সাভারে বিউপি শিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ
Published: 19th, October 2025 GMT
সাভারে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিউপি) শিক্ষার্থীকে সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান তারা।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে পৃথকভাবে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
আরো পড়ুন:
শিক্ষকদের ওপর হামলা হলে দায় সরকারের: আজিজী
ইবিতে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ, নিরাপত্তা শঙ্কায় শিক্ষার্থীরা
বিকেল ৪ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক শাহ মোহাম্মদ ফয়সাল হোসাইন বলেন, “জুলাই পরবর্তী সময়ে আমরা এখনো আইনের শাসন ও শক্তিশালী বিচার বিভাগ নিশ্চিত করতে পারিনি। যারই ফলশ্রুতিতে দেশে অনবরত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাভারে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার বিচার চাই। ধর্ষণের বিচারকার্য গতিশীল করতে দ্রুত বিচার আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। ধর্ষণের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরিও আবশ্যক।”
আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহম্মদ বাবর বলেন, “সাভারে বিউপি শিক্ষার্থী গণধর্ষণের প্রতিবাদে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। গত ১৭ বছরের বিচারহীনতার কারণে দেশে ধর্ষণ ও অন্যায়-অনিয়ম অব্যাহত ছিল। জাবিতে ছাত্রলীগের মানিক এবং কিছুদিন আগে মোস্তাফিজ ধর্ষণ করেছিল। জুলাই পরবর্তী সময়ে ইন্টেরিম সরকারের মাধ্যমে আমরা পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু এ সরকারও নারীদের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও আইন-শৃঙ্খলা উন্নতি করতে পারেনি। আমরা চাই, অনতিবিলম্বে সাভারের ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।”
অন্যদিকে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ক্রমবর্ধমান ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন, অস্বাভাবিক অগ্নিকাণ্ড এবং বিরাজমান অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে জাকসুর ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “আমরা জানতে চাই, আর কত বোন ধর্ষিত ও নিপীড়িত হলে এই সরকার সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে যাবে? বিগত সময়ের ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ আমরা যখন কমিয়ে দিয়েছি, তখনই সরকার এ বিষয়ে শিথিল হয়ে পড়েছে। যদি ধর্ষণের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি দৃশ্যমান না হয়, তাহলে আমাদের প্রতিবাদ জারি থাকবে। আমরা চাই আমাদের মা-বোনরা নিরাপদে নির্বিঘ্নে এ দেশে বসবাস করবেন। সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন- এই দাবি জানাই।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল সরক র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষকদের ওপর হামলা হলে দায় সরকারের: আজিজী
আন্দোলনকারী এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে যদি বাধা সৃষ্টি বা আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর হামলা হয়, তাতে সৃষ্ট অশান্তির পুরো দায় সরকারকে নিতে হবে।’’
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর হাইকোর্টের মাজার রোড এলাকায় ভুখা মিছিলে বাধা-পরবর্তী অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
ইবিতে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ, নিরাপত্তা শঙ্কায় শিক্ষার্থীরা
বেরোবি শিক্ষার্থীদের জন্য ২ দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘‘কর্মসূচির সময় বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকদের আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদপুরে ৪০০ শিক্ষকের লঞ্চ আটকা পড়ার খবর পাওয়া গেছে। গাজীপুর ও টাঙ্গাইলেও শিক্ষকরা বাসে আটকে পড়েছেন। এ সব ঘটনার প্রেক্ষিতে শিক্ষকরা যে ধরনের হেনস্থা হচ্ছে, তার দায়ভার ঠিকই সরকারকেই নিতে হবে।’’
বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা বাড়ানোর দাবিতে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বরিবার (১৯ অক্টোবর) ‘ভুখা মিছিল’ নিয়ে শিক্ষা ভবন (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর- মাউশি) অভিমুখে পদযাত্রা করে। বিকেলে হাইকোর্ট সংলগ্ন মাজার এলাকায় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে পদযাত্রা আটকে দেয়।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করার দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষক–কর্মচারীরা।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আন্দোলনরত শিক্ষকরা এই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে তারা থালা-বাটি হাতে ভুখা মিছিল করে।
অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলনের মূল দাবি বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ, চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং উৎসব ভাতার ৭৫ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা। এই দাবিগুলো পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য মোট প্রয়োজন মাত্র ৩৪ কোটি টাকা, যা প্রশিক্ষণ তহবিল থেকে স্থানান্তর করা সম্ভব; প্রয়োজন হলে পরবর্তী বাজেটের মাধ্যমে বাকি অর্থ দেওয়া যাবে।’’
শিক্ষকদের আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা দেশের নির্বাচনের প্রধান 'স্টেকহোল্ডার'। প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারসহ প্রায় ৮০ শতাংশ নির্বাচনি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে শিক্ষকেরা নিয়োজিত। আন্দোলনে জামায়াত, এনসিপি, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একাত্মতা প্রকাশ করেছে, যেটি আন্দোলনের ব্যাপক সমর্থন নির্দেশ করে।’’
অধ্যক্ষ আজিজী জানিয়েছেন, পরবর্তী ধাপে শিক্ষা ভবনের সামনে বড় মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে এবং শেষে শহীদ মিনারে ফিরে আসা হবে। তিনি সতর্ক করেছেন, কর্মসূচির সময়ে কারো দ্বারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তাকে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকা/এএএম/বকুল