বরিশালের গৌরনদী এবং উজিরপুর উপজেলার পৃথক দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে এবং রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঘটনাগুলো ঘটে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, আজ সকালে গৌরনদীর মহিলাড়া বাজার থেকে কাঁচামাল কিনে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে বাড়ি যাচ্ছিলেন আগৈলঝাড়া উপজেলার চেঙ্গুটিয়া গ্রামের মৃত কেতাব আলী হাওলাদারের ছেলে মিন্টু হাওলাদার। ভ্যানটি আগৈলঝাড়ার চাঁদশী এলাকায় পৌঁছালে মিন্টু চলন্ত ভ্যান থেকে সড়কে পড়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
একই দিন সকালে গৌরনদীর বাটাজোর এলাকায় গোয়ালঘরে যাওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ফারুক সরদার (৬৫) নামে এক ব্যক্তি মারা যান। তিনি ইউনিয়নের নওয়াপাড়া গ্রামের মৃত আকৃব্বর সরদারের ছেলে। গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো.
আরো পড়ুন:
ধান ক্ষেতে বিএনপি নেতার মরদেহ, স্ট্রোকে মৃত্যু ধারণা পুলিশের
বিদ্যালয়ে আগুনে পুড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, ৮ শিক্ষক বরখাস্ত
এদিকে, উজিরপুরে ধানের বীজতলা রক্ষায় ইঁদুর তাড়ানোর ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছায়েদুল ফকির (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। ছায়েদুল উজিরপুর উপজেলার দক্ষিণ ধামুরা গ্রামের আলী ফকিরের ছেলে।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি আব্দুস সালাম জানান, ছায়েদুল ধান চাষের জন্য বাড়ির পাশের ক্ষেতে বীজতলা তৈরি করেছিলেন। ইঁদুর থেকে বীজতলা রক্ষায় তিনি ক্ষেতের চারপাশে বিদ্যুতের ফাঁদ পাতেন। গতকাল রাত ১২ টার দিকে সেই ফাঁদে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে বীজতলা দেখতে যান ছায়েদুল। এসময় অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
ঢাকা/পলাশ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ রনদ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।