বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন উমে প্রু মারমা (৩৪) নামের এক নারী। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হিমাগ্রিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়ি থেকে শাকসবজি সংগ্রহের জন্য ক্ষেতে যাচ্ছিলেন তিনি। বর্তমানে উমে প্রু মারমা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

উমে প্রু মারমার স্বামী রোমেল তঞ্চঙ্গ্যা পেশায় জিপগাড়ির চালক। এ দম্পতি দুই মেয়েসহ বান্দরবান সদরের বালাঘাটা করুণাপুর চাকমাপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তাদের দুই মেয়েই বান্দরবান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এসব তথ্য জানিয়ে উমে প্রুর ভাই ক্যসিং নু মারমা বলেন, আমার বোন গত রোববার বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। রোববার সকালে তাঁর পেটে গুলি লেগে পেছন দিয়ে বেরিয়ে গেছে। কে বা কারা এই গুলি করেছে, তা জানা যায়নি।

প্রতিবেশীরা জানায়, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাকসবজি সংগ্রহ করতে উমে প্রু সবজি ক্ষেতে যাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ তারা গুলির শব্দ শুনতে পান। কিছুক্ষণ পর উমে প্রুকে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তাঁর পেটের বাঁ পাশে কোমরের ওপর গুলির চিহ্ন দেখা যায়। 
বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) দিলীপ চৌধুরী বলেন, সোমবার আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রোয়াংছড়ির তারাছা ইউনিয়ন থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক মারমা নারীকে নিয়ে আসেন স্বজনরা। তাঁর পেটের বাঁ পাশে সামনের অংশে গুলি লেগে পেছন দিয়ে বেরিয়ে গেছে বলে মনে হয়েছে। পেটের ভেতরে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি। যদিও পেটের ভেতর গুলি থাকার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেননি তিনি। ওই রোগীর জরুরি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। তাই চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রোয়াংছড়ি থানার ওসির দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) শুভ্র মুকুল চৌধুরী বলেন, একজন নারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ পেয়ে তদন্তের জন্য থানা থেকে একজনকে পাঠিয়েছেন। তথ্য সংগ্রহের পর বিস্তারিত জানাবেন। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ