প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনেক সময় এমন একজন রাজনীতিক বলা হয়, যিনি সাধারণ নিয়ম বা প্রচলিত ধারার বাইরে সবকিছু ভেঙে দেন বা এলোমেলো করে ফেলেন (মানে নিয়মনীতি মানেন না)। আর এখন তিনি আক্ষরিক অর্থেই হোয়াইট হাউসের ভেতর ভাঙাগড়া বা সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন। নতুন বলরুম তৈরি করতে তাঁর নির্দেশে এ স্থাপনার একাংশ ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইংয়ের একটি অংশ ভাঙা শুরু হয়েছে। সাবেক আবাসন ব্যবসায়ী ট্রাম্প এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ২৫ কোটি ডলার ব্যয়ে নতুন বলরুমের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে গেছে।

এএফপির স্থানীয় সাংবাদিকেরা দেখেছেন, একটি খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) ইস্ট উইংয়ের সামনের দিকটা ভেঙে দিয়েছে। সেখানে ভাঙা ইটপাথর আর স্টিলের তারের স্তূপ পড়ে আছে।

আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণে নতুন, বিশাল ও সুন্দর বলরুমের নির্মাণকাজের ভিত্তি প্রশস্ত স্থাপন করা হয়েছে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

গতকাল হোয়াইট হাউসে কলেজ বেসবল খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা দেওয়ার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘সরাসরি অন্য পাশে অনেক নির্মাণকাজ চলছে। মাঝেমধ্যে আপনারা এর শব্দ শুনতে পাবেন।’

এরপর ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে বলরুমের নির্মাণকাজ শুরুর ঘোষণা দেন। এক শতকের বেশি সময়ের মধ্যে হোয়াইট হাউসে এটাই সবচেয়ে বড় সংযোজন।

আরও পড়ুনব্রিটিশরা জ্বালিয়ে দেওয়ার পরই কি আসলে নাম হয়েছে ‘হোয়াইট হাউস’১৩ অক্টোবর ২০২৫

নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণে নতুন, বিশাল ও সুন্দর বলরুমের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।’

নতুন বলরুম নির্মাণের প্রক্রিয়ায় পুরো ইস্ট উইং পুরোপুরি আধুনিকায়ন করা হচ্ছে এবং এটি আগের চেয়ে আরও সুন্দর হবে বলেও পোস্টে লেখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ঐতিহ্যগতভাবে ইস্ট উইং যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডির কার্যালয়। প্রেসিডেন্ট কাজ করেন ওয়েস্ট উইংয়ে। তাঁরা এক্সিকিউটিভ ম্যানশনে বসবাস করেন।

ট্রাম্প বলেছেন, নতুন ৯০ হাজার বর্গফুটের এ বলরুমের ধারণক্ষমতা এক হাজার জন। বড় ধরনের রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ ও অন্যান্য অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য এটি দরকার, যা এখন তাঁবুতে করতে হয়।

আরও পড়ুনহোয়াইট হাউসে ‘ভূত’ দেখার দাবি কতটা সত্য১৩ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুন হোয়াইট হাউসে ফিরে যে ৭ কাজ করতে চান ট্রাম্প০৬ নভেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফাউন্টেনপেন, কালি ও দোয়াতের প্রদর্শনীতে ইতিহাসের রেখাপাত

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব বসু ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সাহিত্যিকদের নামের সঙ্গে মিশে আছে ফাউন্টেনপেন বা ঝরনাকলমের নাম। ফাউন্টেনপেনে লিখেছেন আরও অনেক বিখ্যাত মানুষ। দোয়াত ও কালি দিয়ে লেখা হতো ফাউন্টেনপেনে। কিন্তু বলপয়েন্টের প্রচলনের পর ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে ফাউন্টেনপেন।

দেশের একদল সংগ্রাহক ফাউন্টেনপেনের ইতিহাসকে জাগরূক রাখতে চান। সেই চাওয়া থেকে তাঁরা হারিয়ে যাওয়া ফাউন্টেনপেন, দোয়াত ও কালির প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে। এই আয়োজনে এসে অনেকেই ফিরে গেলেন এমন এক সময়ে, যা এখনকার আলোচনা থেকে হারিয়ে গেছে।

১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফাউন্টেনপেন আবিষ্কার হয়েছিল। এরপর ধীরে ধীরে অন্যান্য দেশেও এর বহুল প্রসার ঘটতে থাকে। বাংলাদেশে ফাউন্টেনপেন এসেছিল ইংরেজদের হাত ধরে। এই কলমকে বাংলায় ‘ঝরনাকলম’ নামে নামকরণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নানা ধরন ও দামের ফাউন্টেনপেন বাজারে এসেছিল। পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান ও পাইলটের ফাউন্টেনপেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এসব কলমে ছিল রকমারি ও টেকসই নিব ও হ্যান্ডেল। শৌখিন ও ধনী ব্যক্তিদের জন্য হীরা বসানো হতো কোনো কোনো কলমে। কখনো সোনা, প্লাটিনাম ইত্যাদি দিয়ে মুড়ে দেওয়া হতো ফাউন্টেনপেনকে।

বাংলাদেশ পেন ক্লাবের আয়োজনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে দুই দিনব্যাপী ‘ঢাকা পেন শো’র শেষ দিন ছিল শনিবার। প্রদর্শনীর পাশাপাশি এদিন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ক্যালিগ্রাফি বা অক্ষরশিল্প নিয়ে একটি কর্মশালারও আয়োজন করেছিল পেন ক্লাব।

প্রদর্শনীতে নানা রঙের ফাউন্টেনপেন বা ঝরনাকলম। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ