আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠকের পর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী বদলের কোনো প্রশ্ন নেই। দলে ভাঙনের আশঙ্কাও নেই। দিল্লিতে বিপর্যয় হলেও পাঞ্জাবে সরকার ও দল অটুট আছে। থাকবেও।

দিল্লি বিধানসভার ভোটের ফল প্রকাশের পরই পাঞ্জাব বিধানসভার পরিষদীয় দলের সদস্যদের বৈঠকে ডেকেছিলেন দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও আপের শীর্ষ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মঙ্গলবার ওই বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে মান ওই মন্তব্য করেন।

দিল্লির নির্বাচনী প্রচার চলাকালে পাঞ্জাবে আপ পরিবারে অসন্তোষের খবর শোনা গিয়েছিল। ফল প্রকাশের পর পাঞ্জাব কংগ্রেস নেতা প্রতাপ সিং বাজওয়া দাবি করেছিলেন, আপের ৩০ জন বিধায়ক আগে থেকেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আপে ভাঙনের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মানের ওপর কেজরিওয়াল প্রসন্ন নন। তাঁকে বদলানো হতে পারে। বাজওয়ার দাবি ছিল, মানও দল বদল করতে পারেন।

দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে কেজরিওয়ালের বৈঠকের পর এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মান বলেন, আপের বিধায়কদের দিকে না তাকিয়ে কংগ্রেস নেতাদের উচিত দিল্লিতে তাঁদের বিধায়কদের সংখ্যার হিসাব কষা। তিনি বলেন, ‘আমি দল ছাড়ব কি না, সেই জল্পনাতেও তাঁদের লাভ নেই। কারণ, সেই প্রশ্নই ওঠে না। এই দল আমরা নিজেদের ঘাম রক্ত দিয়ে গড়ে তুলেছি।’

মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে মানকে সরানোর আশঙ্কার কথাটি তুলেছেন দিল্লির রাজৌরি গার্ডেন কেন্দ্র থেকে জয়ী বিজেপি বিধায়ক মনজিন্দর সিং সিরসা। এক ভিডিও বার্তায় তাঁর দাবি, আপের রাষ্ট্রীয় আহ্বায়ক কেজরিওয়াল পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে নাকি সরিয়ে দিতে চাইছেন। কারণ, কেজরিওয়াল মনে করেন, মান তাঁর দায়িত্ব যোগ্যতার সঙ্গে পালন করতে পারছেন না। রাজ্যের নারীদের মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তিনি এখনো রাখতে পারেননি। মাদকের রমরমাও বন্ধ করতে ব্যর্থ। এ অভিযোগের জবাবে মান বলেন, বিরোধীরা যা খুশি বলতে পারেন। নারীদের মাসিক অনুদান শিগগিরই দেওয়া শুরু হবে।

মান বলেন, দিল্লি ভোটে নিরলসভাবে কাজ করার জন্য পাঞ্জাবের বিধায়কদের কেজরিওয়াল আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

পাঞ্জাব বিধানসভার মোট সদস্যসংখ্যা ১১৭। এর মধ্যে আপ বিধায়কদের সংখ্যা ৯৩। দ্বিতীয় প্রধান দল কংগ্রেস। তাদের বিধায়কের সংখ্যা ১৬। অন্য বিরোধী দলের মধ্যে শিরোমনি আকালি দলের সদস্য ৩, বিজেপির ২। কংগ্রেসের দাবি অনুযায়ী ৩০ জন আপ সদস্য দল ত্যাগ করলেও সরকার পতনের আশঙ্কা নেই। সরকার গড়তে ন্যূনতম ৫৯ জনের সমর্থন প্রয়োজন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

কালিয়াকৈরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রবিবার (১৫ জুন) সকালে উপজেলার সাহেববাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১৪ জুন কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। পরে শনিবার (১৪) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদার, সদস্য সচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মামুদ সরকার ও সদস্য সচিব করা হয়েছে মহসিন উজ্জামানকে। 

উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ গ্রুপ কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন । আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার (১৪ জুন) রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করে নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর অনুসারীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পারভেজ গ্রুপের কর্মীরা।

একই দাবিতে রবিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এ সময়ে নতুন কমিটির পক্ষ থেকে আরেকটি মিছিল বের হলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়। 

পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এখনো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, সকাল থেকে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া হলেও এখনো পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। 
 

ঢাকা/রেজাউল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ