আওয়ামী দোসররা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দাবি আদায়ের নামে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষক–কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মো. সেলিম ভূঁইয়া।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐক্যজোট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেলিম ভূঁইয়া এই মন্তব্য করেন। চাকরি জাতীয়করণ, সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতাসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন সেলিম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি আদায়ের নামে বর্তমানে একটি সংগঠন রাজপথে নানা কর্মসূচি পালন করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে কোটি কোটি শিক্ষার্থীর লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে তারা সরকারকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। যিনি শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি আদায়ের আশ্বাস দিয়ে আন্দোলন করছেন, তিনি একজন আওয়ামী দোসর। তার অকাট্য প্রমাণ রয়েছে।

শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষক-কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন সেলিম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বর্তমানে অর্থ উপদেষ্টা দেশে না থাকায় কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। বাস্তবতার নিরিখে সরকারকে কিছুটা সময় দেওয়া যৌক্তিক। তবে অর্থমন্ত্রী দেশে ফিরলে দ্রুততম সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও শিক্ষকনেতাদের সমন্বয়ে যৌথ সভা আহ্বানের মাধ্যমে সমস্যা নিরসনের জোর দাবি জানান তিনি।

দাবি আদায় না হলে দুপুরে ‘মার্চ টু যমুনা’ করবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা

শিক্ষক–কর্মচারী ঐক্যজোটের এই নেতা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসেই শিক্ষকদের ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আলোচনার টেবিলে তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও আর্থিক সক্ষমতা অনুযায়ী সবার কাছে গ্রহণযোগ্য পরিমাণে বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির প্রত্যাশা শিক্ষকসমাজের।

অতীতে অবসরসুবিধা আদায়ের বিষয়টি উল্লেখ করেন সেলিম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি আলোচনার মাধ্যমে অবসরসুবিধা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রদান করেছিলেন। ইতিহাস সাক্ষী দেয়, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ৫০ শতাংশ বেতন প্রদানের মাধ্যমে জাতীয় বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। সেখানেও আন্দোলনের প্রয়োজন পড়েনি কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করার দরকার পড়েনি।

আরও পড়ুন:
রাস্তায় শিক্ষকেরা, সিদ্ধান্তহীন সরকার

আরও পড়ুন‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা১৮ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সুনামগঞ্জে শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন, কলেজ কর্তৃপক্ষের দুঃখ প্রকাশ

সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত জেলার প্রথম শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। বুধবার দুপুরে ক্যাম্পাসে কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়। এদিকে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের পথ বের করা হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

আজ মানববন্ধনে সুনামগঞ্জের লেখক-গবেষক সুখেন্দু সেন, সাবেক ছাত্রনেতা রেজাউল হক, পঙ্কজ কান্তি দে, মুহাম্মদ মুনাজ্জির হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, মুজাহিদুল ইসলাম, সালেহীন চৌধুরী, মোহাম্মদ রাজু আহমেদ, নাসিম চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন। তাঁরা স্মারকস্তম্ভ কলেজের অন্য কোনো জায়গায় নির্মাণ এবং শহীদ মিনারের ভাঙা অংশ সংস্কারের দাবি জানান। পরে অধ্যক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।

সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুহাম্মদ মুনাজ্জির হোসেন বলেন, ‘এটি জেলার প্রথম শহীদ মিনার, ইতিহাসের অংশ। এটি ভাঙা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা কথা বলার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। তাঁরা স্মারকস্তম্ভ কলেজের অন্য জায়গায় নির্মাণ ও শহীদ মিনার যেভাবে ছিল, সেভাবে আবার সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন।’

জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘সাবেক ছাত্রনেতারা আমাদের কাছে এসে তাঁদের দাবির বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি এখানে নতুন। আমি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলীর সঙ্গে দ্রুত কথা বলে সমস্যার সমাধান করব।’

সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে ভাষাশহীদদের স্মরণে ১৯৬৬ সালে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি সুনামগঞ্জে ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার। প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো এই শহীদ মিনার ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে কলেজের ৭৫ বছর পূর্তির একটি স্মারকস্তম্ভ।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছননগর এলাকায় ১৯৪৪ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। সরকারীকরণ করা হয় ১৯৮০ সালে। কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০২০ সালের ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসব হয়। এই উৎসবের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তখন ক্যাম্পাসে একটি স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। মাসখানেক আগে ওই স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ কোথায় এটি নির্মাণ করা হবে, সেই স্থানটি নির্ধারণ করেছে। স্থান নির্ধারণে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো ভূমিকা নেই।

আরও পড়ুনসুনামগঞ্জের প্রথম শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণ, সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ-প্রতিবাদ৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাকসুর ভোটে ক্যাম্পাসে আনন্দ–উৎসব
  • রাকসু নির্বাচন: ভোটের আগের রাতে গান–স্লোগানে মেতেছেন শিক্ষার্থীরা
  • সুনামগঞ্জে শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন, কলেজ কর্তৃপক্ষের দুঃখ প্রকাশ
  • ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচনে উৎসব
  • চাকসু নির্বাচনে উৎসবের আমেজ
  • ভারতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ বলায় কেন মুসলিমদের ওপর দমন–পীড়ন চলছে
  • এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি মেনে নিন: জিএম কাদের
  • কালীগঞ্জে শখের মাছ শিকারিদের উৎসব
  • বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে উৎসবের আমেজ, প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপ