এসএসসি পরীক্ষা ২০২৬: অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনা, পরীক্ষা কোন সিলেবাসে
Published: 21st, October 2025 GMT
২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অনিয়মিত ও জিপিএ উন্নয়ন পরীক্ষার্থীদের জন্য নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের এক থেকে চার বিষয়ে ফেল করা পরীক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে ২০২৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এ জন্য শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবর সাদা কাগজে আবেদন করতে হবে আগামী ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে।
আজ সোমবার (২০ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে রেজিস্ট্রেশনধারী শিক্ষার্থী যারা ২০২৪ ও ২০২৫ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি, স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে ২০২৬ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। তাদের কোনো অবস্থাতেই নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে গণ্য করা যাবে না। তারা ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে প্রণীত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
আরও পড়ুনজাপানে মেক্সট স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষা, জিপিএ ২.৩০ হলে আবেদন ১৯ অক্টোবর ২০২৫রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ
২০২১-২০২২ সালে রেজিস্ট্রেশনধারী শিক্ষার্থীরা যাদের রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ অথচ চতুর্থ বিষয় বাদে এখনো এক বিষয়ে অকৃতকার্য আছে, সেসব শিক্ষার্থী বিশেষ বিবেচনায় রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ কেবল এক বছরের জন্য নবায়ন করে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে অকৃতকার্য বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে। তাদের ২০২৫ সালের সিলেবাস (পুরাতন) অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
এসব পরীক্ষার্থীর আগে উত্তীর্ণ বিষয়/বিষয়গুলোর প্রাপ্ত জিপি সংরক্ষিত থাকবে। ২০২৬ সালের পরীক্ষায় তাদের অংশগ্রহণকৃত বিষয়ের জিপিএ আগে উত্তীর্ণ বিষয়/বিষয়গুলোর সংরক্ষিত জিপিএর সঙ্গে যোগ করে তাদের জিপিএ নির্ধারণ করা হবে।
আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৬: বাংলাসহ তিন বিষয়ের প্রশ্ন কাঠামোয় এল পরিবর্তন০৫ অক্টোবর ২০২৫২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে প্রণীত প্রশ্নপত্রে অনিয়মিত ও জিপিএ উন্নয়ন পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল র এসএসস ২০২৫ স ল র ২০২৬ স ল র ২০২৫
এছাড়াও পড়ুন:
উপজেলায় এইচএসসিতে একমাত্র জিপিএ-৫ পেলেন অনুরাগ
এসএসসি পাস করার পর বাড়ি থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন অনুরাগ চন্দ্র। তার মধ্যে ছিল সফল হওয়ার প্রবল আগ্রহ। সেটি তিনি প্রমাণ করেছেন এবারের এইচএসসি পরীক্ষায়। মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার চারটি কলেজের মধ্যে একমাত্র শিক্ষার্থী হিসেবে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
অনুরাগের এমন রেজাল্টে খুশি পরিবারের প্রতিটি সদস্য। তারা আশা করছেন, অধ্যাবসায় আর মনযোগ অনুরাগকে সফলতার শিখরে পৌঁছে দেবে।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ার সাইফুল মাশরুম চাষে সফল, দিয়েছেন ৫০০ জনকে প্রশিক্ষণ
শিশুদের ‘নোবেল’ পুরস্কারে মনোনীত কিশোরগঞ্জের মাহবুব
অনুরাগ রাজনগর উপজেলার রাজনগর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় এই কলেজ থেকে অংশগ্রহণ করেন ৪৮৬ জন শিক্ষার্থী। পাস করেছেন ১৯৪ জন। পাসের হার ৩৯.৯২ শতাংশ।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার চারটি কলেজের মোট এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন ৭৮১ জন। পাস করেছেন ২২৭ জন। পাসের হার ২৯.০৭ শতাংশ। অনুরাগই এবার এই উপজেলা থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া একমাত্র শিক্ষার্থী।
অনুরাগ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আমতৈইল ইউনিয়নের মাসকান্দি গ্রামের বাসিন্দা অভিকুমার চন্দ্রের ছেলে। তার মা সদর উপজেলার পরিবার কল্যাণ সহকারী।
অনুরাগ স্থানীয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। এসএসসি পাস করার পর তিনি রাজনগর সরকারি কলেজে পড়ালেখার সুযোগ পান।
সোমবার (২০ অক্টোবর) গ্রামের বাড়িতে গেলে কথা হয় অনুরাগের সঙ্গে। তিনি বলেন, “২০২৩ সালে এসএসসি পাস করি। এরপর ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই রাজনগর সরকারি কলেজে। বাড়ি থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে কলেজটির অবস্থান। আমি নিয়মিত কলেজে গিয়ে ক্লাস করতে পারিনি।”
তিনি বলেন, “আমি কলেজ শিক্ষকদের তেমন সহযোগিতা পাইনি। নিজ উদ্যোগে প্রাইভেট পড়ে এবং মা-বাবার উৎসাহ আমাকে রেজাল্ট ভালো করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।”
অনুরাগ বলেন, “সামনে মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। মেডিকেলে ভর্তি হতে পারবো এমনটি আশা করছি। একজন ভালো ডাক্তার হওয়া আমার স্বপ্ন।”
অনুরাগের বাবা অভি কুমার চন্দ্র বলেন, “অনুরাগ খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করছে। সে প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহার করেনি। লেখাপড়াতে তার আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। আমি তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেছি। যখন যা লাগে তার যোগান দিয়েছি। ছেলের অধ্যাবসায় আর কষ্টে এমন সফলতা এসেছে। আমি তার জন্য অনেক প্রার্থনা করি। অধ্যাবসায় আর মনযোগ তাকে সফলতার শিখরে পৌঁছে দেবে এমনটি আশা করছি।”
রাজনগর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ তামান্না বেগম বলেন, “সদ্য জাতীয়করণ হওয়ায় আমাদের কলেজে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, শিক্ষার্থীদের ভালো পাঠদান নিশ্চিতের। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে অনেক কিছু করতে পারিনি। অনুরাগ জিপিএ-৫ পেয়ে আমাদের কলেজের সম্মান রক্ষা করেছেন। শুধু তাই না, তিনি রাজনগর উপজেলার সম্মান রেখেছেন।”
রাজনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জুলফিকার আলম বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের দায়িত্ব আমাদের ওপর নয়। আমরা শুধু মনিটরিং করি। এর মূেল দায়িত্বে রয়েছেন ডিডি মহোদয়। এবার এই উপজেলার ফলাফল ভালো হয়নি।”