বিতর্কিত পেনাল্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি দুই মাদ্রিদের
Published: 9th, February 2025 GMT
ইউরোপ মিডিয়া এখন গরম রেফারিংয়ের বিরুদ্ধে রিয়াল মাদ্রিদের আনা অভিযোগে। সেই ঝামেলা না মিটতেই এবার মাদ্রিদ ডার্বিতে বিতর্কিত এক পেনাল্টিতে গোল হজম করতে হলো কার্লো আনচেলোত্তির দলকে। ম্যাচ শেষে এই ইতালিয়ান ম্যানেজার তো বলেই ফেললেন, “ফুটবলের মানুষরা এমন পেনাল্টি বোঝে না”। শেষ পর্যন্ত অবশ্য একটা গোল শোধ করে রিয়াল। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের মধ্যকার লা লিগার ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। লিগের পয়েন্ট টেবিলের অবস্থার কারণে লাভটা হলো এই ম্যাচে দর্শকের ভূমিকায় থাকা বার্সেলোনার।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এদিন খেলা শুরুর আগে চওড়া হাসিমুখে মাঠে প্রবেশ করেন সদ্যই পেশাদার ফুটবলের বুটজোড়া তুলে রাখা মার্সেলো। রিয়ালের অনেক সাফল্যের নায়ক, ক্লাবের একসময়ের রেকর্ড শিরোপা জয়ী এই লেফটব্যাক। ৩৬ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়াকে বিশেষ সম্মান জানানো হয়, তার হাতে ক্লাবের বিশেষ একটি জার্সি তুলে দেন লস ব্ল্যাঙ্কসদের আরেক গ্রেট লুকা মদ্রিচ।
দুই দলই শুরুর দিকে ঢিমেতালে খেলতে থাকে। ম্যাচের ৩১ মিনিটে বক্সের ভেতর অরলিয়ে চুয়ামেনি পা গিয়ে পড়ে অ্যাতলেটিকোর স্যামুয়েল লিনোর পায়ে, যদিও তার আগেই বল বেরিয়ে যায় দুজনের মাঝ দিয়ে। অনেকক্ষণ সময় নিয়ে ভিএআর চেক করে পেনাল্টির সিধান্ত দেন রেফারি। তখন ডাগআউটে দাঁড়িয়ে থাকা রিয়াল বস কার্লো দুহাত দিয়ে মুখ ঢাকেন অবিশ্বাসে। এমনকি ধারাভাষ্যকারদেরও দাবি এটা কোনোভাবেই পেনাল্টি নয়।
আরো পড়ুন:
ঘরের ছেলে তোরেসের হ্যাটট্রিকে উড়ে গেল ভ্যালেন্সিয়া
ভিনিসিয়ুসকে পেতে আল আহলির চোখ ছানাবড়া হওয়ার মতো প্রস্তাব
হুলিয়ান আলভারেসের সোজাসুজি স্পট কিকে এগিয়ে যায় অতিথি দলটি। বিরতির পর পরই সমতায় ফেরে রিয়াল। ডান প্রান্ত দিয়ে দুইজন ফুটবলারকে কাটিয়ে দারুণ ক্রস করেন রদ্রিগো। বক্সের ভেতর থেকে জুড বেলিংহ্যাম প্রথমে শট নিয়েছিলেন, সেটা ফিরে এলে ফিরতি শটে বল জালে জড়ান ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে। এরপরই অ্যাতলেটিকো বস দিয়াগো সিমিওনি তার ট্রেডমার্ক ‘বাস পার্কিং’ ডিফেন্সিভ মুডে চলে গেলে গোল পায়নি কোন দলই।
তবে এই ড্রয়ের পরও লা লিগার টেবিলে ২৩ ম্যাচে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রইল রিয়াল। সমান ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে তাদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেটিকো। অন্যদিকে এই ম্যাচের ফলে সবচেয়ে লাভবান নার্সা এক ম্যাচ কম খেলে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে।
গত সপ্তাহে রিয়াল যখন এস্পানিওলের বিপক্ষে পরাজয়ের পর রেফারির ব্যাপারে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেছিল, তখন অ্যাতলেটিকো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। তাদের অভিযোগ ছিল যে- রিয়াল রেফারিদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। তাই মাদ্রিদ ডার্বি শেষে যখন বিতর্কিত পেনাল্টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় তখন ক্ষুদ্ধ আনচেলোত্তি প্রথমে বলেছিলেন, “আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিব না।”
“আমরা মনে করি আমরা আরও কিছু পাওয়ার ছিল। ম্যাচটি আমরা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলাম, আমরা গোল করেছি, বক্সে প্রবেশ করেছি, আমরা দ্বিতীয়ার্ধে খুব ভালো খেলেছি।”- যোগ করেন আনচেলত্তি।
অন্যদিকে বিতর্কিত পেনাল্টির কল্যাণে জয়ী অ্যাতলেটিকো বস সিমিওনি রেফারির পক্ষ নিবেন সেটাই স্বাভাবিক, “আমি মনে করি রেফারি তার সিদ্ধান্তে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প য ন শ ফ টবল আতল ত ক ম দ র দ
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।