‘সুগার ফ্রি’ মানে কী

হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং অনুসারে, সুগার ফ্রি মানে ওই প্যাকেটে যে পণ্য আছে, সেখানে চিনির পরিমাণ দশমিক ৫ গ্রাম বা আধা গ্রামের চেয়ে কম। অর্থাৎ চিনি ব্যবহার করা হয়নি বললেই চলে। তবে অল্প পরিমাণে আর্টিফিশিয়াল সুইটনার, যেমন অ্যাসপার্টেম বা স্টেভিয়া ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু কিছু পণ্যে প্রাকৃতিকভাবেই চিনি থাকতে পারে। ফলে আপনি যখন সুগার ফ্রি কিছু খাবেন, তখন আপনাকে চিনির বাড়তি ক্যালরি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।

আরও পড়ুনএই ২ অভ্যাসেই বাড়তি চিনি খাওয়া কমবে ৮০ শতাংশ২৮ নভেম্বর ২০২৪‘নো অ্যাডেড সুগার’ মানে কী

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অনুসারে, কোনো পণ্যের গায়ে যখন লেখা থাকে ‘নো অ্যাডেড সুগার’, তখন এর মানে পণ্যটি তৈরি, প্রক্রিয়াজাত বা প্যাকেজিং করার সময় কোনো বাড়তি চিনি ব্যবহার করা হয়নি। এমনকি কোনো আর্টিফিশিয়াল সুইটনারও ব্যবহার করা হয়নি। তবে সেখানে প্রাকৃতিকভাবে চিনি থাকতে পারে। মনে করুন, একটা পিনাট বারের প্যাকেটের গায়ে লেখা ‘নো অ্যাডেড সুগার’। এর মানে কোনো বাড়তি চিনি ব্যবহার করা হয়নি বটে। তবে বাদাম বা কিশমিশের নিজস্ব ‘চিনি’র কারণে জিনিসটা খেতে মিষ্টি লাগতে পারে।

আরও পড়ুনকৃত্রিম চিনি কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?১৩ ডিসেম্বর ২০২৪কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর

আপনি যদি ডায়েটে থাকেন, তাহলেও সুগার ফ্রি বা নো অ্যাডেড সুগার—দুটিই খেতে পারবেন। তবে সুগার ফ্রি খাবার মাঝেমধ্যে খাওয়া ভালো। আপনি যদি নিয়মিত সুগার ফ্রি খাবার খান, তাহলে আপনার চিনির চাহিদা তৈরি হবে। ফলে তৈরি হবে বাড়তি চিনি খাওয়ার প্রবণতা। সেটা আপনার চিনিমুক্ত জীবনযাপনের ‘সাধনায়’ ব্যাঘাত ঘটাবে।

এ কারণেই একাধিক গবেষণা জানিয়েছে, সুগার ফ্রি আর নো অ্যাডেড সুগারের মধ্যে যদি আপনাকে কেবল একটা বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে নো অ্যাডেড সুগার বেছে নেওয়াই হবে জ্ঞানীর কাজ। অর্থাৎ এই দুইয়ের মধ্যে নো অ্যাডেড সুগারই তুলনামূলকভাবে ভালো বিকল্প।

সূত্র: এনডিটিভি

আরও পড়ুনচিনি খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার ১০টি উপকারিতা২০ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ