দিল্লির একটি আদালত ভারতের বিখ্যাত শিল্পী মকবুল ফিদা হুসেনের দুটি বিতর্কিত চিত্রকর্ম জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, চিত্রকর্মগুলো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। সোমবার পাতিয়ালা হাউস কোর্ট পুলিশকে চিত্রকর্মগুলো জব্দ করার অনুমতি দেন। খবর বিবিসির

অভিযোগে বলা হয়েছে, দিল্লি আর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শিত ওই চিত্রকর্ম দুটি হিন্দু দেব-দেবীকে নগ্ন রূপে চিত্রিত করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। দিল্লি আর্ট গ্যালারিতে ২৬ অক্টোবর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ শিল্পীর ১০০টিরও বেশি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছিল। এক বিবৃতিতে গ্যালারিটি জানায়, তারা আইনি প্রক্রিয়ার পক্ষ নয় এবং বিষয়টি নিয়ে আইনি পরামর্শ নিচ্ছে।

আইনজীবী অমিতা সচদেবা ৪ ডিসেম্বর চিত্রকর্ম দুটি গ্যালারিতে দেখে ছবি তোলেন এবং পূর্ববর্তী অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে ৯ ডিসেম্বর দিল্লি পুলিশের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর ১০ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে গ্যালারিতে গেলে দেখতে পান চিত্রকর্ম দুটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। গ্যালারি কর্মকর্তারা তখন দাবি করেন, তারা কখনোই চিত্রকর্মগুলো প্রদর্শন করেননি।

অমিতা সচদেবা আদালতে সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের আবেদন করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে জানায়, প্রদর্শনীটি ব্যক্তিগত স্থানে আয়োজন করা হয়েছিল এবং এটি শুধু শিল্পীর মৌলিক কাজ প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ছিল।

মকবুল ফিদা হুসেনকে ‘ভারতের পিকাসো’ বলা হতো। তাঁর চিত্রকর্ম বহুবার বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ২০০৬ সালে ‘মাদার ইন্ডিয়া’ চিত্রকর্মের জন্য তাঁকে অশ্লীলতার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। ওই চিত্রকর্মে এক নগ্ন নারীকে ভারতের মানচিত্রের রূপে উপস্থাপন করা হয়েছিল। বিতর্কের মুখে হুসেন দেশ ছেড়ে লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করেন এবং ২০১১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

২০০৮ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হুসেনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। আদালত বলেন, হুসেনের চিত্রকর্ম ভারতীয় প্রতীক ও ইতিহাসে প্রচলিত নগ্নতার ধারণার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। বহু শিল্পী ও সমালোচক মনে করেন, ভারতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। অক্টোবরে বোম্বে হাইকোর্ট এফএন সাউজা ও আকবর পাদামসির শিল্পকর্ম ‘অশ্লীল’ বলে কাস্টমস বিভাগের জব্দের আদেশ প্রত্যাখ্যান করেন। আদালত রায় দেন, প্রতিটি নগ্ন চিত্রকর্ম অশ্লীল নয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র চ ত রকর ম প রদর শ ন কর ন

এছাড়াও পড়ুন:

নেশা ও জুয়ায় টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় নেশা ও জুয়া খেলার টাকা না পেয়ে রুকসানা বেগম (৪০) নামে এক নারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্বামী শাহ আলম শেখের (৫০) বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীকে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (১৪ জুন) রাতে উপজেলার লখাইরচর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত শাহ আলম একই গ্রামের ইসমাইল শেখের ছেলে।

রবিবার (১৫ জুন) রুকসানা বেগম বলেন, “২৫ বছর আগে শাহ আলমের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। আমাদের দুইটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পরে থেকেই আমাকে আমার স্বামী নির্যাতন করেন। তিনি প্রতিনিয়ত জুয়ার আসরে বসেন এবং নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়িতে ফেরেন।”

আরো পড়ুন:

দৃষ্টিহীন বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

খুলনায় আ.লীগ নেতাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ 

তিনি বলেন, “গতকাল শনিবার রাতে তিনি আমার কাছে জুয়া খেলা ও নেশা করার টাকা চান। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করায় মারধর শুরু করেন। বাধা দিতে এগিয়ে আসলে ছেলে সিয়াম আহম্মেদ (১২) ও মেয়ে খাদিজা আক্তার সুচনাকেও (২২) মারধর করেন আমার স্বামী।”

রুকসানা বেগম বলেন, “ঘটনার পর আমাকে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আমি আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে শাহ আলম শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মুকসুদপুর থানার ওসি মো. মোস্তফা কামাল বলেন, “এখন পযর্ন্ত থানায় কোনো আভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ