পলিথিন দেখে চিৎকার করছিল কুকুর, মিলল নবজাতকের মরদেহ
Published: 14th, October 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় রেললাইনে পাশ থেকে পলিথিনে মোড়ানো এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রেললাইনের পাশে একটি লাল পলিথিন দেখে কয়েকটি কুকুর চিৎকার করছিল। পথচারীদের মধ্যে কয়েকজন এগিয়ে গিয়ে ব্যাগটি খুলে ভেতরে নবজাতকের মরদেহ দেখতে পান। তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে ঘটনাটি রেলওয়ে পুলিশকে জানান।
আরো পড়ুন:
বাগেরহাটে পচাদিঘীতে মিলল মরদেহ
বরিশালে আ.
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম শফিকুল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে, নবজাতকের জন্ম আজই (সোমবার) হয়েছিল। শিশুটি জন্মের আগে নাকি জন্মের পর মারা গেছে তা বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি বলা যেতে পারে।
তিনি আরো জানান, মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে। কে বা কারা মরদেহ ফেলে গেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে।
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ র মরদ হ উদ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
কালীগঞ্জে শখের মাছ শিকারিদের উৎসব
বর্ষা মানেই শুধু বৃষ্টি নয়- এ সময়টা মাছ শিকারিদের কাছে আনন্দের মৌসুমও। কেউ জীবিকার তাগিদে, কেউবা নিছক শখের বশেই ছুটে যান জলাশয়ের ধারে। গাজীপুরের কালীগঞ্জের বিল-ঝিল, নদী-নালা আর খালের পাড়ে এখন জমে উঠেছে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার উৎসব।
আষাঢ়-শ্রাবণের শুরুতেই যখন চারদিক জলময় হয়ে ওঠে, তখন প্রাণ ফিরে পায় কালীগঞ্জের বিল ও নদীগুলো। আশ্বিনে খাল বিলে মাছ বেড়ে ওঠে। সঙ্গে জেগে ওঠে শখের মাছ শিকারিদের দল। কেউ পেশায় ব্যবসায়ী, কেউ শিক্ষক, কেউ চাকরিজীবী। তবে সবারই এক পরিচয়, তারা বড়শি দিয়ে মাছ ধরার টানে ছুটে আসেন এই জলমগ্ন মাঠে।
জেলেরা যেখানে সারা বছর মাছ শিকারেই ব্যস্ত, সেখানে এই শৌখিন শিকারিরা মৌসুমি অভিযানে নামেন। কেউ বড়শি ফেলে নদীর ধারে বসে থাকেন, কেউ আবার ডিঙি নৌকা ভাড়া করে চলে যান জলাশয়ের গভীরে।
বিলের নিয়মিত শিকারি পারভেজ বলেন, “বড়শি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা। দিনভর বসে থেকেও যদি একটা বড় মাছ পাই, তাতেই সারাদিনের ক্লান্তি মুছে যায়। টাকা-পয়সা ওঠে কি না, সেটা ভাবি না।”
অনেকে জানান, টোপ বানাতে কেউ কেউ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করেন। কারো কাছে এটা প্রতিযোগিতা, কারো কাছে ধ্যানের মতো এক অভ্যাস।
কালীগঞ্জ উপজেলার বেলাই বিল, আফাইন্নার বিল, অন্যান্য জলাশয় ও শীতলক্ষা নদীতে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে এই ‘বড়শি মৌসুম’। সকাল থেকেই ডিঙি নৌকা, বাঁশের চেয়ার, ছাতা, টিফিনবক্স-সব নিয়ে হাজির হন শিকারিরা।
বিকেল গড়ালে পাড়ে ভিড় জমে দর্শকদেরও। কেউ কৌতূহল নিয়ে দেখেন, কেউ পরামর্শ দেন, আবার কেউ মাছ ধরার মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, “শখের মাছ শিকার আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ। এতে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যায়। আমরা চাই, সবাই নিয়ম মেনে শিকার করুক-ছোট মাছ ছেড়ে দিক, জলাশয়ের ভারসাম্য বজায় থাকুক।”
মাছ ধরা এখন শুধু জীবিকার বিষয় নয়- এটা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ বিনোদনের এক অনন্য মাধ্যম। ছুটির দিনে অনেকে পরিবার নিয়ে আসেন। অনেকেই শিকার করা টাটকা মাছ বিলের পাড়েই রান্না করেন।
হঠাৎ বড় মাছ টোপে ধরা পড়লে পাড়ে ছড়িয়ে পড়ে উচ্ছ্বাস। কেউ হাসে, কেউ চিৎকার দেয়, আবার কেউ বলে- ‘এই আনন্দের দাম টাকায় মাপা যায় না!’
বর্ষা শেষে জল কমে এলেও শিকারিদের মন থেকে বড়শির টান যায় না। তারা বলে, “মাছ না ধরলে দিনটা অসম্পূর্ণ লাগে।”
কালীগঞ্জের জলাশয়গুলো তাই শুধু জীবিকার উৎস নয়-এগুলো এখন মানুষ ও প্রকৃতির সংযোগের প্রতীক। বড়শির ফাঁদে ধরা পড়ে শুধু মাছ নয়, ধরা পড়ে আনন্দ, ধৈর্য আর জীবনের রঙ।
ঢাকা/এস