বেলাব উপজেলার চরউজিলাব বারৈচা বাসস্ট্যান্ড এলাকা। এখানেই বারৈচা বাজার। এর পাশেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দখল করে বসে সবজির হাট। কয়েক যুগ ধরে এভাবেই চলে আসছে সবজি বেচাকেনা। যে কারণে মহাসড়কে যানজট তৈরি হচ্ছে।
বারৈচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের সবজি ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় মহাসড়কে। রয়েছে সবজি বোঝাই বিভিন্ন যানবাহন। প্রথম দেখায় বোঝার উপায় নেই এটি মহাসড়ক নাকি সবজির বাজার। নরসিংদী জেলার মধ্যে বেশি সবজি উৎপাদিত হয় বেলাব ও রায়পুরা উপজেলায়। এই দুই উপজেলার কৃষিপণ্য বিক্রি হয় বারৈচা বাজারে। প্রতি সপ্তাহের সোম, বুধ ও শুক্রবার হাটের নির্ধারিত দিন। তবে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এ বাজারে শাকসবজি বিক্রি হয়। মহাসড়ক ঘেঁষে বাজারটি হওয়ায় পাইকারি ক্রেতাদের ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশি। সড়ক ও ফুটপাতে শত শত সবজি বোঝাই গাড়ি রাখার কারণে চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।
বারৈচা বাসস্ট্যান্ডের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওপর প্রায় ৫০০ মিটার এলাকাজুড়ে শাকসবজি নিয়ে বসেন কৃষকরা। পণ্য পরিবহনের সুবিধা থাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যানে করে তারা কৃষি পণ্য নিয়ে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকেন। ফলে প্রতিনিয়ত লেগে থাকে যানজট। কখনও কখনও প্রায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার মহাসড়কজুড়ে যানজট তৈরি হয়। ঘটছে দুর্ঘটনাও। মহাসড়ক ছাড়াও বারৈচা বাজার থেকে বেলাব উপজেলা সদরে প্রবেশ পথের প্রায় ২০০ মিটারজুড়ে বসে সবজির হাট। ফলে জরুরি প্রয়োজনে চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
বাজারে আসা ব্যবসায়ী জানান, প্রশাসনের পক্ষ স্থায়ী ব্যবস্থা না করলে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব না।
সবজি বিক্রি করতে আসা কৃষক লিয়াকত আলী বলেন, ‘কাঁচামাল বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে মহাসড়কের ওপরে বসি।’
সৈকত হোসেন নামে আরেক কৃষকের ভাষ্য, যদি বাজার কমিটি এবং সরকারের পক্ষ থেকে আলাদা কোনো জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া
হয় তাহলে আর কেউ শাকসবজি নিয়ে মহাসড়কে বসবে না।
গাড়িচালকরা জানান, বারৈচা বাসস্ট্যান্ডে কাঁচামাল বিক্রেতারা মহাসড়কের ওপর বসেন। যার কারণে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। অনেক সময় নষ্ট হয়। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে।
কলেজ শিক্ষার্থী ইয়াসিন খন্দকার বলেন, ‘সবজির বাজারের কারণে প্রতিদিন সড়কে যানজট লেগে থাকে। সড়ক ও ফুটপাত দখল করে
বসে থাকেন বিক্রেতারা। এ কারণে আমাদের হাঁটাচলায় সমস্যা হয়।’
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও বারৈচা বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম সম্রাটের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাঁচামালের বাজারের জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা নেই। যার কারণে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রির জন্য বাধ্য হয়ে মহাসড়কে বসেন। বাজারটি মহাসড়ক থেকে দূরে খোলা জমিতে স্থানান্তরের কার্যক্রম চলছে।’
বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিমের ভাষ্য, বারৈচা বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের ওপর সবজি বেচাকেনা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি কৃষকদের মহাসড়ক থেকে সরে যেতে বলা হচ্ছে।
মহাসড়কের পাশে একটি খোলা মাঠে সবজি বাজার স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে। তাহলে আর এই সমস্যা থাকবে না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সবজ র দ ম সমস য য নজট উপজ ল সবজ র
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক রাতের বৃষ্টিতে ৪৪৫৯ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতির মুখে
চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতভর বৃষ্টিতে পাকা-আধাপাকা ধান, ভুট্টা, শাকসবজির ক্ষেত ডুবে গেছে। এতে জেলায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমির আবাদি ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি অফিস।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, জেলার শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে ১৯১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ১০ বছরে একরাতে এমন বৃষ্টির রেকর্ড নেই।
আরো পড়ুন:
তেঁতুলিয়ায় ৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, মিলেছে শীতের আভাস
গাছ থেকে সাইনবোর্ড ও পেরেক তোলার অভিযান হিলি পৌরসভার
লঘুচাপের প্রভাবে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সারা দিন আকাশ মেঘলা ছিল। সন্ধ্যার পরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। রাত সাড়ে ৮টার পর জেলাজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত হতে থাকে।
জেলার বিদিরপুর এলাকার আমন ধান চাষি আমানউল্লাহ বলেন, ‘‘আমার দুই বিঘা জমির ধান পুরোপুরি ডুবে গেছে। কয়েক দিন পরে ধান কাটা শুরু হতো। শেষ মুহূর্তে দুর্যোগের কবলে পড়ে অধিকাংশ ধান শেষ হয়ে গেছে।’’ একই এলাকার আরেক চাষি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘‘আমরা কল্পনাও করিনি এই সময়ে এসে এত বৃষ্টি হবে।’’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী বলেন, ‘‘ভারী বৃষ্টিতে জেলায় ৪ হাজার ৪৫৯ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২ হাজার ২৩৫ হেক্টর রোপা আমন ধান, ৩৭ হেক্টর আলু, ৯১৭ হেক্টর সরিষা, ৩১৬ হেক্টর শাকসবজি, ২৪৪ হেক্টর পেঁয়াজ, ২৫০ হেক্টর মাসকলাই, ৬৮ হেক্টর ভূট্টা, ১৩ হেক্টর স্ট্রবেরি এবং ৩৭৯ হেক্টর রসুন রয়েছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে পাকা ধান হেলে পড়েছে, সেগুলো কিছুটা ক্ষতি হবে। এর পাশাপাশি শাকসবজির কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।’’
তবে জমি থেকে পানি দ্রুত নেমে গেলে এবং আর বৃষ্টি না হলে ফসলের বেশি ক্ষতি হবে না বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/শিয়াম/বকুল