শিশু সাফওয়ান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা মো. ইমরান সিকদার বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা তিনজনসহ মোট ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গত শুক্রবার বিকেলে গৌরনদী মডেল থানায় মামলা করা হয়। এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রাজধানী ঢাকা থেকে গৌরনদীর মধ্য হোসনাবাদ গ্রামে দাদার বাড়িতে বেড়াতে এসে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নিখোঁজ ও হত্যাকাণ্ডর শিকার হয় সাফওয়ান (৫)। শুক্রবার সকালে গ্রামের রাস্তার পাশের ঢালু জমির ভেতরে পড়ে ছিল শিশুটির লাশ। এদিন বাদ আছর জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়।
জানাজায় অংশ নেওয়া বিক্ষুব্ধ জনতা ও গ্রামবাসী মিলে সাফওয়ান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামির বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো.

ইউনুস মিয়া জানান, সাফওয়ান হত্যা মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামিরা হলেন প্রতিবেশী রোমান চৌকিদার ওরফে চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী আঁখি বেগম, বোন রুবিনা আক্তার, রোমানের বাবা লোকমান চৌকিদার ওরফে চৌধুরী, সরিকল ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক চৌকিদার ওরফে চৌধুরী ও শাহাদাত প্যাদা। তাদের মধ্যে রোমান চৌকিদার, মোজাম্মেল হক, রুবিনা আক্তার ও আঁখি বেগম গ্রেপ্তার হয়েছেন। বরিশাল আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাদের জেলহাজতে পাঠান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, জমিজমা নিয়ে পুরোনো বিরোধের জেরে প্রতিবেশী লোকমান চৌকিদার, মোজাম্মেল হক চৌকিদার, তাদের স্বজন ও সহযোগীরা মিলে শিশুটিকে অপহরণের পর নির্মমভাবে হত্যা করে।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, শুক্রবার বাদ আছর জানাজা শেষে সাফওয়ানের লাশ দাফন করা হয়। এ সময় জানাজায় অংশগ্রহণকারী বিক্ষুব্ধ জনতা ও গ্রামবাসী মিলে মামলার আসামি লোকমান হোসেন চৌকিদার এবং সরিকল ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মোজাম্মেল হোসেন চৌকিদারের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বাড়ি দুটির সব আসবাব ও দরজা-জানালা পুড়ে যায়। আগেই পরিবার দুটির সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। ফলে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। 
গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মো. বিপুল হোসেন জানান, তারা আগুন নেভাতে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা তাতে বাধা দেয়। পরে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে পাকা ভবনের বাড়ি দুটির সবকিছু পুড়ে যায়। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’

এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’

এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ