Prothomalo:
2025-10-04@07:03:59 GMT

মুদিদোকানে ভালুকের হানা

Published: 4th, October 2025 GMT

যুক্তরাষ্ট্রে একটি মুদিদোকানে আচমকাই হাজির হলো এক অপ্রত্যাশিত ক্রেতা—একটি কালো ভালুক। দোকানের স্বয়ংক্রিয় দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়ে সেটি। আতঙ্কে মুহূর্তেই চারপাশে ছোটাছুটি শুরু করেন অধিকাংশ ক্রেতা–কর্মচারী। কেউ কেউ দৃশ্যটি মুঠোফোনে ধারণও করেন।

অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণে ওরো ভ্যালির ফ্রাই’স নামের দোকানে ঘটেছে এ ঘটনা। গত সপ্তাহান্তে এ এলাকার আশপাশে ভালুকটিকে কয়েকবার দেখা গিয়েছিল। গত সোমবার সকালে সেটিকে দোকানের পেছনে ঘুরতে দেখা যায়। একপর্যায়ে স্বয়ংক্রিয় দরজার সামনে আসে এবং ভেতরে প্রবেশ করে।

ভেতরে ঢুকেই ভালুকটি ছোটাছুটি শুরু করে। এক ক্রেতার তোলা ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি দোকানের ভেতর ভালুকটিকে খুঁজছেন। তিনি কিছুক্ষণ ফোনের দিকে তাকানোর পর চোখ তুলতেই দেখেন, ভালুকটি তাঁর একেবারে কয়েক ফুট দূরে দাঁড়িয়ে। এরপর সেটি দৌড়ে সরে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং দোকানে থাকা লোকজনকে সাবধানে বের করে নিয়ে আসে। ওই ঘটনায় সৌভাগ্যক্রমে কেউ আহত হননি এবং দোকানেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এদিকে দোকান থেকে বেরিয়েই ভালুকটি চোখের আড়ালে মিলিয়ে যায়।

স্থানীয় পুলিশ মুখপাত্র ড্যারেন রাইট বলেন, ‘ওরো ভ্যালিতে মাঝেমধ্যে মরু এলাকা থেকে ভালুক চলে আসে। তবে কোনো ভালুকের দোকানে ঢুকে পড়া—এমন অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য একেবারেই নতুন।’

এ ঘটনার পর স্থানীয় লোকজনের মধ্যে কৌতুক আর আলোচনার ঝড় ওঠে। কেউ বলেন, ‘বোধ হয় ফলমূল কিনতে এসেছিল ভালুকটি!’ কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে মানুষের বসতি আর বন্য প্রাণীর আবাসস্থলের সীমারেখা যে ক্রমে ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে, এ ঘটনা তা–ই আবার মনে করিয়ে দিল।

হয়তো ক্ষুধার টানেই ভালুকটি দোকানে প্রবেশ করেছিল। এতে করে উভয় পক্ষই কিছুটা উপায়হীন ও আতঙ্কিত হয়েছে। একদিকে হঠাৎ মানুষের ভিড় ও অচেনা পরিবেশে এসে ভালুকটি যেমন উপায়হীন হয়ে পড়েছিল, তেমনি উপস্থিত মানুষজনও আতঙ্কিত হয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে আরও সতর্ক হতে হবে। দোকানের আশপাশে বন্য প্রাণীর প্রবেশ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ এবং দ্রুত সাড়া দিতে সক্ষম বিশেষ টিম গঠন করা যেতে পারে। বন্য প্রাণীদের বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করাও বন্ধ করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাজার শিক্ষার্থীদের মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন অধরা, কারণ...

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েও আমেরিকায় যেতে পারছেন না গাজার কয়েক ডজন শিক্ষার্থী। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনি পাসপোর্টধারীদের জন্য প্রায় সব ধরনের অ-অভিবাসী ভিসা স্থগিত করায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।  

ভাঙাচোরা জীবন,  সীমান্তে আটকে স্বপ্ন

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর কয়েক দিনের মধ্যেই গাজার মরিয়ামের (নিজেকে এবং পরিবারকে রক্ষার জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করছেন) জীবন ওলটপালট হয়ে যায়। বাড়িঘর, স্কুল এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজা, যেখানে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পড়ছিলেন—সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায় ইসরায়েলের বিমান হামলায়। ডিসেম্বরে নিহত হন তাঁর শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খ্যাতিমান পদার্থবিজ্ঞানী সুফিয়ান তাইয়েহ। মরিয়ম বলেন, ‘আমার কাছে তিনি বাবার মতো ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর শোনার পর আমার মনে হলো পড়াশোনা শেষ হয়ে গেল। মনে হচ্ছে আমার পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেল।’

তবু রাফার তাঁবুতে ঠাঁই নিয়ে অনিশ্চিত বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট–বিভ্রাটের মধ্যেও মরিয়াম হাল ছাড়েননি। সীমান্তের কাছে দুর্বল মিসরীয় সিগন্যাল পাওয়া যায়, এমন স্থানে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি তিনি বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন আর সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। শেষ পর্যন্ত আমেরিকার মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণ অর্থায়নে পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ পান। কিন্তু তিনি এখনো গাজাতেই আটকে আছেন। ভিসা নিষেধাজ্ঞা থামিয়ে দিয়েছে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন।

মরিয়ম বলেন, ‘সম্পূর্ণ অর্থায়িত পিএইচডি প্রোগ্রামের ভর্তির সুযোগের বার্তা পাওয়ার মুহূর্তটি আমি কখনোই ভুলব না। আমাদের তাঁবুতে ফিরে আমার বাচ্চাদের শক্ত করে জড়িয়ে ধরে সুসংবাদটি জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমরা এই দুঃস্বপ্ন থেকে বাঁচব। কিন্তু ট্রাম্পের ভিসা প্রক্রিয়া স্থগিতের কথা শুনে সবকিছু আবার ভেঙে পড়েছিল। মনে হয়েছিল যেন আমার স্বপ্নগুলো আবারও ধ্বংস হয়ে গেছে।’

যুদ্ধ না থাকলেও ফিলিস্তিন শিক্ষার্থীদের ভিসা সাক্ষাৎকার দিতে মিসর বা ইসরায়েলে যেতে হতো। এখন রাফা সীমান্ত প্রায় বন্ধ আর ইসরায়েল যাওয়ার অনুমতি মেলা অসম্ভব।

গাজা শহরের আরেক শিক্ষার্থী ২২ বছরের লায়লারও অবস্থা একই। ইসরায়েলের আক্রমণ শুরু হওয়ার সময় পাঁচ বছরের ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামে চার বছরে চলছিল। ওয়াই–ফাইয়ের সংযোগ পেতে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা হেঁটে এদিক ওদিক যেতেন। সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে ফোন চার্জ করে আবেদনপত্র পাঠাতেন। যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান তিনি। কিন্তু তারপর এল নিষেধাজ্ঞা। সব এলোমেলো হয়ে গেল। তিনি জানালেন, ‘আমরা এখনো গাজাতেই আটকে আছি।’

লায়লাও ছদ্মনাম। তিনি গার্ডিয়ানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেছেন।

যুদ্ধ শুরুর আগে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের শহর রামাল্লার একটি স্কুলে শিক্ষার্থীরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ