওয়ার পর প্রতারণার মাধ্যমে তার অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তুলে নেওয়া হয়। এ ধরনের প্রতারণা রোধে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা জরুরি। নচেৎ আমরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারি। তবে সুশাসন নিশ্চিত করে যদি ক্যাশলেস ব্যবস্থার যথাযথ ব্যবহার করা যায়, তাহলে এটি সমাজের জন্য বহুবিধ উপকার বয়ে আনবে।”

অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালকবৃন্দের মধ্যে রথীন কুমার পাল, মো. শরাফত উল্লাহ খান, রাফেজা আখতার কান্তাসহ ইসলামী ব্যাংক ও মাস্টারকার্ডের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম স ট রক র ড ব শ বব দ য এ উদ য গ দ র জন য ব যবস থ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ