দক্ষিণ আফ্রিকার ‘নিপীড়িত কৃষকদের’ (শ্বেতাঙ্গ) যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। গতকাল শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এ তথ্য জানিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের পাস করা নতুন একটি আইনের জের ধরে দেশটিতে মার্কিন সহায়তা স্থগিতের পর কৃষকদের আশ্রয় দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প সরকারের দাবি, ওই আইনের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের জমি জব্দ করার সুযোগ তৈরি হবে। এ প্রসঙ্গে এক্সে ট্যামি ব্রুস লিখেছেন, শুধু জাতিগত কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার যেসব নিপীড়িত কৃষক এবং অন্য নিরপরাধ ভুক্তভোগীদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, তাঁরা যদি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে চান, তাহলে ওয়াশিংটন তাঁদের স্বাগত জানাবে।

এর আগে গত শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় মার্কিন সহায়তা স্থগিত করেছিলেন ট্রাম্প। ওই আদেশে তিনি বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন আইনের কারণে সংখ্যালঘু ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর আফ্রিকানদের কৃষিসম্পদ কোনো ক্ষতিপূরণ ছাড়াই জব্দ করতে পারবে দেশটির সরকার।

জোহানেসবার্গের দাবি, ট্রাম্প আইনটির ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন এই আইন পাস করা হয় গত মাসে। তাতে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকার যদি চায়, তাহলে ‘কোনো ক্ষতিপূরণ না দিয়েই’ জমি জব্দ করতে পারবে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় জমির মালিকানা একটি বিতর্কিত বিষয়। দেশটিতে বর্ণবাদের অবসানের তিন দশক পরও এখনো বেশির ভাগ কৃষিজমি শ্বেতাঙ্গদের মালিকানায় রয়েছে। জমির এই মালিকানাসংক্রান্ত বিষয়ে সংস্কারের জন্য সরকারের ওপর বড় চাপ রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ষকদ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের

গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।

মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।

সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।

এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।

মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ