উত্তর কোরিয়ার সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান কিম ইয়ং নাম মারা গেছেন
Published: 4th, November 2025 GMT
উত্তর কোরিয়ার সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান ও কিম পরিবারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কিম ইয়ং নাম মারা গেছেন। ক্যানসারজনিত জটিলতায় একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে সোমবার (৩ নভেম্বর) ৯৭ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
ট্রাম্পের দক্ষিণ কোরিয়া সফরের আগে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা
জাপানে ভাল্লুকের হামলা মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর সহায়তা চাইলেন গভর্নর
কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, ৯৭ বছর বয়সি এই রাজনীতিক ক্যানসার জটিলতায় একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে সোমবার মারা গেছেন।
মঙ্গলবার সকালে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন তার মরদেহের কাছে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। তার শেষকৃত্য বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে।
কিম ইয়ং নাম উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং, তার ছেলে কিম জং ইল এবং তার নাতি কিম জং উনের শাসনামলে বিভিন্ন কূটনৈতিক ভূমিকা পালন করেছিলেন। নামের মিল থাকলেও তিনি শাসক পরিবারের সদস্য ছিলেন না।
১৯৪৮ সালে উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তিনি শাসক পরিবারের প্রতি অবিচল আনুগত্য প্রদর্শন করেছেন।কিম পরিবারের প্রতি অটল আনুগত্যের কারণেই কিম ইয়ং নাম দুই দশক ধরে উত্তর কোরিয়ার নামমাত্র রাষ্ট্রপ্রধানের পদে ছিলেন।
তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল উত্তর কোরিয়ার পার্লমেন্ট সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেম্বলির সভাপতি ছিলেন। এই পদটি দেশটির আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রপ্রধানের মর্যাদাসম্পন্ন।
শক্তিশালী বক্তা ও প্রচারণাধর্মী ভাষণের জন্য পরিচিত ছিলেন কিম ইয়ং নাম। তিনি প্রায়ই রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে বিদেশি প্রতিনিধিদের অভ্যর্থনা জানাতে দেখা যেতেন।
কিম ইয়ং নাম পিয়ংইয়ং বিশ্ববিদ্যালয় ও মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। ২০১৯ সালে বয়সজনিত কারণে তাকে সরিয়ে দিয়ে চো রিয়ং হে-কে পার্লামেন্টের নতুন প্রধান করা হয়।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জবি শিবিরের মেধাবীদের তালিকায় নেই ৩ বিভাগের শিক্ষার্থী
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মেধাবী শিক্ষার্থীদের ‘কবি মতিউর রহমান মল্লিক মেরিট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেছে শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। তবে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি সংস্কৃতি-সম্পর্কিত নাট্যকলা, সংগীত ও ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের কোনো শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত না করায় সমালোচনার মুখে পড়েছে সংগঠনটি।
জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ মাঠে ২০১৮–১৯ ও ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের প্রতি বিভাগের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের হাতে এই মেরিট অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এই তিন বিভাগের কোনো শিক্ষার্থীর নাম তালিকায় ছিল না।
আরো পড়ুন:
মালয়েশিয়ায় ‘হল অব ফেম অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন বাকৃবির সাবেক উপাচার্য
যবিপ্রবির শিক্ষার্থীর আন্তর্জাতিক স্বর্ণপদক অর্জন
নাট্যকলা বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মো. ইমাম হোসেন বলেন, “ছাত্রশিবির কাকে বৃত্তি দেবে, সেটা তাদের বিষয়। কিন্তু পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ থেকে কলা অনুষদের তিনটি বিভাগ বাদ দেওয়া নিন্দনীয়, এটা প্রকাশ্য বৈষম্য ও স্বল্পজ্ঞানের প্রমাণ। নাট্যকলা, সংগীত, ফিল্ম—এসব বিভাগও বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ। এগুলো বাদ দেওয়া সংস্কৃতিকে ছোট করে দেখার চেষ্টা।”
তিনি আরো বলেন, “যে কবি মতিউর রহমান মল্লিকের নামে পুরস্কার, তিনি নিজেই ছিলেন সংস্কৃতিমনা কবি ও গীতিকার। তার নামের সঙ্গে এমন বর্জন বেমানান।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংগীত বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “যদি সত্যিই মেধার ভিত্তিতে পুরস্কার দেওয়া হয়, তাহলে সেটা সব বিভাগের শিক্ষার্থীর প্রাপ্য। আমাদের বিভাগগুলোকে কেন বাদ দেওয়া হলো, জানতে চাই। আশা করি, শিক্ষক ও বিভাগীয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন।”
নাট্যকলা বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জেরিন চাকমা বলেন, “আমাদের আবর্তনের স্নাতক পরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি—এটা যুক্তিযুক্ত কারণ হতে পারে। তবে আয়োজকরা বিভাগগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি না, সেটাও প্রশ্ন। যদি যোগাযোগ না করে থাকে, তাহলে সিদ্ধান্তটা এককেন্দ্রিক মনে হয়। অথচ অন্য বিভাগগুলোর ক্ষেত্রে যোগাযোগ করা হলে সেটা উদারতার পরিচয় দিত। যদি বিশেষায়িত বিভাগগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়ে থাকে, তবে সেটা স্পষ্ট বৈষম্য। এর দায় সংগঠনটির ওপরই বর্তাবে।”
ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ১৫তম আবর্তনের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমি সর্বশেষ ৭ম সেমিস্টারের ফলাফলে প্রথম হয়েছিলাম। কিন্তু এই মেরিট অ্যাওয়ার্ডের বিষয়ে জানতে পারি অনুষ্ঠান হওয়ার পর ব্যানার দেখে। আমাদের বিভাগের কারো সঙ্গেই যোগাযোগ করা হয়নি। বিষয়টি জানতে পেরে আক্ষেপ হয়েছে।”
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম আরিফ বলেন, “আমরা খুব স্বল্প সময়ে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছি। কন্ট্রোলারের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের অনেকগুলোই ভুল ছিল। তবুও আমরা রেজিস্ট্রেশন চালু রেখে বিভাগগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি।”
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন, “দুই-একটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি, এজন্য আমরা দুঃখিত। তবে যারা রেজিস্ট্রেশন করেছে, সবাইকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এখনো যেসব যোগ্য শিক্ষার্থী পুরস্কার পাননি, তারা রেজিস্ট্রেশন করলে আমরা তাদেরও সম্মাননা প্রদান করব।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী