সরকারি তোলারাম কলেজে "তারুণ্যের উৎসব" উপলক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে "শহীদ মানিক-রহমান-পান্থ-নাঈম স্মৃতি সংসদ" এর প্রদর্শনী। 

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) কলেজের প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ মেলা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। প্রদর্শনীতে তোলারাম কলেজের শহীদ চার শিক্ষার্থী—মানিক মিয়া (শাহরিক চৌধুরী), আব্দুর রহমান, মাহাদী হাসান পান্থ ও মেহেদী হাসান নাঈম—এর ব্যক্তিগত ছবি, আন্দোলনের ছবি, ব্যবহার্য সামগ্রীসহ নানা স্মৃতি প্রদর্শন করা হচ্ছে।

প্রদর্শনীর অন্যতম সংগঠক মুন্নি আক্তার প্রত্যাশা জানান, আমরা শহীদদের স্মৃতি জাগ্রত রাখতে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে তাদের সংগ্রামী চেতনাকে জীবন্ত রাখতে চাই। ২৪-এর অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। 

তবে সেই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং শহীদদের যথাযথ সম্মান নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। আমরা তোলারাম কলেজকে একটি গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাসে রূপান্তরিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

অপর সংগঠক রাইসা ইসলাম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও শহীদদের পরিবারের পুনর্বাসন কিংবা অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।

এমনকি এখনো আহতদের যথাযথ চিকিৎসাও নিশ্চিত হয়নি। শহীদ মানিকের বাবা তার ছেলের হত্যা মামলার বিচার চেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আর শহীদ নাঈমের পরিবারের খোঁজ নেওয়ার মতো কেউ নেই। 

শহীদ আব্দুর রহমানের কাগজপত্র জটিলতার কারণে তার ক্ষতিপূরণ আটকে রয়েছে। আমরা এই অব্যবস্থাপনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং শহীদদের প্রতি যথাযথ সম্মান নিশ্চিতের জন্য আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ