সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ নেওয়াকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দেশের জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে বৈধ বলে মেনে নিয়েছে, কাজেই এ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মো. মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট খারিজ করে এ পর্যবেক্ষণ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসীন রশিদ।

এর আগে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ নেওয়া চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন আইনজীবী মহসীন রশিদ।

গত ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত চাওয়া হয়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের ৭ জন বিচারপতি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পক্ষে মতামত দিয়ে স্পেশাল রেফারেন্স দেন। সুপ্রিম কোর্টের মতামত ও বৈধতা পাওয়ার পর রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তী সরকারকে শপথবাক্য পাঠ করান।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল

কোনো নীতিমালা বা কার্যধারা ছাড়াই প্রতিবেশব্যবস্থার ক্ষতি মূল্যায়ন ও ক্ষতিপূরণ আরোপ–সংক্রান্ত পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের একটি ধারা এবং ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে নির্ধারিত অর্থের ২৫ শতাংশ জমা দেওয়া-সংক্রান্ত পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালার একটি উপবিধি প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার রুলসহ আদেশ দেন।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৭ ধারায় প্রতিবেশব্যবস্থার ক্ষতির ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ বিষয়ে বলা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ আরোপের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার বিষয়ে ২০২৩ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালার ২৭ বিধিতে বলা রয়েছে। বিধিমালার ২৭(২)(ঘ) উপবিধিতে ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে নির্ধারিত অর্থের ২৫ শতাংশ জমা দেওয়ার কথা বলা আছে। ওই দুটি বিধান প্রশ্নে রুল দেওয়া হয়েছে।

পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালার ২৭(২)(ঘ) উপবিধি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। কোনো নীতিমলা বা কার্যধারা ছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিবেশব্যবস্থার ক্ষতি মূল্যায়ন ও আরোপ–সংক্রান্ত পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৭ ধারা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়েও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।

মেসার্স হাজী আশরাফ হোসেন সরকার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন সরকার এ রিট করেন। রিট আবেদন থেকে জানা যায়, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও বালুমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান গত বছরের ৯ এপ্রিল (২৬ চৈত্র ১৪৩০ বাংলা) ‘মেঘনা নদী বালুমহালসহ’ দুটি স্থানে বালুমহাল ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বান করেন। ১৪৩১ বাংলা বর্ষের বৈশাখ-চৈত্রের জন্য এ দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় মেসার্স হাজী আশরাফ হোসেন সরকার। গত বছরের ১৩ মে প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। বালুমহালের ইজারার মেয়াদ শেষে জেলা প্রশাসনকে দখল বুঝিয়ে দিয়ে চলতি বছরের এপ্রিলে স্থান ত্যাগ করে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তী সময়ে অন্য ব্যক্তিকে ১৪৩২ বাংলা বছরের জন্য বালুমহালটি ইজারা দেওয়া হয়।

রিট আবেদনের তথ্যানুযায়ী, পরিবেশ অধিদপ্তরের নরসিংদী জেলা কার্যালয়ের গত বছরের ১৮ নভেম্বরের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) চলতি বছরের ২৭ জুলাই রিট আবেদনকারীকে (আশরাফ হোসেন সরকার) নোটিশ দেন। শুনানি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর গত ২৭ আগস্ট ওই প্রতিষ্ঠানকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৭ ধারার আলোকে পরিবেশ ও পরিবেশগত ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭০ লাখ টাকা সরকারের অনুকূলে তা জমা দিতে নির্দেশ দেয়।

এ অবস্থায় পরিবেশ সংরক্ষন আইনের ৭ ধারা, ২০২৩ সালের পরিবেশ সংরক্ষন বিধিমালার ২৭(২)(ঘ) উপবিধি এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের গত ২৭ আগস্টের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আশরাফ হোসেন সরকার চলতি মাসে রিটটি করেন। আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আহমেদ ইশতিয়াক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জামিলা মমতাজ।

পরে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ৭০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ আরোপ করা হয়। এ ক্ষেত্রে কী ক্ষতি হয়েছে এবং ক্ষতি কীভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে, তা উল্লেখ নেই।

এই আইনজীবী বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৭ ধারায় ক্ষতি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই। বিধিমালায় আছে, ক্ষতিপূরণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে আপিল করা যাবে। এ ক্ষেত্রে নির্ধারিত অর্থের ২৫ শতাংশ জমা দিয়ে আপিল করতে হবে। অথচ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের আপিল–সংক্রান্ত ১৪ ধারায় ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলা নেই। মূল আইনে যা নেই, এর বাইরে গিয়ে বিধি দিয়ে শর্ত আরোপ করা যায় না, মূলত এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।

মিনহাজুল হক চৌধুরী বলেন, হাইকোর্ট রুল দিয়ে রিট আবেদনকারীকে ৭০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে পরিবেশ অধিদপ্তর যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তার ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। ফলে আপাতত তাঁকে ওই অর্থ দিতে হচ্ছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা