বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো: প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও নেই কাজ, ৩৪ মাস বন্ধ বেতন–ভাতা
Published: 15th, October 2025 GMT
প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোয় কর্মরত ২৬৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হওয়ার পর থমকে যায় প্রকল্পের কার্যক্রম। ফলে বন্ধ হয়ে যায় তাঁদের বেতন–ভাতাও। চাকরি পুনর্বহাল ও বেতন–ভাতার দাবিতে ৫ থেকে ১৪ অক্টোবর পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা। পরিসংখ্যান ব্যুরোর এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল দেশের দারিদ্র্যসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত এ প্রকল্পটি দেশি নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু অর্থায়ন বন্ধ হওয়ায় কর্মীরা কর্মহীন হয়েছেন এবং জাতীয় পরিসংখ্যানের কাজেও প্রভাব পড়ছে।
পরিসংখ্যান ব্যুরো সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের অক্টোবরে পরিসংখ্যান ব্যুরো ‘ডেভেলপমেন্ট অব দ্য পভার্টি ডেটাবেজ’ প্রকল্পে অস্থায়ী ভিত্তিতে ৫৪৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়। কর্মরত ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন, প্রকল্পে নিয়োগ থাকলেও দীর্ঘ সময় তাঁরা রাজস্ব শাখায় কাজ করেছেন। ২০২২ সালের জুলাই থেকে, চাকরিতে যোগদানের ছয় বছর পর তাঁদের প্রকল্পের কাজে নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কার্যক্রম থেমে যায়। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৬ সালে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বেতন–ভাতা বন্ধ হওয়ার সময় ২৬৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর প্রকল্পে নিযুক্ত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২৬১ জন হাইকোর্টে রিট দাখিল করে প্রকল্প শেষ হওয়া পর্যন্ত বেতন–ভাতা বহাল রাখার দাবি করেন।
আরও পড়ুনএই ‘ভুলে ভরা’ বিসিএস প্রশ্নপত্র কারা তৈরি করল১৪ অক্টোবর ২০২৫আদালতের রায়
হাইকোর্ট রিটের পক্ষে রায় দেন। এরপর পরিসংখ্যান ব্যুরো সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিল করে। তবে চলতি বছরের আগস্টে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার আদেশ দেন।
আদালত তিন দফায় সময় বৃদ্ধি করে ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রকল্প চলমান রাখার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি শূন্য পদ সাপেক্ষে চাকরি স্থায়ী করার নির্দেশও দেন আদালত। অদ্যাবধি আদালতের রায়ের পরও তাঁদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়নি। বেতন–ভাতাও পাচ্ছেন না। এ অবস্থাতেই তাঁরা ১০ দিন টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা অভিযোগ করেন, ‘প্রকল্পের মেয়াদ আছে, রায়ও আমাদের পক্ষে হয়েছে, তবুও কার্যক্রম শুরু হয়নি। বেতন–ভাতা বন্ধ। আমরা দীর্ঘদিন ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি।’
২০১৬ সালের অক্টোবরে পরিসংখ্যান ব্যুরো ‘ডেভেলপমেন্ট অব দ্য পভার্টি ডেটাবেজ’ প্রকল্পে অস্থায়ী ভিত্তিতে ৫৪৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স খ য ন ব য র প রকল প র জন ড ট এন ট র
এছাড়াও পড়ুন:
চলে গেলেন পাকিস্তানের বিখ্যাত মোহাম্মদ ভাইদের বড়জন
চলে গেলেন ক্রিকেটের মোহাম্মদ ভাইদের সবচেয়ে বড়জন। হানিফ মোহাম্মদ ও মুশতাক মোহাম্মদদের ভাই সাবেক ক্রিকেটার ওয়াজির মোহাম্মদ আজ ৯৫ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পিসিবির এক্স হ্যান্ডলে বলা হয়, ‘পাকিস্তানের সাবেক টেস্ট ব্যাটসম্যান ওয়াজির মোহাম্মদের মৃত্যুতে পিসিবি গভীরভাবে শোকাহত। মোহাম্মদ ভাইদের মধ্যে চারজন টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৯ সালের মধ্যে তিনি দেশের হয়ে ২০টি টেস্ট খেলেন। তার পরিবার ও বন্ধুদের সমবেদনা জানাচ্ছে পিসিবি।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানের শুরুর দিনগুলোয় টেস্টে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সাবেক ব্যাংকার ওয়াজির। তাঁরা মোট পাঁচ ভাই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলা রাইস মোহাম্মদই শুধু টেস্ট খেলেননি। মোহাম্মদ ভাইদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত পাকিস্তানের হয়ে ৫৫ টেস্ট খেলা কিংবদন্তি হানিফ মোহাম্মদ মারা গেছেন ২০১৬ সালে। মুশতাক মোহাম্মদ পাকিস্তানের হয়ে ৫৭ টেস্ট খেলেছেন। আরেক ভাই সাদিক মোহাম্মদ ৪১ টেস্ট খেলেন পাকিস্তানের হয়ে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ২০১৬ সালে ইসরার আলীর মৃত্যুর পর ওয়াজিরই ছিলেন পাকিস্তানের জীবিত থাকা সবচেয়ে বেশি বয়সী টেস্ট ক্রিকেটার। ১৯৫২ সালে প্রথম টেস্ট সিরিজ খেলতে ভারত সফরে যাওয়া পাকিস্তান দলের অংশ ছিলেন ওয়াজির।
লোয়ার-মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ২৭.৬২ গড় ওয়াজির প্রতিভার প্রতি সুবিচার করে না। তবে পঞ্চাশের দশকে টেস্টে পাকিস্তানের শুরুর দিনগুলোতে বেশ কিছু সাফল্যে তাঁর বড় অবদান আছে। ১৯৫৪ সালে ওভাল টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের ২৪ রানের জয়ে বড় ভূমিকা ছিল ওয়াজিরের। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬০ মিনিট ক্রিজে থেকে তাঁর ৪২ রানের ইনিংসটি পাকিস্তানকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেয়। প্রথম দল হিসেবে ইংল্যান্ডে প্রথম সফরেই টেস্ট জয়ের নজির সেই সফরে গড়েছিল পাকিস্তান। দুই বছর পর করাচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাকিস্তানের ৯ উইকেটের জয়ে প্রথম ইনিংসে ৬৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন ওয়াজির।
আরও পড়ুন৩৪ বলের ফিফটিতে স্বর্ণার রেকর্ড, বাংলাদেশ ২৩২১ ঘণ্টা আগে১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর পাকিস্তান ক্রিকেটে বেশ কিছু কারণে স্মরণীয়। সেই সফরে গ্যারি সোবার্স যেমন ৩৬৫ রানের রেকর্ড গড়েন, তেমনি হানিফও খেলেন ৩৩৭ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস। সেই সফরে ওয়াজির ৫ টেস্টে দুই সেঞ্চুরিসহ ৪৪০ রান করেন। পোর্ট অব স্পেনে পাকিস্তানের ইনিংস ও ১ রানের জয়ে দলের প্রথম ইনিংসে ১৮৯ রান করেন ওয়াজির।
১০৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৪০.৪০ ব্যাটিং গড়ের ওয়াজিরকে পাকিস্তান ক্রিকেটে আদর করে ‘উইজডেন’ নামে ডাকা হতো। কারণ ক্রিকেটের অনেক খুঁটিনাটি পরিসংখ্যান তাঁর ঠোঁটের ওপরে থাকত। ভাই মুশতাকের মতো ওয়াজিরও ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে বসবাস করতেন।
ওয়াজির মোহাম্মদ, হানিফ মোহাম্মদ, মুশতাক মোহাম্মদ ও সাদিক মোহাম্মদ মিলে টেস্ট খেলেছেন মোট ১৭৩টি। হানিফ মোহাম্মদের ছেলে শোয়েব মোহাম্মদের ৪৫ টেস্টও যোগ করলে মোহাম্মদ পরিবারে মোট টেস্টের সংখ্যা দাঁড়ায় ২১৮। ১৯৬৯ সালে করাচিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে একসঙ্গে তিন ভাই হানিফ, সাদিক ও মুশতাক পাকিস্তান দলে খেলেন। যা টেস্ট ইতিহাসে তিন ভাইয়ের একসঙ্গে টেস্ট খেলার তৃতীয় ঘটনা।
আরও পড়ুন১৬ রানে শেষ ৫ উইকেট নেই পাকিস্তানের, স্বস্তিতে নেই দক্ষিণ আফ্রিকাও১ ঘণ্টা আগে