পদ্মার পাড়ে ‘বাংলাদেশি এবং সুইডিশ বাবা’ আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু
Published: 3rd, February 2025 GMT
বাংলাদেশে সুইডেন দূতাবাসের উদ্যোগে এবং ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও ইউএন উইমেন এর সহযোগিতায় রাজশাহীর পদ্মার পাড় মুক্তমঞ্চে শুরু হয়েছে ‘বাংলাদেশি এবং সুইডিশ বাবা’ আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
এই প্রদর্শনী বাবাদের ক্রমবর্ধমান ভূমিকা উদযাপন, লিঙ্গ সমতাকে এগিয়ে নিতে এবং আরও ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনে 'সক্রিয় পিতৃত্বের রূপান্তরমূলক প্রভাবকে' তুলে ধরে।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) শুরু হওয়া এই প্রদর্শনীতে বাংলাদেশি বাবার ২৩টি আকর্ষণীয় ছবি সক্রিয়ভাবে প্যারেন্টিং এবং সন্তানের প্রতি যত্ন সম্পর্কে তুলে ধরে। বিখ্যাত সুইডিশ ফটোগ্রাফার জোহান বাভম্যানের ‘সুইডিশ ড্যাডস’ দ্বারা অনুপ্রাণিত এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্যোগটি শ্রোতাদের ঐতিহ্যগত লিঙ্গ ভূমিকা পুনর্বিবেচনা করতে এবং লিঙ্গ সমতাকে একটি ভাগ করা দায়িত্ব হিসাবে গ্রহণ করতে উত্সাহিত করে।
এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এবং বিভাগীয় কমিশনারসহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায় রাজশাহী প্রদর্শনীটি সম্ভব হয়েছে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দর্শনার্থীরা এই প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারবেন। ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনে বাবারা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, সে সম্পর্কে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন।
গবেষণা ধারাবাহিকভাবে দেখায়, যখন বাবারা যত্নশীলভাবে সক্রিয় থাকে, তখন লিঙ্গ ভূমিকার আশেপাশে সামাজিক নিয়মগুলো পরিবর্তন হতে শুরু করে। বাংলাদেশে ঐতিহ্যগত প্রত্যাশাগুলো প্রায়শই নারীদের উপর অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে যত্ন নেওয়ার বোঝা চাপিয়ে দেয়।
বাবাদের যত্ন নেওয়াকে উত্সাহিত করার মাধ্যমে এই প্রদর্শনী লিঙ্গ-সমতাপূর্ণ অভিভাবকত্বের বিস্তৃত সামাজিক সুবিধাগুলিকে তুলে ধরে। পুরুষরা যখন যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করে, তখন নারীরা কর্মশক্তিতে প্রবেশ এবং উন্নতির জন্য আরও ভালো অবস্থানে থাকে। এই পরিবর্তন শুধুমাত্র পরিবারকে উপকৃত করে না বরং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়নেও অবদান রাখে।
অনলাইনে অনুষ্ঠিত মাসব্যাপী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ১০০টি ছবির জমা থেকে মোট ২৩ জন বাবাকে নির্বাচিত করা হয়। জুরি বোর্ডে রয়েছেন বাংলাদেশে সুইডিশ রাষ্ট্রদূত এইচ.
ঢাকা/হাসান/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘অরেঞ্জ বন্ড অন্তর্ভুক্তিমূলক পুঁজিবাজার তৈরির সুযোগ দিচ্ছে’
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেছেন, “অরেঞ্জ বন্ড অন্তর্ভুক্তিমূলক পুঁজিবাজার তৈরির সুযোগ করে দিচ্ছে, যা দেশের নারীদের প্রান্তিক ও পরনির্ভরশীল অবস্থান থেকে উদ্যোক্তা কিংবা নেতৃত্বের অবস্থানে উন্নীত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।”
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে নারীর ক্ষমতায়নে অরেঞ্জ বন্ডের উদ্যোগ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং কর্মশালার সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
যমুনা অয়েলের ৯ মাসে মুনাফা বেড়েছে ৩৭.৭৮ শতাংশ
সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, “নারীর ক্ষমতায়ন কেবল একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা নয়-এটি একটি অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা। বর্তমানে নারীরা দেশের শ্রমশক্তির প্রায় ৪১ শতাংশ হলেও, মাত্র ৬ শতাংশ নারীর আনুষ্ঠানিক অর্থায়নের সুযোগ রয়েছে। নারী ক্ষমতায়নের জন্য নারী-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগগুলিতে অর্থায়ন নিশ্চিতকরণ ও বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অরেঞ্জ বন্ডকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ক্ষুদ্রঋণের জনক ও নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের পথিকৃৎ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব' বা শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নেট কার্বন নির্গমন বিষয়ের যে ভিশন তার ক্ষেত্রে সেতু হিসেবে কাজ করতে পারে অরেঞ্জ বন্ড।
বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখের সভাপতিত্বে কর্মশালাটির সূচনা হয়। বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত উক্ত কর্মশালায় বিএসইসির কর্মকর্তা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, ইউএনডিপি, আইএফসি বাংলাদেশ ও পুঁজিবাজারের ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠানসমূহসহ বন্ড বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
কর্মশালায় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। উক্ত প্রবন্ধে দেশের টেকসই বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের জন্য বিএসইসির গৃহীত উদ্যোগসমূহ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, ইউএনডিপির সাথে বিএসইসির সমঝোতা স্মারক, দেশে অরেঞ্জ বন্ডের সম্ভাবনা সম্পন্ন খাতসমূহ, অরেঞ্জ বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্কসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
এছাড়া কর্মশালায় ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও তানজিম আলমগীরের সঞ্চালনায় একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্যানেল আলোচনায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম সোহেল, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব কামরুল হক মারুফ, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, ইউএনডিপি বাংলাদেশের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ড. মালিহা মোজাম্মেল, আইএফসি বাংলাদেশের ইএসজি অফিসার মিজ লোপা রহমান অংশ নেন।
প্যানেল আলোচনায় দেশের বন্ড মার্কেটের নানাদিক নিয়ে আলোকপাত করা হয়। এছাড়া কর্মশালায় একটি উন্মুক্ত আলোচনা সভা হয়। সভায় দেশের বন্ড মার্কেট এবং বিশেষত অরেঞ্জ বন্ড এর সুযোগ, সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণকারীরা প্রশ্ন ও পরামর্শ প্রদান করেন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট এক্সচেঞ্জের (আইআইএক্স) প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি আমেরিকান উদ্যোক্তা অধ্যাপক দুরীন শাহনাজের পক্ষ হতে ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট এক্সচেঞ্জের পরিচালক দেবাশীষ রায় ও লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সিইও বিজন ইসলাম কর্মশালায় অরেঞ্জ বন্ড ও বন্ড মার্কেটের বিভিন্ন প্রসঙ্গে আলোচনা করেন।
বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ উক্ত কর্মশালায় সমাপনী বক্তব্যে বলেন, “নারীরা দেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক এবং তাদের দ্বারাই দেশের অর্ধেক অর্থনীতি ও কর্মশক্তি গঠিত। তাই নারীদের সাথে নিয়েই উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগোতে হবে এবং এক্ষেত্রে অরেঞ্জ বন্ড বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এবং এখানে ইক্যুইটি ভিত্তিক পণ্যের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন বৈচিত্রপূর্ণ পণ্য থাকা উচিত যা বাজারের বৈচিত্রায়ন করবে এবং বাজারকে আরো টেকসই রূপ দিবে। এক্ষেত্রে অরেঞ্জ বন্ড কার্যকরি ভূমিকা রাখতে পারে।”
ঢাকা/এনটি/এসবি