আগামীকাল শনিবারের (১৫ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে বৈষম্য নিরসনের সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসলে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি ১৬ ফেব্রুয়ারি এমপিওভুক্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনের হুমকি দিয়েছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে এ হুমকি দেওয়া হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে সংগঠনটি।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের নেতারা বলেছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাসিক ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা ও ২৫ শতাংশ উৎসবভাতা পেয়ে থাকেন, যা অত্যন্ত অযৌক্তিক ও অমানবিক। 

তারা সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া, চিকিৎসাভাতা, শতভাগ উৎসবভাতা ও সর্বজনীন (প্রতিষ্ঠান প্রধান থেকে কর্মচারী পর্যন্ত) বদলির দাবি জানান।

জোটের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি প্রিন্সিপাল দেলাওয়ার হোসেন আজীজী বলেছেন, “শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের ভাতাসমূহ পরিবর্তনের মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ বারবার প্রতারিত হয়ে আশ্বাসের ওপর বিশ্বাস করে আবারও প্রতারিত হতে চায় না। ১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবারের মধ্যে শতভাগ উৎসবভাতার প্রজ্ঞাপন জারি এবং বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা বৃদ্ধির ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া না হলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি ১৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার এমপিওভুক্ত (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।”

অবস্থান কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন—জোটের সমন্বয়কারী জহিরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু তালেব সোহাগ, জাহাঙ্গীর হোসেন, যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল বাসার, আব্দুল হাই সিদ্দিকী, রবিউল ইসলাম, তোফায়েল সরকার, সবুজ হাসান, আমাতুন্নাহার, ফররুক শেরাহ্, মো.

কাইয়ুম, আফরোজা শ্রাবন, অধ্যক্ষ আলা উদ্দিন, অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ, আব্দুর রহমান, অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান, অধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন, অধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।

ঢাকা/মামুন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতীকী মূল্যে কাউকে সরকারি জমি দেওয়া হবে না: অর্থ উপদেষ্টা

এখন থেকে সরকারি জমি প্রতীকী মূল্য কাউকে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, সরকারি জমি যারা নিতে চাইবে যথাযথ মূল্য দিয়ে নিতে হবে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা সম্প্রসারণের জন্য বন্ধ থাকা চট্টগ্রামের জলিল টেক্সটাইল মিলসের ৫৪.৯৯ একর জমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তরের একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে উপস্থান করা হয়।

এ প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘‘জলিল টেক্সটাইল মিলস তারা নিতে চাচ্ছে। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি প্রতীকী মূল্যে দেব না। এখন থেকে প্রতীকী মূল্যটা এভয়েড (এড়িয়ে চলা) করবো। যারাই নিতে চায় অর্থ দিয়ে নেবে। কারণ প্রতীকী মূল্যে দিলে যারা নিয়ে যায়, তারা ঠিকমত ইউটিলাইজ করে না। অনেক ক্ষেত্রে ১০ একর জমির প্রয়োজন থাকলেও প্রতীকী মূল্যের কারণে ১০০ একর জমি দরকার বলে জানানো হয়।’’

তাহলে কি জলিল টেক্সটাইল মিলসের জমি হস্তান্তরের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়নি? সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘তাদেরকেই দেওয়া হবে, তবে মূল্যটা নির্ধারণ করে প্রস্তাব আসতে হবে।’’

এদিকে বৈঠক শেষে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রামে বাংলাদেশ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি (বিওএফ) সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলের নিয়ন্ত্রণাধীন চট্টগ্রাম জেলার ভাটিয়ারিতে অবস্থিত জলিল টেক্সটাইল মিলস হস্তান্তরের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ব্যক্তি মালিকানায় ১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলার ফৌজদারহাট এলাকায় মেসার্স জলিল টেক্সটাইল মিলস স্থাপন করা হয়। মিলের জমির পরিমাণ ৫৪.৯৯ একর। ১৯৭২ সালে জাতীয়করণ করার পর উইভিং এবং ডাইং বিভাগ স্থাপনের মাধ্যমে মানসম্মত উৎপাদনের জন্য ৩ বার স্বর্ণপদক লাভ করে মিলটি।

লাভজনকভাবে পরিচালিত মিলটি বিরাষ্ট্রীয়করণ নীতিমালার আওতায় ১৯৮২ সালের ১৫ ডিসেম্বর মিলের সাবেক শেয়ার হোল্ডারদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। মালিক পক্ষের মধ্যে অর্ন্তকলহের কারণে ১৯৯৭ সালে মিলটি বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে তৎকালীন সরকার দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৯৯৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর মিলটি অধিগ্রহণ করে। ওই দিন সরকার মিলের সাবেক ৪০ শতাংশ শেয়ার হোল্ডার সেলিম চৌধুরী গংদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে মিলটি হস্তান্তর করে।

সেলিম চৌধুরী গং মাত্র ১২ লাখ ২২ হাজার টাকা দিয়ে মিলটি অধিগ্রহণের পর হস্তান্তর চুক্তির শর্তানুযায়ী সরকারি পাওনা, ৬০ শতাংশ শেয়ার হোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা, ২০০০ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মিল চালু, অর্থ মন্ত্রণালয়, বস্ত্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রতিনিধি নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ না করে চুক্তির সব শর্ত লঙ্ঘন করে। সুচতুরভাবে মালিকপক্ষ ২০০০ সালের শেষের দিকে নামমাত্র ১টি ইউনিট চালু করে পরবর্তীতে শ্রম আইন বহির্ভূতভাবে ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউনিটটিও বন্ধ করে দেয়।

এ অবস্থায় ২০০৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় মালিকপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৬ মাসের মধ্যে মালিকপক্ষ মিল চালু না করলে হস্তান্তর চুক্তির শর্তানুযায়ী সরকার মিলটি অধিগ্রহণ করার ঘোষণা দেয়। মালিকপক্ষ এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করে ২০০৫ সালের ২০ নভেম্বর সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মিলটি বন্ধ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে। দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি জলিল টেক্সটাইল মিলস পুনঃগ্রহণ করে সরকার এবং মিলটি বিটিএমসির নিয়ন্ত্রণে ন্যস্ত করা হয়।

ঢাকা/হাসনাত//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রতীকী মূল্যে কাউকে সরকারি জমি দেওয়া হবে না: অর্থ উপদেষ্টা