গাংনীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০
Published: 4th, November 2025 GMT
মেহেরপুরের গাংনীতে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১১টায় গাংনী বাজারে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় বিএনপির উপজেলা কার্যালয়ে হামলা এবং মোটরসাইকেল ও চেয়ারসহ বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর করা হয়।
আরো পড়ুন:
ভাঙ্গায় চার গ্রামের সংঘর্ষে আহত ৬০
ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০
গতকাল সোমবার মেহেরপুর-২ আসনে আমজাদ হোসেনকে বিএনপি মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর জের ধরেই আজ সংঘর্ষ হয়।
মেহেরপুর-২ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন অভিযোগ করেছেন, মনোনয়নবঞ্চিত মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থক ও গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়ালসহ তার ক্যাডার বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। হামলায় অন্তত বিএনপির ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
 
এ বিষয়ে জানতে জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বনী ইসরাইল জানিয়েছেন, দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর গাংনীতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে কাজ করছে পুলিশ।
আমজাদ হোসেনের সমর্থকরা অভিযোগ করেছেন, প্রথমে মিল্টনের সমর্থকরা একতরফাভাবে হামলা করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
অন্যদিকে, মিল্টনের সমর্থক গাংনী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দিন কালু অভিযোগ করেছেন, আমজাদ হোসেনের লোকজন তাদের অফিস ভাঙচুর করেছেন।
ঢাকা/ফারুক/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ আহত আমজ দ হ স ন ব এনপ র স ম ল টন র ন র সমর স ঘর ষ কর ছ ন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গোষ্ঠীস্বার্থে ড্যাপ সংশোধন হলে ঢাকার বাসযোগ্যতা আরও সংকটে পড়বে
রাজধানীর নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপ সংশোধনের প্রস্তাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে নাগরিক, পরিবেশবাদী ও পেশাজীবীদের মধ্যে। তাঁদের মতে, এই সংশোধন নগরের বাসযোগ্যতাকে আরও সংকটে ফেলবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংকীর্ণ রাস্তা ও দুর্বল নাগরিক পরিষেবার এলাকাগুলোতে আবাসিক ভবনের ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর বা ফার) বা আয়তন বাড়ানো সম্পূর্ণ জনবিরোধী ও মুনাফালোভী সিদ্ধান্ত। এই উদ্যোগ নগর পরিকল্পনার মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাঁদের প্রশ্ন, ঢাকার কত অংশের উন্নয়নকাজে আবাসন ব্যবসায়ীরা যুক্ত যে তারা গোটা নগরের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে?
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।
‘কার স্বার্থে আবারও পরিবর্তন ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ)’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন পরিবেশকর্মী, আইনজীবী, শিক্ষক, পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, প্রকৌশলী, অর্থনীতিবিদ, নাগরিক ও গবেষকরা।
এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান, বাংলাদেশ গাছরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব এবং লেখক ও সংবিধান সংস্কার কমিটির সদস্য ফিরোজ আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সহসভাপতি পরিকল্পনাবিদ সৈয়দ শাহরিয়ার আমীন, পরিবেশকর্মী ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য ইবনুল সাইদ রানা, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, নাগরিক অধিকারকর্মী মিজানুর রহমান ও ডব্লিউ ভি বি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গবেষণা বা প্রমাণভিত্তিক কোনো মূল্যায়ন ছাড়াই তড়িঘড়ি করে ড্যাপে পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যা নগরবাসীর জন্য এক বিপজ্জনক নজির। টেকসই উন্নয়নের পরিবর্তে সরকার স্বল্পমেয়াদি প্রবৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। ফলে ঢাকার জন্য এক অবশ্যম্ভাবী বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।
এতে আরও বলা হয়, ঢাকার অবকাঠামো ও নাগরিক পরিষেবা এখনই চরম চাপের মুখে। এমন অবস্থায় ভবনের উচ্চতা ও ফার বাড়ানো হলে ইউটিলিটি পরিষেবা, ট্রাফিক, জলাবদ্ধতা, আলো-বাতাসের প্রবাহ—সবকিছুই আরও বিপর্যস্ত হবে। সম্প্রতি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ও উদ্ধার ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা নগরের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা স্পষ্ট করে দিয়েছে। ভূমিকম্প বা বড় দুর্ঘটনায় এই অতিঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে পরিকল্পনাবিদেরা সতর্ক করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, নাগরিক সমাজের প্রস্তাব, ব্যবসায়িক স্বার্থে ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় পরিবর্তন বন্ধ করতে হবে। বরং সামাজিক, পরিবেশবাদী ও নাগরিক সংগঠনগুলোর প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। তাদের মতে, কৃষিজমি, জলাভূমি ও বন্যাপ্রবাহ এলাকায় সব উন্নয়ন নিষিদ্ধ করা, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং আবাসিক এলাকায় উচ্চ ভবনের সীমা নির্ধারণ জরুরি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে নগর পরিকল্পনার সিদ্ধান্তে যেসব গোষ্ঠীর সরাসরি ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে, তাদের সম্পৃক্ততা বন্ধ করা; শহরের ভারসাম্য ও শৃঙ্খলা রক্ষায় পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি ও নাগরিকদের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া; এবং ড্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জের নির্মোহ মূল্যায়ন, এলাকাভিত্তিক দ্রুত স্কুল, হাসপাতাল, পার্ক ও খেলার মাঠ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া।
পরিবেশকর্মী, শিক্ষক, আইনজীবী, স্থপতি, প্রকৌশলী, অর্থনীতিবিদ, সমাজকর্মী ও গবেষকগণ এক বিবৃতিতে বলেছেন, পরিকল্পনায় গোষ্ঠীস্বার্থের প্রভাব বন্ধ না করা গেলে ঢাকা শহর আরও অমানবিক ও বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।