স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী  বলেছেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে, এটা আরো উন্নতি হতে থাকবে।”

আজ শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকালে ঢাকার আশুলিয়ায় বোধিজ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রে (বৌদ্ধ বিহার) অনুষ্ঠিত বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দানোৎসব-২০২৫-এ উপদেষ্টা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

‘আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হচ্ছে’ শুনেই সাংবাদিককে ডেকে প্রশ্ন নিলেন উপদেষ্টা

খাগড়াছড়িতে ৩ পাহাড়ি নিহত, মেজরসহ ১৩ সেনাসদস্য আহত

উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলামের দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে চাইলে উপদেষ্টা এড়িয়ে যান। সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে আবার প্রশ্ন করলেও তিনি এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। 

সম্প্রতি দুর্গাপূজায় অসুরের প্রতিমার মুখে দাড়ি লাগানোর বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “৭০০-এর উপরে যারা এই দাড়ি লাগিয়েছে, ইতোমধ্যে আমরা জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেছি এবং তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য মামলা করা হচ্ছে। যারাই এই অপকর্মটা করেছে, খুব তাড়াতাড়ি তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।”

তিনি আরো বলেন, “এখানে কিছু কিছু ফ্যাসিস্ট আছে। আবার ফ্যাসিস্টের সঙ্গে কিছু তথাকথিত ফ্যাসিস্ট ইন্টেলেকচুয়ালও আছে। তারাও কিন্তু এই জায়গায় ইন্ধন দেয়। তারা যেন ইন্ধনটা না দিতে পারে, এজন্য সবাইকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। যারাই এই অপকর্মটা করেছে, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।”

এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৌদ্ধ ধর্মপ্রচারক অতীশ দীপঙ্করের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা জানান, অতীশ দীপঙ্করের স্মরণে তার জন্মস্থান মুন্সীগঞ্জ জেলায় আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চলছে। 

এ জন্য ৩০ একর জমির জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শুধু বিশ্ববিদ্যালয় না, সেখানে যেন অন্যান্য জ্ঞানচর্চা ও ধর্মীয় কাজও করা যায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে।”
 

ঢাকা/সাব্বির/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের এবার সরিয়ে রাখার চিন্তা

বিগত তিনটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের  আগামী নির্বাচনে দায়িত্বে না রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র  উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। 

রবিবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক কোর কমিটির বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

নতুন ভোটাররা জানে না ভোট কীভাবে দিতে হয়: তসলিম হুসাইন

নবীনবরণ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে পরিচ্ছন্নতা অভিযান রাকসু প্রার্থীর

আলোচনায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি এসেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র  উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনের সময় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।” 

এছাড়া, বৈঠকে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের এবার পুনরায় দায়িত্ব না দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। 

তিনি বলেন, “কোনো সহিংসতা বা অস্থিরতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

সভায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনি পরিবেশ যেন শান্তিপূর্ণ থাকে, সে লক্ষ্যে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে প্রস্তুত থাকতে হবে। যে কোনো সহিংসতা বা অস্থিরতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। 

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনকেন্দ্রিক নিরাপত্তা জোরদারে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে থাকবে সিসিটিভি এবং মনিটরিং ব্যবস্থা। বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে পর্যাপ্ত।” 

প্রশিক্ষণের অগ্রগতি তিনি আরো বলেন, “নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণ ২৮টি ব্যাচে ১৩০টি ভেন্যুতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম ব্যাচের ৬,৫০০ সদস্যের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে এবং দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ চলছে। সব প্রশিক্ষণ ২০২৬ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।” 

আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মধ্যেও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রের জন্য ৫ লাখ ৮৫ হাজার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যার মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার জন থাকবেন অস্ত্রসহ এবং বাকি ৪ লাখ ৫০ হাজার জন নিরস্ত্র থাকবেন। আনসার ব্যাটালিয়নের ৩,১৫৭ জন রিক্রুট সিপাহিকেও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে।” 

সশস্ত্র বাহিনীর অংশগ্রহণ নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “এবারের নির্বাচনে ১ হাজার ১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হবে, যার মধ্যে ৬০ শতাংশের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে। এ প্রশিক্ষণ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে শেষ হবে। এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় ৮০ হাজার সদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।” 

সংবেদনশীল পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কতা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনকেন্দ্রিক সীমানা পুনর্নির্ধারণকে কেন্দ্র করে কোনো অস্থিরতা যেন না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিও বর্তমানে শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দুর্গাপূজাকে ঘিরে ষড়যন্ত্র থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপে তা নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে।” 

মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে তিনি বলেন, “শুধু বাহক নয়, গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে।”

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনসিপি গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে বাধা সৃষ্টি করবে না, প্রত্যাশা সিইসির
  • আমি একা সেফ এক্সিট নিয়ে কী করব: স্বরাষ্ট্র উপ‌দেষ্টা 
  • গুম-খুনে জড়িত সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিতের দাবি
  • আমার ছেলেমেয়ে দেশে, আমি একা ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে কী করব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • পিএসসি সচিবের নাম-ছবি ব্যবহার করে প্রতারণার চেষ্টা, সতর্ক থাকার আহ্বান
  • তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের এবার সরিয়ে রাখার চিন্তা