নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের দুই নেতা নিহত মানিক সাহা ও চয়ন মল্লিকের স্মৃতিস্তম্ভ ও ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ভোরে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের শহীদ মিনারের পাশে এবং ভিক্টোরিয়া কলেজের পূর্ব পাশে স্থাপিত এ দুটি স্থাপনা ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ২৫-৩০ জন শাবল ও হাতুড়ি দিয়ে মানিক সাহার স্মৃতিস্তম্ভ এবং কলেজ সীমানার পাশে চয়ন মল্লিকের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়।
ঘটনা সম্পর্কে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের নৈশপ্রহরী মিরাজুল ইসলাম বলেন, ভোর ৬টার দিকে প্রায় ২০টি মোটরসাইকেলে ৩০ জন আসে। তারা হাতুড়ি দিয়ে মানিক সাহার স্মৃতিস্তম্ভ এবং কলেজ সীমানার পাশে চয়ন মল্লিকের ম্যুরাল ভাঙচুর করে। তাদের মাথায় হেলমেট ছিল। তিনি সামনে এগিয়ে গেলে তারা তাঁকে ভয়ভীতি দেখায়। তখন তিনি চলে আসেন।
তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা মানিক সাহা ১৯৯০ সালের ২৯ নভেম্বর ছাত্রলীগের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের এক সংঘর্ষে মৃত্যুবরণ করেন এবং ছাত্রলীগ নেতা চয়ন মল্লিক ১৯৯২ সালের ১৬ অক্টোবর ছাত্রদলের হাতে খুন হন। এ দুটি ঘটনায় হত্যা মামলা হলেও কেউ সাজাপ্রাপ্ত হননি। নড়াইলে ১৯৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এই দুই ছাত্রনেতা প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখেন।
স্মৃতিস্তম্ভ ও ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন নিহত মানিক-চয়ন স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন এবং মানিক সাহার ভাই সোনা সাহা।
ফরহাদ হোসেন বলেন, মানিক সাহা ও চয়ন মল্লিক নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। তাদের ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শাহ আলম বলেন, এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ এবং অপরাধ। যারা এ কাজ করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি করেন তিনি।
জানতে চাইলে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো.

শহীদ লতিফ সমকালকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার নলেজে নেই। কেউ আমাকে জানায়নি। তবে খোঁজখবর নিচ্ছি।’
এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ওসি মো. সাজেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি তাঁরও জানা নেই। তিনি খোঁজ নিচ্ছেন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের আলোচনা ও ঐকমত্যের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। দলটি বলেছে, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনগণ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পদক্ষেপ দেখতে চায়।

শুক্রবার জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তারা বলেন, এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক ও বিবৃতিতে আগামী বছরের পবিত্র রমজানের আগেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার পূর্বশর্ত হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের ঘোষিত প্রত্যয়ে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমানুষের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাঠামোগত মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচারের ব্যবস্থা। এই বিষয় দুটির দৃশ্যমান অগ্রগতিই কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনা করতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সমাজের শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের মতামত, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের আহ্বান জানায় জেএসডি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাগরিক সমাজ শাসকদের পক্ষে থাকে কেন?
  • আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • গণঅভ্যুত্থানে আহত সামিউলের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়
  • লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি