দক্ষিণ আফ্রিকার নিপীড়িত শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের নিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র
Published: 9th, February 2025 GMT
দক্ষিণ আফ্রিকার ‘নিপীড়িত কৃষকদের’ (শ্বেতাঙ্গ) যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। গতকাল শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এ তথ্য জানিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের পাস করা নতুন একটি আইনের জের ধরে দেশটিতে মার্কিন সহায়তা স্থগিতের পর কৃষকদের আশ্রয় দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প সরকারের দাবি, ওই আইনের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের জমি জব্দ করার সুযোগ তৈরি হবে। এ প্রসঙ্গে এক্সে ট্যামি ব্রুস লিখেছেন, শুধু জাতিগত কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার যেসব নিপীড়িত কৃষক এবং অন্য নিরপরাধ ভুক্তভোগীদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, তাঁরা যদি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে চান, তাহলে ওয়াশিংটন তাঁদের স্বাগত জানাবে।
এর আগে গত শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় মার্কিন সহায়তা স্থগিত করেছিলেন ট্রাম্প। ওই আদেশে তিনি বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন আইনের কারণে সংখ্যালঘু ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর আফ্রিকানদের কৃষিসম্পদ কোনো ক্ষতিপূরণ ছাড়াই জব্দ করতে পারবে দেশটির সরকার।
জোহানেসবার্গের দাবি, ট্রাম্প আইনটির ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন এই আইন পাস করা হয় গত মাসে। তাতে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকার যদি চায়, তাহলে ‘কোনো ক্ষতিপূরণ না দিয়েই’ জমি জব্দ করতে পারবে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় জমির মালিকানা একটি বিতর্কিত বিষয়। দেশটিতে বর্ণবাদের অবসানের তিন দশক পরও এখনো বেশির ভাগ কৃষিজমি শ্বেতাঙ্গদের মালিকানায় রয়েছে। জমির এই মালিকানাসংক্রান্ত বিষয়ে সংস্কারের জন্য সরকারের ওপর বড় চাপ রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।